গুরুতর অভিযোগ না থাকলে কলকাতায় ‘সিটিং’ কাউন্সিলরদের রাখছে তৃণমূল,কণাদ দাশগুপ্তের কলম

কণাদ দাশগুপ্ত

কলকাতা পুরসভায় আসন সংরক্ষণের আওতায় কোন কোন ওয়ার্ড পড়ছে, তা এ সংক্রান্ত নির্দিষ্ট ফর্মুলার উপর নির্ভরশীল৷ ১৭ জানুয়ারি পুরসভার আসন-বিন্যাসের প্রাথমিক খসড়া তালিকা বিজ্ঞপ্তি মারফত ঘোষনা করার কথা৷ এই খসড়া তালিকা

থেকেই স্পষ্ট হবে, আগামী
এপ্রিল-মে মাসের কলকাতা পুরভোটে
এ বার নির্দিষ্ট ফর্মুলায় কোন কোন ওয়ার্ড সংরক্ষণের তালিকায় পড়বে।
এদিকে অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার মোট ১৪৪ ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৩টি ওয়ার্ডই সংরক্ষণের আওতায় আসছে। পুরসভার ৪ জন মেয়র পারিষদ, ২ জন বরো চেয়ারম্যানের ওয়ার্ড আসছে সংরক্ষণের আওতায়৷ ফলে নিজেদের
ওয়ার্ড হারাচ্ছেন তাঁরা৷ নিরুপায় এই পদাধিকারীরা দলের উপরেই তাঁদের ‘ভবিষ্যত’ ছেড়ে দিয়েছেন৷ সংরক্ষণের কবলে পড়ে গিয়েছেন যে সব কাউন্সিলর, তাঁরা আর কিছুতেই পুরোনো ওয়ার্ডে দাঁড়াতে পারছেন না৷ অন্য কোনও ওয়ার্ডে তাঁদের প্রার্থী করা হবে কি’না, তা নির্ভর করছে দলের সিদ্ধান্তের উপর।

এদিকে, ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে রীতি অনুযায়ী রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সরকারি ভাবে রাজ্য সরকার এখনও কিছু জানায়নি। কমিশন কিন্তু ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।
১৭ জানুয়ারি আসন সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। খসড়া তালিকা প্রকাশের পরে নিয়মমাফিক ১৪ দিন সময় থাকবে আপত্তি জানানোর। ১০ ফেব্রুয়ারি সমস্ত পুরসভার আসন সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে। এর আগেই ৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে। তখনই নির্বাচনী প্রস্তুতি পর্ব শেষ করে দেবে কমিশন। কমিশনের, আইন অনুযায়ী আসন সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশের ১০ সপ্তাহ পরে ভোট করতে কোনও সমস্যা নেই। ওদিকে মার্চেই শেষ হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। ফলে সে দিক থেকেও এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে বা আগামী ১২ থেকে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে কলকাতায় ভোট করা যেতেই পারে বলে কমিশনও তৈরি হচ্ছে৷ প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে কলকাতা পুরসভার ভোট হয়েছিল ১৮ এপ্রিল। তার এক সপ্তাহ পর, অর্থাৎ ২৫ তারিখ ভোট হয়েছিল বাকি পুরসভাগুলির ভোট।

ওদিকে সংরক্ষণ- তালিকায় আর বদল না হলে যে সব মেয়র পারিষদ ও বরো চেয়ারম্যানরা নিজেদের ওয়ার্ড খোয়াচ্ছেন, তাঁরা হলেন,
• স্বপন সমাদ্দার (তাঁর ৫৮ নম্বর ওয়ার্ড, এবার SC)
• বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় (তাঁর ৯০ নম্বর ওয়ার্ড এবার মহিলা)
• রতন দে (তাঁর ৯৩ নম্বর ওয়ার্ড এবার মহিলা)
• দেবব্রত মজুমদার (তাঁর ৯৬ নম্বর ওয়ার্ড এবার মহিলা)
• সুশান্ত ঘোষ (তাঁর ১০৭ নম্বর ওয়ার্ড এবার SC)

• ইন্দ্রজিৎ ভট্টাচার্য (তাঁর ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ড এবার মহিলা)৷ এছাড়া
তৃণমূল এবং অন্য দলের কিছু কাউন্সিলরও সংরক্ষণের কোপে পড়েছেন৷ তাঁদের ভবিষ্যতও ভাবছে দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব৷

সূত্রের খবর, এ বার কলকাতা পুরসভার মোট ১৪৪ ওয়ার্ডের মধ্যে সংরক্ষণের আওতায় এসেছে ৫৩টি ওয়ার্ড।

◾মহিলা প্রার্থীদের জন্য
সংরক্ষিত ৪৫টি ওয়ার্ড৷
◾তফশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত ৪টি ওয়ার্ড৷
◾তফশিলি জাতির মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ড৷

নতুন করে এলাকা বিন্যাস আপাতত এই রকম হতে পারে:
🔳 মহিলা আসন হতে পারে-
৩, ৬, ৯, ১২,১৫,১৮, ২১, ২৪, ২৭, ৩০, ৩৭, ৪০, ৪৩, ৪৬, ৪৯, ৫২, ৫৫, ৬২, ৬৫, ৬৮, ৭১, ৭৪, ৭৭, ৮১, ৮৪, ৮৭, ৯০, ৯৩, ৯৬, ৯৯, ১০২, ১০৫, ১০৮, ১১৩, ১১৬, ১১৯, ১২২, ১২৫, ১২৮, ১৩২,১৪১, ১৪৩ নং ওয়ার্ড৷

🔳তপশিলি জাতিভুক্ত মহিলা সংরক্ষিত আসন-
৫৮ ৭৮, ১২৭, ১৩৩ নং ওয়ার্ড৷

🔳তপশিলি জাতিভুক্ত আসন-
১০৭, ১১০, ১৪২, নং ওয়ার্ড৷

এই সংরক্ষিত আসনগুলি বাদ দিয়ে প্রাথমিক খসড়ায় বলা হয়েছে বাকি আসনগুলো সাধারণের জন্য৷ তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে গুরুতর অভিযোগ না থাকলে ‘সিটিং’ কাউন্সিলরদের সরানো হবে না৷

Previous articleএবার কি আগেভাগেই শীতের ইনিংস শেষ হয়ে যাচ্ছে?
Next articleসাতসকালে বেলাইন ট্রেনের ৮টি কামরা, তারপর যা হল