একনজরে মমতাময়ী “মা”-এর রান্নাঘর ও ৫ টাকার ডিম-ভাত

“মা” (Maa) এই একটি অক্ষরের একটি শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে মমতা। মা যেমন নিজে না খেয়েও সন্তানের মুখে দু-মুঠো অন্ন তুলে দেন, তেমনই রাজ্য সরকারের ‘মা’ প্রকল্পেও আজ থেকে মাত্র ৫ টাকায় (Only Rs 5) দুপুরের খাবার তুলে দেওয়া শুরু হয়ে গেল ক্ষুধার্তদের মুখে। যদিও এই খাবার তৈরির খরচ পড়ছে অনেকটাই বেশি।

“মা” প্রকল্পে সরকারের পক্ষ থেকে মাথা পিছু খাবার হিসেবে ধরা হয়েছে ২০০ গ্রাম চালের ভাত, ৪০ গ্রাম ডাল, আলু ১০০ গ্রাম, মরশুমি সবজি ১০০ গ্রাম আর একটি সিদ্ধ ডিমেরকারী। সব মিলিয়ে খরচ মোটামুটি ১৩ থেকে ১৫ টাকা। প্রাথমিকভাবে কলকাতার ১৬টি বরোতে দেওয়া হবে। পরে ১৪৪ ওয়ার্ডেও দেওয়া হবে ‘মা’-এর খাবার।
কিছুদিন পর তা ছড়িয়ে যাবে গোটা রাজ্যজুড়ে। প্রথম পর্যায়ে যে ‘‌মা কিচেন’‌গুলি চালু হচ্ছে সেখানে প্রতিদিন পাঁচশো থেকে হাজার জনের রান্না করা হবে বলে জানা গিয়েছে। আজ, সোমবার নবান্ন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ‘‌মা কিচেন’‌–এর সূচনা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন-যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক, পরিবার চাইলে সাহায্য করা হবে: মুখ্যমন্ত্রী

করোনা (Corona) মহামারির (Pandemic) জেরে দীর্ঘ লকডাউনের (Lockdown) জের থেকে এখনও পুরোপুরি মুক্ত হতে পারেনি আমজনতা। ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি। অনেকে কাজ হারিয়েছেন। অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়েছে। মানুষের হাতে টাকা নেই। কেন্দ্রীয় বাজেটও মধ্যবিত্তকে হতাশ করেছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্য বাজেটে “কল্পতরু” ভূমিকায় দেখা গিয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (CM) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। এবার চালু হচ্ছে জনদরদী মুখ্যমন্ত্রীর নয়া প্রকল্প “মাদার কিচেন” বা “মায়ের রান্নাঘর” (Mother Kitchen)। আজ, সোমবার থেকেই যেখানে মিলতে চলেছে মাত্র ৫ টাকার বিনিময়ে ডিম-ভাত (Egg Rice)। সঙ্গে ডাল-সবজি।

প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে স্থির হয়েছে, একটি করে কিচেনে রান্না হবে। যা ৪টি ‘মা’ দোকানে পাঠানো হবে। এখন প্রতি দোকানে ৫০০ জনের করে খাবারের বন্দোবস্ত থাকবে। অর্থাত্ মোট ২০০০ লোকের খাবার রান্না এক-একটি করে কিচেনে। এখন সব মিলিয়ে মোট ৭২টি ‘মা’ দোকান হবে। একটি করে দোকান ২টি করে ওয়ার্ড কভার করবে।

ঠিক হয়েছে, ‘মা’-রা (এখানে মা অর্থে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা) শাড়ি পরে সম্পূর্ণ কোভিড বিধি মেনে খাবার পরিবেশন করবেন। প্রত্যেক ‘মা’ দোকানে ৪ জন করে সেলফ হেল্প গ্রুপ-এর সদস্যরা থাকবেন। আর সেন্ট্রাল কিচেনে থাকবেন ১০ জন করে সদস্য। সব মিলিয়ে ‘মা’ প্রকল্পে কাজ পাবেন ৪৪৮ জন সদস্য। প্রত্যেক সদস্য মাসে ২০০০ টাকা করে পাবেন। প্রতি ‘মা’ কিচেন-এ চালাতে খরচ হবে ৫ লাখ টাকা। সঙ্গে দোকান মিলিয়ে খরচ হবে ৮.৯৬ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে প্রত্যেক মাসে খরচ হবে প্রায় ১৯১ লাখ টাকা।

প্রসঙ্গত, এবারের বাজেট বা ভোট অন অ্যাকাউন্টে ‘‌মা’‌ প্রকল্পের অধীন রাজ্যব্যাপী কমন কিচেন তৈরি করার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এই বাবদ আগামী অর্থবর্ষে ১০০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দর ঘোষণা করেছেন মমতা। এ ব্যাপারে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‌রাজ্যের দুঃস্থ মানুষজন যাতে দু’‌বেলা খেতে পায় সেই লক্ষ্যে ‘‌মা’‌ নামে একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। যার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় সকলের জন্য স্বল্প মূল্যে কমন কিচেন অর্থাৎ রান্না–করা খাবার দেওয়া চালু হবে।’

Advt

আরও পড়ুন-এবারের সমাবর্তনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে বিশ্বভারতী

পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের লাগাতার আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির জন্য বাজারও আগুন। জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য।
দোকান থেকে একপিস ডিম কিনতে এখন খরচ করতে হয় ৬ টাকা। আগামিদিনে আরও দামবৃদ্ধির আশঙ্কা। কিন্তু যদি ৫ টাকাতেই একথালা ভাত, সবজি, ডাল এবং সঙ্গে একটি পিস ডিমের ঝোল দেওয়া হলে উপকৃত হবে সাধারণ ও গরিব নিম্নবিত্ত মানুষ!

Previous articleভারতে জেলবন্দিদের ২৭ শতাংশ নিরক্ষর, রিপোর্টে প্রকাশ
Next articleভি-ডের দিনেও ‘লাভ জিহাদ’ তুলে তাণ্ডব, ধৃত বিজেপি বিধায়ক-সহ ১৭