পরিবর্তন নয়, তৃণমূলের প্রত্যাবর্তনই নিশ্চিত করছে বুথ ফেরত সমীক্ষা

পরিবর্তন নয়, তৃণমূলের প্রত্যাবর্তনের দিকেই পাল্লা ঝুঁকে আছে সংখ্যাগরিষ্ঠ বুথ ফেরত সমীক্ষায়৷

প্রায় সব এক্সিট পোল-এর জানিয়েছে, তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
রাজ্যে ৮ দফায় ভোট শেষ হওয়ামাত্রই একের পর এক বুথ ফেরত সমীক্ষা বা এক্সিট-পোল প্রকাশিত হচ্ছে৷ বড় মাপের সমীক্ষক সংস্থার রিপোর্ট যা বলছে, তাতে হতাশ হতে হচ্ছে বিজেপিকে৷ ২০০ আসন দখল করার বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ৷ কোনও সমীক্ষাই কিন্তু বিজেপিকে এই আসন দিচ্ছে না৷ তাহলে বিজেপির শীর্ষস্তরের হিসাব এভাবে এলোমেলো হচ্ছে কেন ? এটা বড়ভাবে উঠে আসছে এই সমীক্ষায়৷ একইসঙ্গে বুঝিয়ে দিচ্ছে এই বাংলায় এখনও তৃণমূল বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প হয়ে উঠতে পারেনি বিজেপি৷

বুথ ফেরত সমীক্ষার কাছাকাছি ভোটের চূড়ান্ত ফল যদি হয় তাহলে জোর ধাক্কা খাবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব৷ গোটা দেশ প্রত্যক্ষ করেছে, বাংলা দখল করতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-সহ গোটা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা, বিজেপি তথা আরএসএস-এর শীর্ষনেতৃত্ব কতখানি তৎপর ছিলেন৷ বাংলা-সহ গোটা দেশ শুনেছে বাংলায় ‘ইস বার ২০০ পার’-এর ক্যাচ-লাইন৷ মোদিজি, শাহজি’র মুখে এ কথা শুনে মানুষ অনেকটাই বিশ্বাসও করেছে৷ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন এ কথা বলছেন, তখন নিশ্চয়ই এজেন্সির মাধ্যমে পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতেই বলেছেন, এমনই ধারনা হয়েছে বাংলার গেরুয়া শিবিরের৷ বিজেপি আশানুরূপ ফল করতে না পারলে বিজেপির শীর্ষস্তরের ভাবনাচিন্তা প্রশ্নের মুখে পড়বেই৷ ঠিক যেমন হয়েছিলো ২০২০-এর দিল্লি বিধানসভা ভোটের পর৷ দিল্লিতে সরকার গড়ার প্রবল দাবিদার বিজেপি যাত্রা শেষ করেছিলো মোট ৭০ আসনের মধ্যে ৮টি আসন দখল করে৷ ২০১৫-র দিল্লিভোটে বিজেপি পেয়েছিলো ৩টি আসন৷ সেই দিক থেকে বিচার করলে বিজেপি ২০২০-এ আসন সংখ্যা বাড়িয়ে নিয়েছে ৫টি৷ ২০১৬-র বাংলার ভোটে বিজেপি লাভ করেছিলো ৩ আসন৷ দিল্লির প্রেক্ষিতে বিচার করলে ৮ বা আর বেশি আসন বিজেপি লাভ করলেই, তা হবে চমকপ্রদ সাফল্য৷

পাশাপাশি এটাও ঠিক, এখনই আগাম বলা যায়, এই ভোটে ক্ষমতার পালাবদল যদি নাও হয়, বিজেপির আসনসংখ্যা নিশ্চিতভাবেই বাড়বে৷ বিধানসভার ভিতরে এবং বাইরে বিজেপির শক্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে৷ বাংলা তথা দেশের উত্তর-পূর্ব ভাগের বিজেপি-রাজনীতিতে এটা অচিরেই ফ্যাক্টর হয়ে উঠবে৷

◾TIMES NOW C-VOTER জানিয়েছে, তৃণমূল ১৫৮ আসন পেতে পারে, বিজেপি পেতে পারে ১১৫ আসন৷ আর সংযুক্ত মোর্চা পেতে পারে ১৯ আসন৷

◾ABP ANANDA C-voter জানাচ্ছে তৃণমূল ১৫২-১৬৪ আসন পেতে পারে, বিজেপি পেতে পারে ১০৯-১২১ আসন৷ আর সংযুক্ত মোর্চা পেতে পারে ১৪-২৫ আসন৷

◾P-MARQ-এর সমীক্ষা বলছে, তৃণমূল ১৫২ থেকে ১৭২, বিজেপি ১১২ থেকে ১৩২ এবং মোর্চা পেতে পারে ১০ থেকে ২০টি আসন৷

◾ETG RESEARCH-এর এক্সিট পোল বলছে, তৃণমূল ১৬৪ থেকে ১৭৬, বিজেপি ১০৫ থেকে ১১৫ এবং মোর্চা পেতে পারে ১০ থেকে ১৫টি আসন৷

◾ওদিকে ‘জন কি বাত’ জানিয়েছে, বিজেপি পেতে পারে ১৬২-১৮৫ আসন, তৃণমূল পেতে পারে ১০৪-১২১ আসন এবং সংযুক্ত মোর্চা পেতে পারে ৯ আসন৷

◾ পোল অফ পোলস জানিয়েছে, তৃণমূল পেতে পারে ১৫৫, বিজেপি পেতে পারে, ১২২, সংযুক্ত মোর্চা পেতে পারে ১৫ আসন।

◾ পোলস্ট্র্যাট জানিয়েছে, তৃণমূল পেতে পারে, ১৪২-১৫২, বিজেপি পেতে পারে ১২৫-১৩৫, সংযুক্ত মোর্চা পেতে পারে, ১৬-২৬ আসন।

◾ ইন্ডিয়া টিভি বলছে, বিজেপি পাবে ১৭৩-১৯২, তৃণমূল পাবে ৬৪-৮৮, সংযুক্ত মোর্চা পাবে ৭-১২ আসন।

এই ধরনের বুথ ফেরত সমীক্ষায় ফলাফল অধিকাংশ সময়েই আসল ফলাফলের সঙ্গে মেলে না৷ তবে ভারতীয় রাজনীতিতে এই ধরনের এক্সিট পোলের ভূমিকা রয়েছে, কৌতূহলও অনেকটাই থাকে৷ সেই হিসাবে একুশের ভোটের বুথ ফেরত সমীক্ষাও নজর কাড়ছে, যে সমীক্ষা বলছে, তৃতীয়বারের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসই বাংলার ক্ষমতায় ফিরছে৷

আরও পড়ুন- বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া শান্তিতেই বঙ্গে শেষ ভোট অষ্টমী

Advt

Previous articleসমীক্ষায় ভরসা নেই তৃণমূল-বিজেপির, অনিশ্চিত সমীক্ষকরাও!
Next articleবিজেপি বাংলার মসনদে এলে মুখ্যমন্ত্রী দিলীপ ঘোষ?