কেন্দ্রের দুমুখো নীতি নিয়ে প্রশ্ন কোর্টের, মহাকুম্ভ মেলায় অনুমতি আর নিজামুদ্দিনে রমজানের নামাজে আপত্তি!

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভারত জুড়ে। দেশের সব রাজ্যেই বাড়ছে সংক্রমণ। অথচ তার মধ্যেও নীতির প্রশ্নে নির্লজ্জ দ্বিচারিতা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। করোনা সংকটের কারণে জমায়েত বন্ধের ক্ষেত্রেও বিজেপি সরকার সাম্প্রদায়িক বিভাজনের নীতি নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিই নয়, এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছে খোদ আদালতও। একই যুক্তিতে দুই ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে পৃথক মনোভাব কেন, প্রশ্ন তোলে দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi high court)।

এই প্রশ্নের মুখে পড়ে রাতারাতি মত বদল করেছে কেন্দ্র। করোনাকালে কুম্ভ মেলায় অনুমতি দিলেও দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে রমজান উপলক্ষ্যে নামাজ পরতে দেওয়া নিয়ে আপত্তি ছিল কেন্দ্রের। আদালতের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রের তরফে দিল্লি হাইকোর্টকে জানানো হয়, নতুন বিপর্যয় মোকাবিলা আইন (Delhi Disaster Management Act) অনুসারে সমস্ত ধর্মীয় জমায়েতেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

গতবছর করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পরার জন্য দায়ী করা হয়েছিল দিল্লির এই নিজামুদ্দিনকেই। বলা হয়েছিল, সংক্রমণের মাঝেই বিপর্যয় মোকাবিলা আইন লঙ্ঘন করে তাবলিঘি জামাতে (Tablighi Jamaat) অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে মামলা গড়ায় আদালতে। বন্ধ করে দেওয়া হয় নিজামুদ্দিন মারকাজ (Nizamuddin Markaz)। সম্প্রতি দিল্লির ওয়াকফ বোর্ডের তরফে আর্জি জানিয়ে বলা হয়, রমজান উপলক্ষ্যে যেন নিজামুদ্দিনে নামাজ পরতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এই আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, পুলিশের কাছে ২০০ জনের নামের তালিকা জমা দিতে হবে। সেখান থেকে ২০ জনকে প্রবেশ বেছে নিয়ে প্রবেশাধিকার দিতে পারে ওয়াকফ বোর্ড।

২০ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সোমবার দিল্লি আদালত প্রশ্ন তোলে: হরিদ্বারে যখন মহাকুম্ভ মেলার আয়োজন করা হচ্ছে, লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হচ্ছে, তখন কীভাবে নিজামুদ্দিনের জনসমাগম ২০ জনে সীমাবদ্ধ রাখা যায়? বোর্ডের তরফেও বলা হয়, হাজার মানুষের মধ্যে মাত্র ২০০ জনের নাম বেছে নেওয়া কষ্টসাধ্য বিষয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের তরফে বলা হয়, ২০০ জনের তালিকা গ্রহণযোগ্য যুক্তি নয়। অন্য কোনও ধর্মীয় স্থানে পুণ্যার্থীদের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়নি। সুতরাং এক্ষেত্রেও তা মানা যায় না। একইসঙ্গে আদালতের তরফে কেন্দ্রের কাছে ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক বা খেলাধুলোর অনুষ্ঠানে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। এরই জবাবে মঙ্গলবার কেন্দ্র তার আগের অবস্থান বদলে জানায়, দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী যে কোনও ধর্মীয় স্থানেই জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।

আরও পড়ুন- শ্মশানে মৃতদেহের স্তূপ! কোভিডে মৃতের সংখ্যা গোপন করছে মধ্যপ্রদেশ?

Previous articleশ্মশানে মৃতদেহের স্তূপ! কোভিডে মৃতের সংখ্যা গোপন করছে মধ্যপ্রদেশ?
Next articleকরোনা-কারণে রাজ্যের শেষ ৩ দফার ভোট একদিনে করতে পারে কমিশন