শাহি-সভায় বাংলা ভাষায় প্রয়োগ দেখে তাজ্জব গুণীজনরা

‘আনসাং হিরো’জ অফ বেঙ্গল…’- এর অমিত শাহি বাংলা, ‘বাংলার ‘অসন্তুষ্ট নায়করা।’

এই বাংলা দেখে তাজ্জব বাংলার গুণীজন এবং সাধারণ মানুষ৷ এনাদের বক্তব্য, ” দরকার কী এমন হাস্যকর বাংলা বলার বা লেখার৷ জোর করে বঙ্গপ্রেমী হতে চাওয়ার মধ্যে বুদ্ধির ছাপ থাকে না”৷ এমন আরও আছে৷

শাহি-কর্মসূচির একটি বিষয়ের নাম ‘শৌর্যাঞ্জলি’। এটি বাংলা ভাষায় কোন ধরনের শব্দ, প্রশ্ন তুলেছেন ভাষাবিদরা৷ বলেছেন, “জলে অঞ্জলি- শব্দের সন্ধি ‘জলাঞ্জলি’৷
তা হলে এক্ষেত্রে কি শৌর্যে অঞ্জলি। সন্ধিরও যুক্তি কোনও তোয়াক্কাই করা হয়নি।

ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে (National Library) শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) অনুষ্ঠানে এই ধরনের শব্দচয়ন নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের ছাপানো পুস্তিকায় বেশ কিছু শব্দের অপটু ব্যবহার চর্চার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে৷ ধন্দে পড়েছেন গুণীজনেরা৷

আরও পড়ুন-কেরলের মুখ্যমন্ত্রী হতে চান ‘মেট্রোম্যান’ শ্রীধরণ, ২১ তারিখ যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে

‘শৌর্যাঞ্জলি’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার ভুলে যাওয়া সংগ্রামীদের কথা মানুষের স্মৃতিতে ফিরিয়ে আনতে সাইকেল র‍্যালি ও লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অমিত শাহ। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রকাশিত পুস্তিকায় লেখা হয়েছে, ‘বাংলার ৬০০-৮০০ ‘অসন্তুষ্ট নায়কের’ উপর ভিত্তি করে প্রদর্শনী…।’ প্রশ্ন উঠেছে, ‘অসন্তুষ্ট’ নায়ক-এর অর্থ কী? পরের পাতায় ইংরেজিতে বলা হয়েছে ‘আনসাং হিরোজ অফ বেঙ্গল…’। ‘আনসাং হিরোজ’- এর বাংলা অনুবাদ কীভাবে ‘অসন্তুষ্ট নায়ক’ হয়, তা বুঝে উঠতে পারছে না বাঙালি৷ বিশিষ্ট ভাষাবিদ অধ্যাপক পবিত্র সরকার এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আনসাঙ হিরোজ’-এর বঙ্গানুবাদ হিসেবে ‘অসন্তুষ্ট নায়ক’ জাতীয় শব্দ কোনওমতেই মানা যায় না। আরও একটি বিষয় রয়েছে। কর্মসূচির নাম শৌর্যাঞ্জলি। এটিই বা বাংলা ভাষায় কোন ধরনের শব্দ? ধরা যাক, জলাঞ্জলি, জলে অঞ্জলি। তা হলে কি শৌর্যে অঞ্জলি। সন্ধিরও যুক্তি থাকা চাই।’ পবিত্রবাবুর বক্তব্য, “ইংরেজি ভাষায় ‘ম্যালঅ্যাপ্রোপিজম’ বলে একটি কথা আছে। শব্দের ভুল প্রয়োগ। এটা অনেক ক্ষেত্রে অত্যন্ত হাস্যকর হয়ে দাঁড়ায়। এখানেও তাই হয়েছে। হিন্দি থেকে বাংলায় যান্ত্রিক ভাবে ভাষান্তর করতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়”৷

মনিমুক্তো আরও আছেন ওই সরকারি পুস্তিকার এক জায়গায় লেখা আছে, “এমন অনেক পুরুষ ও মহিলা আছেন…দেশের প্রতি তাঁদের অদম্য আনুগত্য এবং সংকল্পবদ্ধ চেতনা দেশের স্বাধীনতা এনেছিল। এই সংগ্রামে ‘কিছু’ বেঁচে থাকলেও অনেকেই শহিদ হয়েছিলেন।’ ‘কিছু’ শব্দটি এখানে তীব্রভাবেই আপত্তিকর। পবিত্রবাবুর মন্তব্য, “বাংলার ইতিহাস, সংস্কৃতি সম্পর্কে যাঁদের এমন ভূমিকা এবং ধারনা, তাঁদের নিয়ে অবশ্যই চিন্তায় পড়তে হয়।’

Advt

Previous article‘বিজেপিকে একটিও ভোট নয়’ ফের পোস্টার ঘিরে চাঞ্চল্য হুগলিতে
Next articleআইন আইনের পথে চলবে, মাদক-সহ বিজেপি নেত্রীর গ্রেফতারে মন্তব্য দিলীপের