Monday, November 24, 2025

পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানাতে কোথাও যেন মিলে যায় “হ্যালোউইন” ও “ভূত চতুর্দশী”

Date:

Share post:

হ্যালোউইন ও ভূত চতুর্দশী । প্রতিবছর রীতি অনুযায়ী, কালীপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশী পালিত হয়। পুরাণ মতে, নরকাসুররূপী বলি রাজা কালীপুজোর আগের দিন ভূতচতুর্দশীতে মর্ত্যে আসেন পুজো নিতে। সঙ্গে থাকে পরলোক জগতের ভূত-প্রেতরা। বাঙালিরা এইদিন সংস্কারাচ্ছন্ন ভাবে চৌদ্দ শাক রান্না করে আর সন্ধ্যাবেলা চোদ্দ প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রয়াত পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানায়।

মনে করা হয়, এই দিন মর্ত্যে আবির্ভূত হন আমাদের পূর্ব পুরুষরা। সুতরাং, আমরা ভূত চতুর্দশীতে স্মরণ করি চৌদ্দ পুরুষদের। চৌদ্দ শাক অশুভ আত্মাকে দূরে সরিয়া রাখে। আর যেহেতু ভূতেরা অন্ধকার পছন্দ করে তাই প্রদীপ জালিয়ে তাদের দূরে সরিয়ে রাখা হয়। বা অন্য ভাবে বলা যায় অশুভ আত্মা আলোর রোশনাই থেকে দূরে থাকে। যেহেতু কৃষ্ণপক্ষে কালীপুজো হয় , তাই প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালানো হয়ে ওঠে প্রাসঙ্গিক।

ঠিক এই সময়টায় পশ্চিম দেশেগুলোয়ে হ্যালোউইন (Halloween) উদযাপন হয়। সেখানে মানুষ নানান রকম ভুতুড়ে সাজে উপস্থাপন করে নিজেদের। খ্রীস্টান মত অনুসারে, হ্যালোউইন পালিত হয় পয়লালা নভেম্বর। এই দিনটিকে বলা হয় সমস্ত সাধুদের দিন (All Saint’s Day)।

হ্যালোউইন এর উৎপত্তি একটি আইরিশ লোক উৎসব সাংহাই (Samhai) থেকে। সাংহাই কথার অর্থ নভেম্বর। এই উৎসব এক সময় ছিল গ্রীষ্মের সমাপ্তি এবং শীতের সূচনার সন্ধিক্ষণ। সেল্টিক ঐতিহ্য অনুযায়ী এই দিন মিলন হয় দুই জগতের। অর্থাৎ, ইহলোক ও পরলোকের। এই সময় দরজা খুলে যায় দুই পৃথিবীর আর মানুষ আহ্বান করে আত্মাদের। জ্বালানো হয় কুমড়ো দিয়ে তৈরি লণ্ঠন। যার নাম jack-o’-lantern অর্থাৎ রাতের প্রহরী।

এখন বোঝা যাচ্ছে, কোথায় মিল হ্যালোউইন আর ভূত চতুর্দশীর? অদ্ভুত ব্যাপার – পশ্চিম দেশের একটি লোক উৎসব হয়ে উঠল সমগ্র বিশ্বের একটি সাঙ্কেতিক উৎসব। কিসের সঙ্কেত? ভৌতিক শক্তি দমনের বা অন্য ভাবে বললে ভূতেদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার। কিভাবে? ওই যে ভূতেদের মতো সাজ পোশাক। যাতে ওরাও মনে করে আমরা ওদেরই একজন। আমরা চাই যাতে ওরা একটি বিশেষ দিনে এসে আমাদের আশীর্বাদ করেন এবং যাতে অসন্তুষ্ট না হন। তাহলেই বিপদ।

ভূত প্রেতে বিশ্বাস সার্বজনীন। সেই বিশ্বাস থেকেই প্রতি বছর আমরা পালন করি ভূত চতুর্দশী। এই দিনটি খুব পবিত্র। সাধু-সন্ত ও তান্ত্রিকদের আরাধনা করার দিন। মজার ব্যাপার হল, একই বিশ্বাসে ভর করে কেমন মিলে যায় পূর্ব ও পশ্চিম, মিলে যায় খ্রীষ্ট ধৰ্ম ও হিন্দুত্ব।

আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপুজোয় যাওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছি: রাজ্যপাল

 

spot_img

Related articles

১৭ দিনে কাজ শেষ করলেন রাজ্যের দুই BLO: জানালেন হাজারো সমস্যার কথা

নির্বাচন কমিশন কতটা কাঁটায় ভরা পথে রাজ্যের বুথ লেভেল আধিকারিকদের এসআইআর প্রক্রিয়া করতে বাধ্য করছে, তার প্রমাণ রাখলেন...

পিসেমশাই-বৌমা সম্পর্কে স্বামীকে মারতে সুপারি কিলার! বরাহনগর গুলিকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য

অবৈধ সম্পর্কের জেরেই বরাহনগরে গুলি চলেছিল, তদন্তে উঠে এলো এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। স্বামীকে খুন করার জন্য সুপারি কিলার...

দূষণে দমবন্ধ রাজধানীর! বিদেশ সফর নিয়ে মোদিকে কটাক্ষ তৃণমূলের

রাজধানী দিল্লিতে ভয়াবহ দূষণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখেল। সমাজমাধ্যমে তাঁর কটাক্ষ,...

৪৪ বিধানসভার ভোটার মায়ারানী? SIR স্ক্যানের পর হইচই পাণ্ডবেশ্বরে

বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার মাঝেই পাণ্ডবেশ্বরে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। এনুমারেশন ফর্মের কিউআর কোড স্ক্যান করতেই দেখা...