রাকেশ-পামেলাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা? কোকেন কাণ্ডে চরম অস্বস্তিতে রাজ্য বিজেপি

হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোটের (Assembly Election) আগে যতটুকু নিজেদের ভাবমূর্তি জনমানসে ধরে তুলতে পেরে ছিল রাজ্য বিজেপি (BJP), তা অচিরেই ধ্বংস হয়ে গেল! ভোটের আগেই কোকেন কাণ্ডে (Drug Case) চরম অস্বস্তিতে রাজ্য বিজেপি!

মাদক কাণ্ডে নিউ আলিপুর (New Aalipur) থেকে হাতেনাতে ধৃত বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামীর (Pamela Goswami) মুখোমুখি রাকেশ সিংকে বসিয়ে জেরা (Intergation) করতে চায় কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। এবং সেখান থেকেই ঘটনার শিকড়ে পৌঁছতে চাইছেন গোয়েন্দারা! প্রাথমিকভাবে সেই কাজে অনেকটাই সফল কলকাতা পুলিশ।

আজ, বুধবার কৈলাস বিজয়বর্গিয় ঘনিষ্ঠ বিজেপির বাহুবলী ও দাপুটে নেতা রাকেশ সিংকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে এমনটাই জানান সরকার পক্ষের আইনজীবী। যদিও রাকেশের গ্রেফতারি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলে এজলাসে সরব হয়েছেন তার আইনজীবীরা। এদিন ধৃত বিজেপির বাহুবলি নেতা রাকেশ সিংকে আলিপুর জেলা আদালতের ৪ নম্বর এনডিপিএস কোর্টে বিচারক রানা দামের এজলাসে তোলা হয়।

সওয়াল-জবাবের সময় বিজেপি নেতার আইনজীবীর প্রশ্ন, গত সোমবার বিকেল চারটের মধ্যে রাকেশ সিংকে সমন দিয়ে ডেকে পাঠানো হয় লালবাজারে। তাহলে দুপুর একটার সময় তার বাড়িতে পুলিশ কেন পৌঁছালো? পুলিশের দেওয়া নির্ধারিত সময়সীমা পেরোনোর আগেই হঠাৎ করে কলকাতা পুলিশকে এত অতি সক্রিয় হতে হলো কেন, এদিন আদালত কক্ষে প্রশ্ন তোলেন রাকেশ সিংয়ের আইনজীবীরা। সরকারপক্ষের পক্ষের আইনজীবী পাল্টা জানান, রাকেশ পুলিশি জেরায় এড়াতে কলকাতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলেই তাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ। বিচারককে তিনি আরও জানান, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে বিজপি নেতা রাকেশকে পূর্ব বর্ধমান জেলার গোলসি থেকে পালানোর সময় গ্রেফতার করা হয়েছে। কলকাতা থেকে গোলসি হয়ে ভিন রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার ছক ছিল রাকেশের।

এর বিরোধীতা করে রাকেশ সিংয়ের পক্ষের আইনজীবী জানান, পালাতে নয়, রাজনৈতিক কাজেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। এই যুক্তির সপক্ষে তিনি জানান, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বর্ধমান থেকে তার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কাজেই তিনি গোলসি গিয়েছিলেন, ভিন রাজ্যে পালানোর কোন পরিকল্পনা ছিল না তাঁর। একইসঙ্গে রাকেশ সিংয়ের আইনজীবী অভিযোগ করেন, লালবাজারের গোয়েন্দা দফতরের এক অন্যতম কর্তা, রাকেশের সঙ্গেই ধৃত তার অপর সঙ্গী জিতেন্দ্র সিংকে চাপ দিচ্ছেন রাকেশ সিংয়ের বিরুদ্ধে বিচারকের সামনে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী।

মূল মামলার এফআইআরে নাম না থাকা সত্ত্বেও রাকেশ সিংকে কেন অতি সক্রিয় হয়ে গ্রেফতার করা হল, সেই প্রশ্নও তোলেন রাকেশ সিংয়ের আইনজীবীরা। সরকারি আইনজীবী বলেন, মাদক মামলার তদন্তে নেমে রাকেশ সিংয়ের যোগাযোগ মিলেছে, তাই তাকে পামেলার মুখোমুখি বসে জেরা করতে চায় পুলিশ।

এদিকে, ১২দিনের পুলিশ হেফাজত পর্যন্ত পুলিশ হেফাজত চেয়ে বিচারকের কাছে আবেদন করেন সরকারি আইনজীবী। তবে বিচারক রানা দাম দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে কোকেন কাণ্ডে ধৃত বিজেপি নেতা রাকেশ সিংকে আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আর এই সময়কালের মধ্যে কোকেন কাণ্ডের অনেক কিছুই সামনে আসবে বলে দাবি কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের।

আরও পড়ুন- আব্বাসের সঙ্গে জোট গড়তে কল্পতরু হয়ে শরিক-আসনে কোপ মারছে সিপিএম

Advt

 

Previous articleআব্বাসের সঙ্গে জোট গড়তে কল্পতরু হয়ে শরিক-আসনে কোপ মারছে সিপিএম
Next articleহঠাৎ বাতিল সফরসূচি, চলতি সপ্তাহে রাজ্যে আসছেন না উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন