স্কুলবাস এবং পুলকারকে বাগে আনতে নতুন নিয়ম ও নির্দেশিকা চালু করবে পরিবহণ দফতর

পোলবার পুলকার কাণ্ডের জেরে এবার নড়েচড়ে বসল রাজ্য পরিবহণ দফতর। বেপরোয়া স্কুলবাস এবং পুলকারকে বাগে আনতে নতুন নিয়ম ও নির্দেশিকা চালু করতে চলেছে পরিবহণ দফতর। এ বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি)-ও তৈরি করা হবে বলে জানা গিয়েছে। কলাকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, পুলকার চালকদের কাউন্সেলিং দরকার।পরিবহণ দফতরকে এই বিষয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। এখনও বেপাত্তা চালক।  দুর্ঘটনাগ্রস্ত পড়ুয়াদের অবস্থা এখনও বিপদমুক্ত নয়। ফুসফুস থেকে  এখনও জল বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এসএসকেএম-এর ডাক্তাররা ।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারই স্কুল শিক্ষা দফতরের সঙ্গে পরিবহণ দফতরের বৈঠক হওয়ার কথা। পুলকারে পড়ুয়ারা কীভাবে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে, তার নিয়মকানুন ঠিক হবে সেখানেই। পাশাপাশি বেআইনি পুলকার ধরতে সোমবার থেকে শুরু হবে অভিযান।জানা গিয়েছে, বিভিন্ন স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবেন পরিবহণ দপ্তর ও পুলিশের অফিসাররা। পুলকার এসে পড়ুয়া নামানোর পর গাড়ির হাল-হকিকত খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। নিয়ম ভেঙে ছাত্রছাত্রী নিয়ে গাড়ি ছুটলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট ছোট শিশুদের জীবনের সঙ্গে কোনও আপোষ করা হবেনা। নিয়ম না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতাতেই ১৫৩ টি স্কুলের ৮৩৭ টি স্কুলবাস ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই পড়ুয়া নিয়ে যাতায়াত করে। পুলকারের সংখ্যা আরও বেশি।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত স্কুলবাস এবং পুলকারকে এবার নিয়ম অনুযায়ী হলুদ রং করতে হবে। প্রাইভেট গাড়ির লাইসেন্সে যাতে কেউ আর স্কুলের বাচ্চাদের না নিয়ে যেতে পারে তাই এই ব্যবস্থা। প্রত্যেক গাড়িতে রাখতে হবে অ্যাটেনড্যান্টও। সিএফ ছাড়া গাড়ি বাতিল হবে। বাচ্চাদের ওঠা-নামা করার জন্য নির্দিষ্ট মাপের সিঁড়ি থাকতে হবে। জানালার কাঁচও কীরকম হবে তা ঠিক করে দেবে পরিবহণ দফতর। স্কুলবাসের চালক সম্পর্কিত যাবতীয় নথি পরিবহণ দফতরে জমা দিতে হবে। চালকের ন্যূনতম পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আপাতত নির্দেশিকার খসড়াও তৈরি হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার স্কুল শিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত নির্দেশিকা জারি করা হবে।
পোলবা কাণ্ডে স্কুলের বাচ্চাদের নামিয়ে গাড়ির বদলও করা হয়। এমনকি বদলে যান চালকও।বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, সেই গাড়ি ধরলেও তা আটক করা যায় না। চেকিংয়ের সময় গাড়িতে থাকা কচিকাঁচা পড়ুয়াদের অসুবিধার দোহাই দিয়েই আইন এড়িয়ে চলে গাড়ির চালকরা। আর এভাবেই চলে ঝুঁকির যাত্রা। ছাত্রছাত্রীদের সময়ে স্কুলে পৌঁছনোর বিষয়টিকেই ‘ঢাল’ হিসাবে ব্যবহার করে চালকরা।
পরিবহণ দফতরের কর্তাদের দাবি, গাড়ি চেকিংয়ের সময় ছাত্রছাত্রীদের দেখিয়ে বলা হচ্ছে স্কুলে তাঁরা যাবে কীভাবে! আবার স্কুলে পৌঁছনোর পর গাড়ি ধরলে চালকরা জানায়, গাড়ি আটকালে স্কুল থেকে পড়ুয়ারা বা়ড়ি ফিরবে কী করে? দিনের পর দিন একই অজুহাতে গাড়ি আটকানো যাচ্ছে না। শুধু কি আনফিট গা়ড়ি! বাণিজ্যিকভাবে চালানোর কোনও ছাড়পত্র নেই শহরে চলা একটা বড় অংশের গাড়ির। কিন্তু প্রাইভেট গাড়ির লাইসেন্স নিয়ে দিব্যি ছাত্রছাত্রীদের আনা-নেওয়া করছেন বহু মালিক। এখন কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব সেই পথই খুঁজছে পরিবহণ দফতর। তবে একটি বিষয়ে সবাই সহমত, গাড়ির মালিক এবং চালকরা নিজেরা সচেতন না হলে শুধুমাত্র আইন করে কিছু হবেনা।

Previous articleপদ্ম না ঘাস, এখন তিনি কোন ফুলে ? বিজেপি’র বৈঠকে অ-‘শোভন’ ছবি !
Next articleকরোনা আতঙ্ক : পোষ্যদের মুখেও মাস্ক