গত 7 নভেম্বর মৃত্যু হয়েছে সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেনের। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ কোটা শিল্প ও সংস্কৃতি মহল। দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। তবুও তাঁর মৃত্যু যেন আজও কেউ মেনে নিতে পারছেন না। তাই তাঁকে স্মরণ করার উদ্দেশ্যে বাংলা নাট্য অ্যাকাডেমি মঙ্গলবার অ্যাকাডেমির সভাঘরে এক বিশেষ স্মৃতিচারণার আয়োজন করে। যার নাম রাখা হয়, ‘শ্রদ্ধার্ঘ্য নবনীতা দেবসেন’।

এই স্মৃতিচারণার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক জয় গোস্বামী, নাট্যব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্র, কবি শ্রীজাত সহ আরও অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। এদিন প্রথমে নবনীতা দেবসেনের ছবিতে পুষ্পদান করে তাঁর স্মৃতিচারণায় মেতে ওঠেন সকলে। তারপর এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়।


সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেনের কথা বলতে গিয়েই জয় গোস্বামীর গলায় আবেগের সুর নেমে আসে। তিনি বলেন, ‘আমার যখন 22 বা 23 বছর তখন আমি প্রথম নবনীতা দেবসেনকে দেখি। আমি তখন একটি লিটল ম্যাগাজিনে লিখতাম। তিনি হঠাৎ একদিন আমায় বলেন, জয় তোমার কবিতাগুলো খুব সুন্দর। ভাল লিখছো। ওনার মতো একজন নামকরা সাহিত্যিক আমাকে এই কথা বলেছিলেন। এটাই আমার কাছে জীবনের সেরা প্রাপ্তি। ওনার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে 42 বছর আগের এই কথা আমার স্পষ্ট চোখের সামনে ফুটে উঠল। শুধু তাই নয়, পরবর্তীকালে তাঁর সংগঠন সই নিয়ে তাঁর ভাবনা-চিন্তা আমি দেখেছি। সেটাকেও কুর্নিশ জানাতে হয়। ‘ভালোবাসার বারান্দা’ নামে যে লিটল ম্যাগাজিনে আমি দীর্ঘ 12 বছর কাজ করেছি, সেখানে এক বিশেষ কলম লিখতেন নবনীতা দেবসেন। মারণরোগ তাঁর শরীরকে চেপে ধরে। তখন তিনি ‘ভালবাসার বারান্দা’-র জন্য লেখা থামাননি। নবনীতা দেবসেনের লেখনীর ওপর যে ধর্ম পালন করা, আমার কাছে জীবনের সেরা শিক্ষা।’

কবি শ্রীজাত ‘ভালোবাসার বারান্দা’ থেকে একটি কবিতা নবনীতা দেবসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। শুধু তিনি নন, নাট্যব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্রও তাঁর সঙ্গে নবনীতা দেবসেনের ব্যক্তিগত জীবনের কিছু মুহূর্ত সকলের সামনে তুলে ধরেন।


এছাড়া অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা এদিন স্মৃতিচারণা করেন। সব মিলিয়ে যেন সত্যিই ‘ভালবাসার বারান্দা’ল-য় রয়ে গেলেন নবনীতা দেবসেন।
