ফেক নিউজ-ভিডিও-ছবিকে হাতিয়ার করে বাংলাকে অশান্ত করার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে

ভাঙবে তবু মচকাবে না। বাংলার ভোটের (West Bengal Assembly Election) আগে থেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ শুরু থেকেই ছিল কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে। একের পর এক ‘ফেক নিউজ’, ভুয়ো ছবি, মিথ্যা ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে বাংলার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হিসেবে দেখানোর ষড়যন্ত্র চলছে এখনও। শীতলকুচির মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়েও বিজেপি নেতা-কর্মী এমনকি প্রার্থীরাও ফেক ভিডিও পোস্ট করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়েও ফেক ভিডিও ও ছবি পোস্ট করার অভিযোগ উঠেছিল। বাংলার মানুষ ইভিএমে তার যোগ্য জবাব দিয়েছে।

ভোট পরবর্তী বাংলায় ব্যাপক বিপর্যয়ের পরও থামছে না বিজেপি। বিক্ষিপ্ত রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু সেই ঘটনাগুলোর আইনি মোকাবিলার পরিবর্তে অমিত মালব্যর নেতৃত্বে বিজেপি আইটি সেল দেশজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছে অসংখ্য মিথ্যা ভিডিও ও ছবি। আর অন্যদিকে ট্যুইটারে ট্রেন্ডিং চালু করা হয়েছে—‘বাংলায় চাই রাষ্ট্রপতি শাসন’।

মঙ্গলবার ইন্ডিয়া কালেক্টিভ ট্রাস্ট নামক একটি এনজিও পশ্চিমবঙ্গে ৩৫৬ ধারা জারি করে রাষ্ট্রপতি শাসনের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, বাংলায় ভোট পরবর্তী ‘সন্ত্রাসে’ গণতন্ত্র ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। পাশাপাশি, বিজেপির নেতা গৌরব ভাটিয়া সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন সিবিআই তদন্তের দাবিতে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যপালকে ফোন করছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রিপোর্ট চাইছে। বিজেপির এমপিরা ট্যুইটারে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবিতে সরব হয়েছেন। দিল্লির বিজেপি এমপি পরবেশ সিং ট্যুইটার ট্রেন্ডিং শেয়ার করেছেন। যে ট্রেন্ডিংয়ের নাম ‘বাংলায় চাই রাষ্ট্রপতি শাসন’। সব মিলিয়ে বাংলাকে ‘হেয় করতে’ বিজেপির এই নয়া কৌশল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

আরও পড়ুন-প্রধানমন্ত্রীর ফোনে ‘চার্জড’ হয়ে বুধবার সকালে ফের ট্যুইট- তোপ ধনকড়ের

বিজেপি কৌশলে কঙ্গনা রানাওয়াত মাঠে নামিয়েছে বলেও অভিযোগ। একের পর এক ট্যুইট করিয়েছে এই বলিউড অভিনেত্রীকে দিয়ে। কঙ্গনা কোথাও বলেছেন, “শয়ে শয়ে খুন হয়ে চলেছে”, কোথাও বলেছেন, “বাংলার মহিলা গুন্ডাকে শায়েস্তা করতে মোদিজি আপনার বিরাট রূপ আর একবার দেখান, যেটা ২০০০ সালের পর তিনি করে দেখিয়েছিলেন।” অর্থাৎ কঙ্গনার ইঙ্গিত গুজরাত! অবশ্য ওইখানেই শেষ… এরকম প্ররোচনামূলক ট্যুইটের পর অভিনেত্রীর ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট, পাকাপাকিভাবে বন্ধ করে দিয়েছে ট্যুইটার কর্তৃপক্ষ। বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র দিল্লি থেকে বলেছেন, “বাংলা আজ নাৎসি জার্মানিতে পরিণত।”

বিজেপির অপপ্রচার ফাঁস:

বাংলাকে সর্বভারতীয় স্তরে হেয় করতে বিজেপি র সোশ্যাল মিডিয়ার হাতিয়ার কিন্তু ফেক নিউজ আর ছবিই। বাংলাতেও এই প্রবণতা সোমবার রাত থেকে ক্রমশ বাড়ছে। একই ছবি একেকবার একেক ভাবে পোস্ট করা হচ্ছে। যেখানে দাউ দাউ করে জ্বলছে একটি বাড়ি। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কেউ লিখছে, “হিন্দুদের মন্দির জ্বলছে”। আবার কেউ সেই ছবিতে ক্যাপশন দিয়েছে, “আমাদের পার্টি অফিস জ্বলছে”। আবার কারও দাবি, “ওটা আমাদের দলীয় কর্মীর বাড়ি।” কেউ প্রচার করছে, ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জন মারা গিয়েছে। কারও দাবি, গ্রামে গ্রামে মহিলাদের গণধর্ষণ চলছে।

কিন্তু বিজেপির ফেক ভিডিও ছবি দিয়ে উস্কানির ঘটনা ধরে ফেলেছে বাংলার মানুষ। কোওনটা বাংলাদেশ, কোনওটা কানপুর, কোনওটা উত্তরপ্রদেশ, কিছু গুজরাতের ছবি যে পোস্ট করা হয়েছে, তা ধরে ফেলেছে সকলেই। সেই ছবি বিজেপির কাছে বুমেরাং হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল হচ্ছে।

Advt

Previous articleবাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অনাড়ম্বরভাবেই তৃতীয়বারের জন্য শপথ মমতার
Next articleশপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অভিষেকের উজ্জ্বল উপস্থিতি, নিজে এসে কথা বললেন রাজ্যপাল