রাত পোহালেই ভোট গণনা, হাইভোল্টেজ কেন্দ্রে নজরে কারা!

বাংলার মসনদ এবার কার দখলে যাবে রাত পোহালেই তার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ্যে আসবে। তবে এবারের নির্বাচনে হাইভোল্টেজ প্রার্থীদের(High voltage candidate) দিকে বাড়তি নজর রয়েছে বঙ্গবাসীর। সেই তালিকায় কেউ একেবারে নবাগত তো কেউ আবার দুঁদ রাজনীতিবিদ। এবারের নির্বাচনে সেই সকল প্রার্থীদের দিকে রয়েছে বাড়তি নজর। একঝলকে দেখে নেওয়া যাক সেই সকল নজরকাড়া প্রার্থীদের।

নন্দীগ্রাম(Nandigram): একুশের বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে সবচেয়ে হাই ভোল্টেজ কেন্দ্রটি হল নন্দীগ্রাম। যেখানে তৃণমূলের তরফে প্রার্থী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। পাশাপাশি বিজেপি প্রার্থী একদা মমতা ঘনিষ্ঠ ‘দলবদলু’ শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari)। পাশাপাশি, এই কেন্দ্রেই নজরকাড়া সিপিএমের তরুণ মুখ হিসেবে লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছেন মীনাক্ষী। হাড্ডাহাড্ডি এই লড়াইয়ে বুথ ফেরত সমীক্ষা অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে এই কেন্দ্র থেকে এবার জয়ী হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শেষ হাসি কে হাসবে তা অবশ্য জানা যাবে আগামীকাল।

ভবানীপুর(Bhawanipur): বঙ্গ নির্বাচনের অন্যতম হাইভোল্টেজ কেন্দ্র হিসেবে তালিকায় রয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ভবানীপুর কেন্দ্রটি। তবে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কেন্দ্র থেকে না লড়লেও তাঁর সহযোদ্ধা হিসেবে তৃণমূলের তরফে এখানে লড়াইয়ে নেমেছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে বিজেপির তরফে এখানে প্রার্থী হয়েছেন একদা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। বুথ ফেরত সমীক্ষার অবশ্য দাবি এই কেন্দ্র থেকে এবারও বিপুল ভোটে জয়লাভ করতে চলেছে তৃণমূল প্রার্থী।

টালিগঞ্জ: ভবানীপুরের ঠিক পাশের কেন্দ্র টালিগঞ্জেও এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তৃণমূল ও বিজেপির। তৃণমূলের তরফে এই কেন্দ্র থেকে এবারও লড়াইয়ে নেমেছেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। অন্যদিকে, বিজেপির তরফ থেকে এই কেন্দ্রে নামানো হয়েছে সংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে। ফলে এই কেন্দ্রের শেষ হাসি কে হাসবে সেদিকে নজর হয়েছে বাংলার মানুষের। তবে বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী এখানেও অ্যাডভান্টেজে রয়েছে তৃণমূল প্রার্থী।

বেহালা পূর্ব: গতবার এই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা প্রাক্তন বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে তিনি বিজেপিতে যোগদান করায় এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে লড়াইয়ে নেমেছেন তার স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। বিজেপি নেতারা অবশ্য শোভনের উপর ভরসা রাখেননি। বরং এখানে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন অভিনেত্রী পায়েল সরকার। রাজনীতিতে একেবারে নতুন মুখ পায়েল এই কেন্দ্রে এবার বিপুল ভোটে হারতে চলেছেন এমনটাই দাবি করছে সমীক্ষা।

বেহালা পশ্চিম: পূর্বের মত বেহালা পশ্চিমেও বিজেপির তরফে এবার ভরসা রাখা হয়েছে তারকা প্রার্থীর ওপর। প্রতিদ্বন্দী তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এই কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। এখানে শেষ হাসি কে আসবে তা আগামীকাল জানা গেলেও বুথ ফেরত সমীক্ষাতে এই কেন্দ্রে জয়লাভ করতে চলেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

বালিগঞ্জ: উপরোক্ত হাই ভোল্টেজ কেন্দ্রগুলিতে মূল লড়াই তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির হলেও বালিগঞ্জ কেন্দ্রে লড়াইটা তৃণমূল বনাম সিপিএমের। সিপিএমের তরফে এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন ডাক্তার ফুয়াদ আলি। অন্যদিকে তৃণমূলের তরফ থেকে এখানে প্রার্থী হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বুথ ফেরত সমীক্ষা সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে এখানে এগিয়ে রাখলেও, লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হবে বলে অনুমান রাজনৈতিক মহলের।

কামারহাটি: রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জনপ্রিয় নেতা মদন মিত্র ফের এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে সিপিআইএমের তরফে এখানে প্রার্থী হয়েছেন সায়নদীপ মিত্র। গতবার এই কেন্দ্রে সিপিআইএমের মানষ মুখার্জি জয়ী হলেও এবার অবশ্য পালে হাওয়া বেশি মদন মিত্রর দিকে। ফলে এই কেন্দ্র থেকে এবার কে জয়ী হবে সেদিকে নজর রয়েছে বঙ্গবাসীর।

সিঙ্গুর: বয়স জনিত কারণে টিকিট না পেয়ে এবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন এই কেন্দ্রের বিদায়ী বিধায়ক রবীন্দ্র ভট্টাচার্য। তৃণমূলের তরফে এখানে প্রার্থী হয়েছেন বেচারাম মান্না। হেভিওয়েট এই কেন্দ্রে এই দুই প্রার্থীর পাশাপাশি সংযুক্ত মোর্চার তরফে তরুণ মুখ হিসেবে এখানে লড়াইয়ের ময়দানে সৃজন ভট্টাচার্য। অন্যান্য হাইভোল্টেজ কেন্দ্রের পাশাপাশি এই কেন্দ্রেও এবার রয়েছে বাড়তি নজর।

কৃষ্ণনগর উত্তর: ২০ বছর আগে শেষবার তৃণমূলের টিকিটে ভোটে লড়েছিলেন মুকুল রায়। কিন্তু ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার রাজনীতির চাণক্যকে হার মানতে হয়েছিল। তারপর থেকে ভোটে দাঁড়ানোর নাম করেননি তিনি। এতদিন পর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে তিনি আবারও প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে তৃণমূল প্রার্থী কৌশানী মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন পর লড়াইয়ে নামা মুকুল রায়ের এই কেন্দ্রের দিকে এবার বাড়তি নজর হয়েছে সকলের। ফেরত সমীক্ষা অবশ্য বলছে এবারের নির্বাচনে এখান থেকে জয়ী হতে চলেছেন মুকুল। তবে শেষ হাসিকে হাসবে তা অবশ্য জানা যাবে আগামীকাল।

এর পাশাপাশি একুশের বঙ্গ নির্বাচনে বাড়তি নজর রয়েছে বামেদের কিছু তরুণ মুখের দিকে। তারা হলেন, জামুড়িয়া কেন্দ্রের সিপিআইএম প্রার্থী ঐশী ঘোষ, কসবা কেন্দ্রের শতরূপ ঘোষ, বালি কেন্দ্রের দীপ্সিতা ধর, রাজারহাট-নিউটাউন কেন্দ্রের প্রার্থী রাজ্যের প্রাক্তন বাম মন্ত্রী গৌতম দেবের পুত্র সপ্তর্ষি দেব। পাশাপাশি প্রবীণ সিপিআইএম নেতা রায়দিঘির প্রার্থী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের দিকেও নজর দিয়েছে বঙ্গবাসী।

Advt

Previous articleফের দিল্লির একটি হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে ৮ করোনা রোগীর মৃত্যু
Next articleনবান্নের নয়া নির্দেশিকায় বিয়েবাড়ির বিধি, ছাড় মিলল কীসে?