এতো প্রাণী থাকতে বিশ্বকর্মার বাহন হাতি কেন জানেন?

পুরানের প্রণাম মন্ত্রে বিশ্বকর্মাকে মহাবীর বলে বর্ণনা করা হয়েছে। আর দেবতা বিশ্বকর্মা যেমন মহাবীর ঠিক, তেমনি তাঁর বাহন যে হবে অর্থাৎ তাঁকে বহন করার ক্ষমতা যার থাকবে, তাকেও অমোঘ ক্ষমতার অধিকারী হতে হবে। স্থলভুমিতে হাতির মতো শক্তিশালী প্রাণী আর দুটি দেখতে পাওয়া যায় না।

হাতির এই ক্ষমতার ব্যবহার আজ থেকে নয়, বহু প্রাচীন কাল থেকেই করে আসছে মানুষ। প্রাচীন কালে রাজারা যুদ্ধে যাবার সময় সঙ্গে নিয়ে যেত হাতি বাহিনী। আর এই বাহিনী তারা প্রবল ভাবে ব্যবহার করতেন যুদ্ধে। যাদের কাছে এই হাতি বাহিনীর সংখ্যা বেশি থাকতো তাদের যুদ্ধে জয় ছিল নিশ্চিত। তাই এই স্থলভুমির অন্যতম শক্তিমান প্রাণী এই দিক থেকে মহাবীর বিশ্বকর্মার বাহন হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে।

আবার অন্য দিক দিয়ে ভাবলে হাতির কিন্তু কোনও হাত নেই। তবে তার আছে একটি শুঁড়। এই শুঁড়কে আবার কর বলা হয়। তাই হাতির এক নাম ‘করী’। কর’ শব্দটির উৎপত্তি ‘কৃ’ ধাতু থেকে। হাতি এই শুঁড়ের মাধ্যমেই জল পান করে, খাবার সংগ্রহ করে, গাছের ডালপালা ভেঙে বা শুড় দিয়েই জড়িয়ে ধরে সবকিছুকে। অর্থাৎ, শুঁড়কে হাতি নানারকম ভাবে ব্যবহার করে। এর দ্বারা তার শিল্পকর্ম প্রকাশ পায়। অর্থাৎ, শিল্পের মাধ্যমেই কর্মসংস্থান করে হাতি তার শুঁড়ের মাধ্যমে। এই দিক দিয়ে যেহেতু বিশ্বকর্মা কর্মের দেবতা এবং হাতির শুঁড় দিয়ে নানান কর্মে সিদ্ধ, তাই হাতিকেই বিশ্বকর্মার বাহন হিসাবে মেনে নেওয়া হয়েছে।

Previous articleবিশ্বকর্মার হাতে দাঁড়িপাল্লা থাকে কেন জানেন?
Next articleচারযুগে বিশ্বকর্মার কিছু অমর সৃষ্টি, যা আমাদের বিষ্ময় জাগায়