‘বেগম’‌, ‘‌ফুফু’‌ শব্দগুলিকে কটাক্ষ করে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক মন্তব্য শুভেন্দুর! কমিশনে নালিশ লিবারেশনের

রাত পোহালেই নন্দীগ্রামে (Nandigram) নির্বাচন। যুযুধান দুই পক্ষের লড়াইয়ে গোটা দেশের চোখ জমি আন্দোলনের ধাত্রীভূমির দিকে। যেখানে প্রার্থী খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী. (CM) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রতিপক্ষ একদা তাঁরই শিষ্য শুভেন্দু অধিকারী (Subhendu Adhikary)। ২৯৪ আসন বিশিষ্ট বাংলায় একুশের হাইভোল্টেজ নির্বাচনে (West Bengal Assembly Election 2021) এবার তাই নন্দীগ্রামের মাটিতেই হতে চলেছে “মাদার অফ অল ব্যাটল” (Mother of All Batle)!

মাঠে বল গড়ানোর আগেই এবার বিজেপি (BJP) প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুলে কমিশনে (EC) নালিশ জানালো CPI (ML). শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক (Communal Speech) ভাষণের অভিযোগ তুলেছে লিবারেশন। শুভেন্দুর এই মন্তব্যের জন্য নন্দীগ্রাম-সহ বাংলার মাটিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কাও করছে লিবারেশন। ফলে নন্দীগ্রামের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটি।

কমিশনকে দেওয়া চিঠির প্রতিলিপি টুইটারে পোস্ট করেছেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে গিয়ে শুভেন্দু একাধিক মঞ্চ থেকে ‘‘‌বেগম’’ বলে কটাক্ষ করছেন। গত ২৯ মার্চের নির্বাচনী জনসভায় তৃণমূলত্যাগী রাজ্যের প্রা‌ক্তন মন্ত্রীর ভাষণ-এর একটি ভিডিও ক্লিপ তুলে ধরে সিপিআই (এমএল)–এর বক্তব্য, সব মাত্রা ছাড়াচ্ছেন শুভেন্দু। বাংলার সম্প্রীতির মাটিতে যা বরদাস্ত করা যায় না।

ওই ভাষণে ঠিক কী কী বিতর্কিত শব্দ ব্যবহার করেছিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী?

মুখ্যমন্ত্রীকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেছিলেন, “বেগম ক্ষমতায় ফিরলে গোটা রাজ্য মিনি পাকিস্তানে গড়ে উঠবে। ‘‌ইদ মুবারক’‌ বলা তাঁর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আর তাই দোলের দিনেই ‘‌দোল মুবারক’ বলছেন তিনি!‌ বহু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ছোট ছোট পাকিস্তান তৈরি করে রেখেছেন তিনি। ক্রিকেট ম্যাচে পাকিস্তান জিতলে তাঁরা বাজি ফাটান। নন্দীগ্রাম কি তাঁদের হাতে তুলে দিতে চান?‌ ভেবে দেখুন।”

কমিশনের কাছে দেওয়া অভিযোগ পত্রে শুভেন্দুর বক্তব্যকে তীব্র আপত্তি জানিয়ে বলা হয়েছে, ‘‌মুবারক’ শব্দের মতো‌ বহুল প্রচারিত উর্দু শব্দের অপব্যবহার করে ঘৃণার রাজনীতি করতে চাইছেন শুভেন্দু। যা সমাজের উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে।

এখানেই শেষ নয়, গত ৭ মার্চের একটি ভাষণের প্রসঙ্গ টানা হয়েছে। যেখানে মমতাকে কটাক্ষ করতে গিয়ে তাঁকে ‘‌মুসলিম ঘনিষ্ঠ’ এবং মুসলিমদের ‘‌অনুপ্রবেশকারী’‌ বলে আক্রমণ শানাতে দেখা গেছে শুভেন্দু অধিকারীকে। ‌তিনি বলেন, ‘‌বাংলার মেয়ে হিসেবে আপনাকে কেউ চান না। আপনি অনুপ্রবেশকারীদের ফুফু এবং রোহিঙ্গাদের খালা হিসেবেই পরিচিত।’‌ এমনকি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিরুদ্ধেও ঘৃণা ছড়িয়ে ভোট পাওয়ার চেষ্টা করছেন শুভেন্দু, এই অভিযোগও তোলা হয়। যার ফলে ভবিষ্যতে মারাত্মক হতে পারে। তার জন্য দায়ী থাকবেন শুভেন্দু।

নির্বাচন কমিশনকে লিবারেশনের পক্ষ বলা হয়, নির্বাচনী প্রচারে শুভেন্দু অধিকারীর সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে নির্বাচনী গণতন্ত্রের রক্ষাকর্তাদের ক্ষমা করবে না ইতিহাস।‌

আরও পড়ুন- বুদ্ধদেবের নেতৃত্বেই নন্দীগ্রামে গুলি চলেছিল, খোঁচা সৌগতের

Advt

Previous articleবুদ্ধদেবের নেতৃত্বেই নন্দীগ্রামে গুলি চলেছিল, খোঁচা সৌগতের
Next articleইশরত জাহান ‘ভুয়ো’ এনকাউন্টার মামলায় শেষ ৩ অভিযুক্তও বেকসুর খালাস