শুরু হয়েছিল মহারাষ্ট্রে। এরপর ঝাড়খণ্ড। সামনের বছর বিহারে কী হবে কেউ জানে না। বারবার সেই তিরেই বেসামাল পদ্ম। কাকতালীয় হলেও ঘটনা, তির প্রতীকচিহ্ন থাকা দলগুলির কাছেই বারবার নানাভাবে পর্যুদস্ত হতে হচ্ছে বিজেপিকে। তির আর পদ্মের রসায়নটা ঠিক জমছে না। যেখানে তির, সেখানেই মতপার্থক্যের জেরে বিচ্ছেদ, রাজনৈতিক পরাজয় অথবা মতবিরোধের সূত্রপাত। ইদানিং তির আর পদ্মের সম্পর্কে যেন গ্রহণ লেগেছে। আর এই নতুন গেরোতেই দিকে দিকে চৌপাট হচ্ছে বিজেপির রাজ্যপাট!
প্রথমেই ধরা যাক মহারাষ্ট্রের কথা। শিবসেনার প্রতীকচিহ্ন তির। বিধানসভা ভোটে শিবসেনার সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করে সর্বাধিক আসন পেয়েও সরকার গড়তে পারেনি বিজেপি। বসতে হচ্ছে বিরোধী আসনে। আর বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে অনেক কম আসন পেয়েও বিপরীত মেরুর দুই দলের সঙ্গে জোট করে রাজ্য চালাচ্ছে শিবসেনা। সেই তিরের গেরোয় ক্ষমতা পেয়েও ক্ষমতাছাড়া পদ্ম।
এরপর ঝাড়খণ্ড। কোনও সমালোচনায় আমল না দিয়ে, একক শক্তিতে রাজ্য জেতার আত্মবিশ্বাস দেখিয়ে আদিবাসীদের ভাবাবেগকে উপেক্ষা করেছে বিজেপি। পূর্বাভাস অনুমান করে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার মত আদিবাসীকেন্দ্রিক দলের সঙ্গে জোট করার কৌশল নেওয়া উচিত ছিল। উল্টে তাদের আমল না দিয়ে অবিজেপি দলগুলির ঐক্য গড়ে তোলার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। উল্টে বন্ধু দলগুলিও বিজেপির পাশ থেকে সরে গিয়েছে। ভোটে লজ্জার হারের পর বিজেপির হাতছাড়া ঝাড়খণ্ড। ক্ষমতার রাশ যাচ্ছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার হাতে, যাদের প্রতীকচিহ্ন তির।
বাকি রইল জেডিইউ। বিহারে বিধানসভা ভোটের আর দেরি নেই। জেডিইউ নেতা নীতীশকুমার ইতিমধ্যেই এনআরসি ইস্যুতে আপত্তি জানিয়েছেন। ভোট যত এগিয়ে আসবে ততই বদলে যেতে পারে নীতীশের মন। গতবার আরজেডি, কংগ্রেসের সঙ্গে মহাজোট করে ক্ষমতায় এসেছিলেন নীতীশ। হাওয়া বুঝে মহাজোট থেকে বেরিয়ে বিজেপির হাত ধরেছেন। কিন্তু বিজেপির হাওয়া খারাপ বুঝলে ট্র্যাক রেকর্ড অনুযায়ী পদ্মশিবিরের হাত ছাড়তেও সময় নেবেন না জেডিইউ নেতা নীতীশ। মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। ফের যদি তিনি অবিজেপি মহাজোট তৈরি করেন, তাহলে চাপে পড়বে গেরুয়া শিবির। এখানেও যে সেই একই ফাঁড়া! জেডিইউর প্রতীকচিহ্ন তির।