আন্দোলন তুলতে প্রাথমিক শিক্ষকদের রাতে গ্রেফতার, আজ রাজ্যপালের কাছে!

প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন কার্যত জোর করেই তুলে দিল পুলিশ। আন্দোলন ভেস্তে দিতে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের রাস্তায় নামিয়েছে পুলিশ, অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।

বুধবার দুপুর থেকে যাদবপুরের বাঘা যতীন এলাকায় জমা হতে থাকেন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা। দাবি মূলত দু’টি। আন্দোলন করার অভিযোগে ১৪জন শিক্ষককে অন্যায়ভাবে বদলি করা হয়েছে। শিক্ষকদের অবিলম্বে পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে দিতে হবে। দ্বিতীয় দাবি বেতন বৈষম্য দূর করা। পরপর দু’বার জিও বা বিজ্ঞপ্তি বেরনোর পরেও শিক্ষকদের গ্রেড পে’ যথাযথ করা হয়নি। হঠাৎই সিনিয়রদের হাজার টাকা বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও চাকরিতে ঢোকা নতুন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতনের সঙ্গে সিনিয়রদের স্কেল কার্যত সমান হয়ে যায়। আন্দোলনকারীরা এই বৈষম্য দূর করার দাবি জানান। এদিন আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য ছিল শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাসভবন। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী খবর পেয়েই তাঁর টালিগঞ্জের বাড়িতে শিক্ষক প্রতিনিধিদের ডেকে নেন। প্রায় হাজার পাঁচেক শিক্ষক তখন বাঘা যতীনের এস সি মল্লিক রোডে বসে পড়েন। স্তব্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করার সবরকম ব্যবস্থা রেখেও পুলিশ অবস্থান তুলতে জোর করেনি। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে এসে প্রতিনিধি পৃথা বিশ্বাস জানান, শিক্ষমন্ত্রী তাঁদের কথা মন দিয়ে শুনেছেন। দেখছি বলেছেন। কিন্তু নির্দিষ্ট করে কোনও আশ্বাস দেননি। কমিশনের সঙ্গে কবে তাঁদের বসানো হবে, তাও নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। ফলে শিক্ষামন্ত্রী যতক্ষণ না নির্দিষ্ট করে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, ততক্ষন পর্যন্ত চলবে অবস্থান বিক্ষোভ। কিন্তু আমজনতার অসুবিধার কথা মাথায় রেখে তাঁরা স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর আসরে নামে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। পার্কের পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ এবং পার্কের দু’পাশে স্লোগান বা বিক্ষোভ স্থানীয় বাসিন্দাদের অসুবিধায় ফেলছে, এই অভিযোগ তুলে তাঁরা আন্দোলনকারীরাদের তোলার চেষ্টা করেন। পুলিশের সামনেই কখনও কখনও তা হুমকির পর্যায়ে পৌঁছয়। শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনড় থাকেন। তাঁদের বক্তব্য, হয় তাঁদের দাবি মেনে শিক্ষামন্ত্রীকে বিবৃতি দিতে হবে, নইলে তাঁরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। পার্ক থেকে বেরনোর প্রশ্নই নেই, পারলে তাঁদের গ্রেফতার করা হোক। শেষে পুলিশের তিনটি ভ্যান এনে অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হওয়া সহকর্মীদের জামিন নিতে কোর্টে যাবেন সহকর্মীরা।
শিক্ষিকাদের প্রতিনিধি নাফিসা জানান, রাজ্যপাল দেখা করতে চেয়েছেন শুনলাম। ডাকলে আমরা দেখা করব। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ান বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, শিক্ষকদের এটা ন্যায্য দাবি, বহুদিনের। বারবার জানানো হয়েছে, তবুও সমাধান করা হয়নি। রাজ্যে কি আদৌ সরকার চলছে না সার্কাস চলছে!

Previous articleব্রেকফাস্ট স্পোর্টস
Next articleজামিন পেলেন সেই হানিপ্রীত