সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে টানা লকডাউনের পক্ষেই সওয়াল ICMR প্রধানের

“দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সংক্রমণ-শৃঙ্খল ভাঙা দরকার৷ আর এই শৃঙ্খল ভাঙতে এখনই ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের লকডাউন জরুরি৷” এমনই জানালেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা ICMR প্রধান বলরাম ভার্গব৷ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এই প্রথমবার কেন্দ্রের কোনও শীর্ষস্থানীয় কর্তা লকডাউনের (Lockdown) প্রয়োজনীয়তা এবং লকডাউনের মেয়াদ নিয়ে নির্দিষ্ট বক্তব্য তুলে ধরেছেন৷

সংবাদমাধ্যমে বৃহস্পতিবার ভার্গব বলেছেন, “যে এলাকায় যত সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১০ শতাংশের বেশি রিপোর্ট যদি পজিটিভ আসে, তাহলে সেই জায়গায় দ্রুত লকডাউন করা উচিত। ওই লকডাউনের মেয়াদ হবে ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ। একমাত্র তাহলেই করোনার সংক্রমণ-শৃঙ্খল ভাঙা সম্ভব।” তিনি বলেছেন, “এই মুহুর্তে সংক্রমণ যেখানে পৌঁছে গিয়েছে, তাতে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলেই লকডাউন করা অত্যন্ত জরুরি।” নির্দিষ্ট তথ্য সামনে এনে ICMR-প্রধান বলেছেন, “এই মুহূর্তে দেশের ৭১৮টি জেলার তিন-চতুর্থাংশ এলাকাতেই সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের ওপরে। এর মধ্যে রয়েছে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুর মতো বড় শহরগুলি। ভার্গব বলেছেন, “দিল্লির পরিস্থিতি অত্যন্ত শোচনীয়। সেখানে পজিটিভিটি রেট ৩৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। এই অবস্থায় যদি দিল্লি পুরোপুরি খুলে দেওয়া হয়, তাহলে বিপর্যয় ঘটবে”।

ওদিকে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক বৃহস্পতিবার পরিসংখ্যান প্রকাশ করে বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ৬২ হাজার ৭২৭ জন। দেশে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ২ কোটি ৩৭ লক্ষ ৩ হাজার ৬৬৫। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪,১২০ জনের। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৩১৭ জনের।

ICMR-প্রধান এমন অভিমত প্রকাশ করলেও অর্থনৈতিক প্রভাবের কথা মাথায় রেখে দেশজুড়ে লকডাউন জারি করার বিপক্ষে কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লকডাউনের বিষয়টি রাজ্যগুলির ওপর ছেড়ে দিয়েছেন৷ ওদিকে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন রাজ্য বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কোথাও পূর্ণ লকডাউন, কোথাও আংশিক, কোথাও নাইট কারফিউ, আবার কোথাও কিছুই নেই৷ ভার্গবের এই বার্তায় স্বচ্ছ হয়েছে, সংক্রমণ নিয়ে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এমন খামখেয়ালি সিদ্ধান্ত, ভারতবর্ষে অপূরণীয় বিপর্যয় ডেকে আনছে৷ কেন্দ্রের এখনই উচিত গোটা দেশে একই ধরনের কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা৷

আরও পড়ুন- রাজ্যের মানবিক মুখ, নদীতে ভেসে আসা মৃতদেহের সৎকারের জন্য প্রস্তুত প্রশাসন

Advt

Previous articleরাজ্যের মানবিক মুখ, নদীতে ভেসে আসা মৃতদেহের সৎকারের জন্য প্রস্তুত প্রশাসন
Next articleকোভিড পরিস্থিতিতে কালোবাজারি রুখতে বিজ্ঞপ্তি জারি কলকাতা পুলিশের