Sunday, November 16, 2025

‘পিতৃহীন’ ওয়ার্ড, ডেঙ্গি আতঙ্ক, শোভনীয় নিদ্রা ভাঙাতে পোস্টারের তোড়জোড়

Date:

Share post:

তিনি উৎ সবে আছেন, পুজোয় আছেন, ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আছেন, আছেন ভাই ফোঁটাতেও। কিন্তু তিনি যে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সেখানে চিহ্নটি পর্যন্ত নেই। এলাকার মানুষ তো তাঁর নাম উঠলেই গাইছেন সেই জনপ্রিয় গানটি, ‘তোমার দেখা নাই রে তোমার দেখা.. ‘

কলকাতার পুর কর্তারা প্রকাশ্যে বলছেন না। জনপ্রতিনিধিরাও মিডিয়ার সামনে মুখ খুলছেন না। কিন্তু অফ দ্য রেকর্ড গল্প করার ঢঙে তাঁরা তাঁদের প্রাক্তন মেয়রের নিজের ওয়ার্ডের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না। বলছেন, তুমি উৎসবে-ব্যসনে রয়েছ, আর যে ওয়ার্ড তোমায় শোভন চট্টোপাধ্যায় বানাল তাকে কেন এমন উপেক্ষা। যে এলাকা কলকাতার ডেঙ্গি উপদ্রুত এলাকার অন্যতম হিসাবে চিহ্নিত! আপনি যদি নাই-ই থাকবেন, তবে পদটাই বা ধরে রেখে মানুষের যন্ত্রণা বাড়াচ্ছেন কেন?

এ তো গেল পুরসভার অন্দরের কথা। আর তাঁর ওয়ার্ডের মানুষ কী বলছেন? বাসিন্দারা ক্ষোভ ঢেকে রাখননি। বলছেন, কাউন্সিলর হয়ে কোনও কাজ করেননি। রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিলে আলাদা কথা। রাজনীতি করার প্রবল ইচ্ছা। এ দল, সে দলে ঝোপ বুঝে কোপ মারছেন। আর ভোটে জিতে ওয়ার্ডের কাজ করতে এতো বীতস্পৃহা কেন? পরিবার বা দলের সঙ্গে যাই হোক, কাউন্সিলর পদ তো ছাড়েননি। তাহলে ডেঙ্গি নিয়ে মানুষের যখন রাতের ঘুম ছুটেছে তখন তিনি গোল পার্কের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে নিশ্চিন্তে ঘুমোন কীভাবে? আর কাব্যে উপেক্ষিতা নারীর মতো নিজের শেষটুকু দিয়ে ওয়ার্ড সামলানোর চেষ্টা করছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। উনি মেয়র, মেয়র পারিষদদের বলে ফাঁকা জমির জঞ্জাল, পুকুর পরিস্কার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বলছেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি কাজ না করলে যা হয় সেটাই হচ্ছে। আমি দলের নির্দেশে চেষ্টা করে যাচ্ছি।

শোভন যখন একদিকে মেয়র, অন্যদিকে চার দফতরের মন্ত্রী, জেলার দায়িত্বে, তখন থেকেই কার্যত উপেক্ষিত তাঁর ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড। যাঁরা তাঁর হয়ে সামাল দিতেন, তাঁরাও আজ নিষ্ক্রিয়। দীর্ঘ উপেক্ষার ফল মিলেছে এবারে। ডেঙ্গি আতঙ্কে কাঁপন ধরেছে মানুষের। শুধু তাই নয়, নিত্য-নৈমিত্তিক প্রয়োজনে কাউন্সিলরের সইয়ের প্রয়োজন হয়, চিঠির প্রয়োজন হয়। ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সে নিয়ে পড়েছেন আরও দুর্বিপাকে। অনোন্যপায় হয়ে তাঁরা পাশের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের শরণাপন্ন হচ্ছেন। অভিজিৎবাবুও বলছেন, ১৩১-এর অবস্থা শোচনীয়। আমার ভয়, ওই ওয়ার্ড থেকে আমার ওয়ার্ডে ডেঙ্গি যে কোনও সময়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে!

তাতেও শোভনীয় নিদ্রায় এতটুকু ব্যাঘাত ঘটেনি। বিরোধীরা তো পোস্টার লেখার তোড়জোড় করছেন। যে পোস্টারে লেখা থাকবে “বারান্দায় রদ্দুর/ আমি আরাম কেদারায় বসে দু’পা নাচাই রে/ গরম চায়ে চুমুক দি… তোমার দেখা নাই…”

spot_img

Related articles

২৪ ঘণ্টা পার: উত্তরপ্রদেশে পাথরখনি ধসে আটকে ১৫ শ্রমিক! মৃত ২

নিয়ম না মেনে খনিতে বিস্ফোরণ ঘটানো। তার জেরে বড় সড় ধস উত্তরপ্রদেশের শোনভদ্রের পাথর খনিতে (stone quarry)। শুক্রবার...

লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণস্থলে সেনা কার্তুজ উদ্ধার! উৎস নিয়ে বাড়ছে ধোঁয়াশা 

দিল্লির লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় (Car blast near Red fort) এবার এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এল। রবিবার...

বিহারে হঠাৎ বাড়ল ৩ লক্ষ ভোটার! কমিশনের তথ্যেই কারচুপি প্রমাণিত

বিহার নির্বাচনে বিজেপির অস্ত্র নির্বাচন কমিশন। বারবার নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলি সেই অভিযোগেই সরব ছিল। বিহারে এসআইআর (Bihar...

বাংলাদেশের জেলে কাকদ্বীপের মৎস্যজীবীর রহস্যমৃত্যু, পরিকল্পনা করে খুন! অভিযোগ পরিবারের

'ভুলবশত' বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক জলসীমা (Bangladesh water border) অতিক্রম করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে ঢুকে পড়েছিল কাকদ্বীপের মৎস্যজীবী। ৩২ বছরের বাবলু...