রুদ্রনীল-শ্রাবন্তী-পায়েলের নির্বাচনী খরচ কমপক্ষে ৪ কোটি টাকা! হিসেব চাইছেন দিল্লির নেতারা

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ২০০ আসনে জিতবে এমনটাই দাবি ছিল তাদের। কিন্তু তা আর হল কই! মাত্র ৭৭ টি আসনে জয় পেয়েছে গেরুয়া শিবির। এর মধ্যে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। নির্বাচন এবং ফল প্রকাশ হতেই ভোটের খরচের হিসেব চাইছে শীর্ষ নেতৃত্ব। বঙ্গ বিজেপি সূত্রের দাবি, শুধুমাত্র দক্ষিণ কলকাতার অন্তর্গত তিনটি কেন্দ্রে জয় নিশ্চিত করতে প্রায় ৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বিধানসভা কেন্দ্রগুলি হল ভবানীপুর, বেহালা পূর্ব এবং বেহালা পশ্চিম। এই তিন কেন্দ্রের তারকা প্রার্থীরা হলেন- রুদ্রনীল ঘোষ, পায়েল সরকার এবং শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়।

নির্বাচনের মাস দুয়েক আগে থেকেই প্রতিটি বিধানসভায় একাধিক কেন্দ্রীয় নেতারা দায়িত্ব ছিলেন। সেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। দিল্লি বিজেপির অভিযোগ, দলের কেন্দ্রীয় কোষাগার থেকে কোটি কোটি টাকা তাঁদের হাতে দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচনে কিছু টাকা খরচ করে, বাকিটা ওই নেতারা হাতিয়ে নিয়ে অন্য রাজ্যে পালিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ।

অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের বক্তব্য, এ ব্যাপারে তাঁর কিছু জানা নেই। কারণ, দিল্লি থেকে প্রতিটি বিধানসভার জন্য সুনির্দিষ্ট কেন্দ্রীয় নেতা দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরাই নির্বাচন সংক্রান্ত টাকা খরচ করতেন এবং হিসেব রাখতেন। প্রার্থী হিসেবে দল নির্বাচন কমিশনের বিধি মেনে যেটুকু টাকা দিয়েছে, তার প্রতিটি পয়সার হিসেব আমি ইতিমধ্যেই জমা দিয়েছি। এ বিষয়ে অবশ্য অভিনেত্রী পায়েল সরকার এবং শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

আরও পড়ুন-শীতলকুচিকাণ্ডে সিআইডির চাঞ্চল্যকর তথ্য, ভোটের দিন বুথ তাক করেই চলেছিল গুলি

বঙ্গ বিজেপির এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, দক্ষিণ কলকাতার ওই তিন কেন্দ্রের তারকা প্রার্থীদের গড়ে ৩০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও ভবানীপুর, বেহালা পূর্ব এবং বেহালা পশ্চিম এই তিন কেন্দ্রে অমিত শাহ, জে পি নাড্ডা, অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী সহ শীর্ষ নেতাদের রোড শোর জন্য ১৫ লক্ষ টাকা করে খরচ হয়। প্রতিটি বিধানসভায় কর্মী সম্মেলনের জন্য কমপক্ষে ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। ওই ৩ কেন্দ্রের মোট বুথের সংখ্যা ১,২৬৪। ওই শীর্ষ নেতা আরও জানিয়েছেন, ভোটের দিন প্রত্যেক বুথকর্মীদের হাতে অন্তত ৪ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে ব্যয় করা হয়েছিল ৫০ লক্ষ টাকারও বেশি। এছাড়াও নির্বাচনের আগে এই তিন কেন্দ্রের কনভেনার, মণ্ডল সভাপতি, জেলা কমিটির সদস্য সহ একাধিক নেতার জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করেছিল দিল্লির বিজেপি নেতারা।

পাশাপাশি, প্রতিটি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ভিন রাজ্যের নেতাদের হোটেল, খাওয়া, গাড়ি, সহকারীদের খরচ ২ লক্ষ টাকার বেশি, এবং কেন্দ্র পিছু ১০-১৫টি গাড়ির খরচ ছিল মাসে ৫ লক্ষ টাকা। বিজেপি সূত্রে দাবি, বেহালা পূর্ব এবং পশ্চিম কেন্দ্রে নির্বাচনী অফিসের জন্য ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২ টি বিয়েবাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। সেখানে প্রতিদিন কর্মীদের খাওয়া-দাওয়া বাবদ মাসে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা, পথসভার জন্য প্রতি বিধানসভায় ২-৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রার্থীর জনসংযোগের জন্য বিজেপির পতাকা খাতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা বিল হয়।

Advt

Previous articleফের হাসপাতালে ভর্তি হলেন অভিনেতা দিলীপ কুমার
Next articleযোগীর জন্মদিনে শুভেচ্ছাবার্তা নেই মোদি-শাহের, সম্পর্কে চিড় ধরেছে অনুমান রাজনৈতিক মহলের