Saturday, November 15, 2025

১৯১৫ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর। সূর্যাস্তের সাথে বালেশ্বরের বুড়িবালাম নদীর তীরে শেষ হলো এক যুদ্ধ। নেতৃত্ব প্রদানকারী, গুলিবিদ্ধ যতীনকে নিয়ে যাওয়া হলো বালেশ্বর সরকারী হাসপাতালে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে সারা শরীর। গুলির আঘাতে উড়ে গেছে হাতের আঙ্গুল,, পেটের একাংশের মাংস। ক্রমাগত রক্তপাত হয়ে চলেছে। তখন স্যালাইনের প্রচলন ছিল না, তার বদলে মুখে ঢেলে দেওয়া হলো লেমনেড। কোনোক্রমে স্টিচ করা হলো পেটের অংশে। ব্রিটিশ পুলিশের কড়া হুকুম,, যেভাবেই হোক্ বাঁচিয়ে রাখতে হবে এই মোস্ট ওয়ান্টেড বিপ্লবীকে, তাঁর কাছেই পাওয়া যাবে দলের বাকি সদস্যদের খবর, ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা। অনেক রাতে, তদানীন্তন পুলিশ কমিশনার টেগার্ট এসে ঢুকলেন ঘরে, সাথে আরো চারজন ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার।
নিদ্রামগ্ন বিপ্লবীকে ঘুম থেকে তুলে শুরু হলো জেরা। স্মিতহাস্য যতীনের সব প্রশ্নের এক‌ই উত্তর, “আমরা মরবো, দেশ জাগবে।” টেগার্টের ধৈর্যচ্যুতি ঘটলো। রেগে বেরিয়ে গেলেন ঘর থেকে। তখন ভোর হয়ে আসছে। ডাক্তার এসে দেখলেন, পেটের স্টিচ ছেঁড়া, রক্তবমি শুরু হয়েছে যতীনের। হাসতে হাসতে বললেন, “এত রক্ত ছিল শরীরে? ভাগ্যক্রমে, প্রতিটি বিন্দু অর্পণ করে গেলাম দেশমাতার চরণে।”

১৯১৫ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর সকাল। অস্তমিত হলো ব্রিটিশ সরকারের ত্রাস বীর বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় তথা বাঘা যতীনের জীবন সূর্য।

তাঁর বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে কুখ্যাত ইংরেজ পুলিশ অফিসার চার্লস টেগার্ট বলেছিলেন, “যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ইংরেজ হলে, ট্রাফালগার স্কোয়ারে নেলসনের পাশে তাঁর মূর্তি স্থাপন করা হতো।”

ভারতমাতার এই মহান সন্তানের ১০৪তম মৃত্যু বার্ষিকীতে জানাই সশ্রদ্ধ প্রণাম। তবে তাঁদের মৃত্যু হয় কি? তাঁরা তো অমর।🙏🙏

ছবি: বালেশ্বর সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের শেষ ছবি।

Related articles

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী কে: ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট JD(U)-এর!

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ২৪৩ টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৮৯ আসনে জয়ী। নীতীশ কুমারের জেডিইউ জিতেছে ৮৫ টি আসন।...

জাদুসম্রাটের বাড়িতে বিয়ের আসর! বিজ্ঞাপন দেখে পাত্র পছন্দ মৌবনীর

জিনা বন্দ্যোপাধ্যায় জনে জনে বার্তা রুটি গেল ক্রমে, বিয়ে করছেন মৌবনী শীতের মরশুমে! মেয়ের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন পিসি সরকার, সেখান থেকেই পাত্র...

রাজ্যে আসন্ন WBCS পরীক্ষা: জারি বিজ্ঞপ্তি

প্রকাশিত হল ডব্লুবিসিএস-এর পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি। পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (PSC, WB) বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, ২০২৬ সালের মার্চ...

পরিবারে SIR আতঙ্কে মৃত্যুর ছায়া, চাকরির আশ্বাস দিয়ে পাশে তৃণমূল

এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী বাবা। অসহায় পরিবার। কী করে হবে দিন গুজরান? ভিটেমাটি চলে যাবে না তো? এসব আতঙ্ক...
Exit mobile version