IPS স্বামীর পরিচয় নয়, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী শক্তিকে জাগ্রত করতেই রাজনীতিতে লাভলি

স্বামী IPS অফিসার। দাপুটে পুলিশ কর্তা। কিন্তু সেটাই একমাত্র পরিচয় নয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী শক্তিকে জাগ্রত করতেই রাজনীতিতে লাভলি মৈত্র (Lavli Moitro) টেলি-অভিনেত্রীর পরিচিতি নিয়ে যখন সরগরম রাজ্য রাজনীতি, তখনই তাঁর পদপ্রার্থী হওয়া, বিশেষ করে শাসক দলের হয়ে ভোটে দাঁড়ানো কতটা যুক্তিসঙ্গত, কতটা নৈতিক সেই বিষয়ে সোচ্চার বিরোধী পক্ষ। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, লাভলির স্বামী পেশায় IPS অফিসার, আর সেই প্রেক্ষিতেই একজন সরকারি আমলার স্ত্রী হয়ে কীভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার টিকিট পেতে পারেন তিনি! আর সেটাই বা নির্বাচনী-নীতি অনুযায়ী কতটা যুক্তিসঙ্গত? প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি (BJP)।

উল্লেখ্য, ‘জলনুপূর’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন লাভলি মৈত্র। তবে টেলিভিশনের পর্দায় এখন আর সেভাবে দেখা যায় না তাঁকে। কিছুদিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন লাভলি। আর যোগদানের দিন কয়েকের মধ্যেই একুশের ভোটযুদ্ধে (West Bengal Assembly Election 2021) ঘাসফুল শিবিরের হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করার ছাড়পত্র পেয়ে গেলেন? তাও আবার সোনারপুর দক্ষিণের মতো হাইভোল্টেজ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে! বিজেপির দাবি, “সরকারি আমলার স্ত্রী হয়ে তৈলমর্দন করাতেই কি টিকিট উপহার পেলেন লাভলি?”

অভিনেত্রী লাভলিকে নিয়ে বর্তমানে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। কারণ, লাভলির পদপ্রার্থী হওয়া নিয়ে বিজেপি নানারকম প্রশ্ন তুলছে। যা বিধানসভা নির্বাচনের আগে রীতিমতো বাজার গরম করার মতো। আপত্তি মূল কারণ হল, লাভলি আদতে হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার সৌম্য রায়ের স্ত্রী। এখানেই বিজেপির মাথা ঘুরে গিয়েছে। স্বয়ং পুলিশকর্তার স্ত্রীকে কীভাবে প্রার্থী করতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস? মমতার ‘মাস্টারস্ট্রোক’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।

পদ্ম শিবিরের তরফে হুংকার ছাড়া হয়েছে, “আইন বলে কিছুই নেই! রাজ্যের আইপিএস অফিসারের স্ত্রী প্রার্থী হতে পারে না। কমিশনের দ্বারস্থ হব।” তবে এই প্রসঙ্গে বঙ্গ বিজেপিকে পাল্টা দিতে ছাড়েননি অভিনেত্রী লাভলি মৈত্রও। তাঁর মন্তব্য, “আমি যে পুলিশ সুপারের স্ত্রী, সেটাই কিন্তু আমার একমাত্র পরিচয় নয়। প্রত্যেকটা মেয়েরই একটা নিজস্ব পরিচয় রয়েছে। আমারও তা আছে। ভারতীয় জনতা পার্টি আসলে দেশের মেয়েদের নিজস্ব পরিচয়টাই মুছে ফেলতে চাইছে। যা অত্যন্ত নোংরা রুচির পরিচয়। আসলে বিজেপি মহিলাদের সম্মান দিতে জানে না। মেয়েরাও কিছু করে দেখাতে পারে, সেটা বিশ্বাস করে না। আমার পাঁচ বছর বিয়ে হয়েছে। স্বামীর সঙ্গে পরিচয়ের আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পরিচয়। আমার ঘোর বিপদের দিনে উনি মায়ের মতো পাশে থেকেছেন।”

আরও পড়ুন- বাংলাদেশের প্রথম রূপান্তরকামী সংবাদপাঠিকার নাম জানেন?

এখানেই থেমে থাকেননি অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, “বিজেপি আসলে ভয় পেয়ে গিয়েছে। তাই মহিলাদের অসম্মান করছে।” শোনা যাচ্ছে, সোনারপুর দক্ষিণ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করতে পারে অভিনেতা হীরণকে। সেক্ষেত্রে কি চ্যালেঞ্জ বেড়ে গেল না? লাভলির স্পষ্ট উত্তর,”লড়াইয়ের ময়দানে দেখা হবে। খেলা হবে। ব্যক্তিগতভাবে কেউ কারও শত্রু নয়। আমরা একই পেশার মানুষ। একে অপরকে সম্মান করতে জানি।”

তিনি আরও বলেন, “প্রাক্তন বিধায়ক জীবন মুখোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ নিয়ে প্রচারে নামবো। কারণ, সোনারপুর দক্ষিণে প্রার্থী হিসেবে আমার নাম থাকলেও এই কেন্দ্রেও আসল প্রার্থী মমতাদি। সেনাপতি জীবনবাবু। আর আমার পরিচয় হয়ে এলাকার মানুষের ঘরের মেয়ে।”

Previous articleবাংলাদেশের প্রথম রূপান্তরকামী সংবাদপাঠিকার নাম জানেন?
Next articleহীরালাল সেন এবার নিজেই সেলুলয়েডে