‘বিজেপিকে শক্তিশালী না করে দলের প্রচারে নামুন’, আনন্দ শর্মাকে পাল্টা জবাব অধীরের

বিজেপি-তৃণমূলকে ঠেকাতে বাংলায় বাম, কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের জোট নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরেই তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ এই জোট আদৌ ধর্মনিরপেক্ষ কি’না তা নিয়েই চর্চা তুঙ্গে। ISF-কে নিয়ে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়ে উঠছে৷

ফুরফুরার আব্বাস সিদ্দিকির দল ISF-এর সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস কেন আসন সমঝোতা করছে, তা নিয়ে সোমবার অধীর চৌধুরির (ADHIR CHOUDHURY) কৈফিয়ত তলব করেছিলেন রাজ্য সভায় কংগ্রেসের ডেপুটি লিডার আনন্দ শর্মা (ANAND SHARMA)। শর্মা টুইট করে বলেছিলেন, “পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের (WB CONGRESS)এই পদক্ষেপ দলের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিতে আঘাত হানবে”৷ যদিও অধীর চৌধুরি ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন শর্মার ওই বার্তা৷ প্রসঙ্গত, জাতীয় কংগ্রেসের বর্তমান নেতৃত্ব তথা সোনিয়া গান্ধীর (SONIA GANDHI) বিরুদ্ধে হাত শিবিরের যে ২৩জন ‘বিদ্রোহ’ করেছিলেন তার অন্যতম এই আনন্দ শর্মা৷

আনন্দ শর্মার ওই টুইটের জবাব দিতে দেরি করেননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি। পর পর টুইট করে আনন্দ শর্মাকে গোটা বিষয় সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানার পরামর্শ দিয়েছেন অধীর। প্রদেশ সভাপতির এই পদক্ষেপের পিছনে দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সায় আছে বলেই সূত্রের খবর।

টুইটে আনন্দ শর্মা লিখেছিলেন, “ISF বা সেধরণের কোনও দলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট গঠন গান্ধী-নেহেরুবাদী ধর্মনিরপেক্ষ ও দলের মূল ভাবধারার বিরোধী। এবিষয়ে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি অনুমোদনক্রমে জোট গঠন করা উচিত ছিল। ব্রিগেডে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতি এবং লজ্জাজনক, ওনাকে কৈফিয়ত দিতে হবে।”

আর এই টুইটের জবাবে অধীর চৌধুরি পাল্টা টুইট করে আনন্দ শর্মাকে জানালেন, “আপনি সিপিএমের নেতৃত্বাধীন জোটকে যেভাবে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিচ্ছেন তাতে বিজেপিরই সুবিধা হবে”৷ শর্মাকে সরাসরি আক্রমণ করে অধীর লিখেছেন, “মোদির স্তুতি বন্ধ করুন৷ ব্যক্তিগত স্বার্থ ও স্বচ্ছন্দ্যের কথা ছেড়ে ঊর্ধ্বে উঠে ভাবার চেষ্টা করুন।” বিস্ফোরক মন্তব্য করে শর্মার উদ্দেশ্যে অধীর বলেছেন, ” উনি বোধহয় অন্য এক দলের হয়ে রাজ্যসভায় যেতে চাইছেন”৷ শর্মাকে অধীরের পরামর্শ,

“গোটা বিষয়টি আগে জানুন। বাংলায় সিপিএমের নেতৃত্বে ধর্মনিরপেক্ষ জোট হয়েছে। কংগ্রেস ওই জোটের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। বাংলায় আমরা বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাতে বদ্ধপরিকর।” অন্য একটি টুইটে জোটের আসন রফার ফর্মূলা সম্পর্কে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি লেখেন, “কংগ্রেস দাবি মত আসন পেয়েছে। নবগঠিত ISF- কে বামফ্রন্ট তাদের কোটা থেকে আসন ছেড়েছে। যাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইচ্ছুক তাঁদের উচিত ৫ রাজ্যে দলের সমর্থনে প্রচার করা।” শর্মার বক্তব্যে ব্যক্তিগত স্বার্থ ও সংকীর্ণ রাজনীতি জড়িয়ে রয়েছে বলেও দাবি করেছেন অধীর চৌধুরি।

ওদিকে অধীরের পাশে দাঁড়িয়ে এ রাজ্যে কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদ (JITIN PRASAD) বলেছেন, “গোটা পদক্ষেপের পিছনে দলের কর্মীদের স্বার্থ বিবেচনা করা হয়েছে৷”

এই ইস্যুতে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিয়ে প্রকাশ্যে হাইকম্যান্ডের কোনও মন্তব্য অরশ্য এখনও মেলেনি।

আরও পড়ুন- মেরুকরণের রাজনীতির ডাক দিয়ে মালদহে উদ্ধত হুঙ্কার আদিত্যনাথের

Advt

Previous articleমেরুকরণের রাজনীতির ডাক দিয়ে মালদহে উদ্ধত হুঙ্কার আদিত্যনাথের
Next article‘কেষ্টর ঢাক’, ‘খেলা হবে’ : ভোটের আগে ‘রাজনৈতিক’ মিষ্টিতে ছয়লাপ বাংলা