আজ ২৬ জানুয়ারি বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের ৭০ তম সাধারণতন্ত্র দিবস। আসমুদ্র-হিমাচল দিনভর সাড়ম্বরে পালন করবে এই বিশেষ দিনটিকে। রাজধানী দিল্লি থেকে শুরু করে কলকাতার রেড রোড কিংবা অলিতে-গলিতে পাড়ায় পাড়ায় সর্বত্রই পালিত হবে প্রজাতন্ত্র দিবস। কুচকাওয়াজে মেতে উঠবে গোটা দেশ। উত্তোলিত হবে গর্বের তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা।
তবে এই জাতীয় পতাকা উত্তোলনের আগে কয়েকটি বিষয় নজরে রাখা দরকার। ভারতীয় আইনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে। সেগুলি না মানলে জাতীয় পতাকার অবমাননা হয়। জাতীয় পতাকা প্রসঙ্গে ভারতীয় আইনে বেশ কিছু নিদান আছে। পতাকা কেমন হবে এবং পতাকা নিয়ে কী কী করা যাবে না, সে বিষয়েও নির্দেশ রয়েছে।
‘প্রিভেনশন অব ইনসাল্টস টু ন্যাশনাল অনার অ্যাক্ট ১৯৭১ অ্যান্ড ফ্ল্যাগ কোড অব ইন্ডিয়া’র কথা ভারতীয় আইনে বলা আছে। জাতীয় পতাকার রং, তার মাপ, ফ্ল্যাগ পোলের উচ্চতা, এসব নিয়েই সুস্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে সেখানে। ২০০২ সালে এই ফ্ল্যাগ কোড ‘প্রভিশন্স অব এমব্লেম অ্যান্ড নেমস (প্রিভেনশন অব ইনপ্রপার ইউজ) অ্যাক্ট ১৯৫০ অ্যান্ড প্রিভেনশন অব ইনসাল্টস টু ন্যাশনাল অনার (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট ২০০৫’-এর সঙ্গে জুড়ে যায়।
এই ধারার দুটি অংশ রয়েছে। প্রথম অংশে জাতীয় পতাকা কেমন হবে, তার নির্দেশিকা রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, তেরঙ্গা পতাকা তিনটে সমান আয়তক্ষেত্রে বিভক্ত থাকবে। উপরের অংশ গেরুয়া, মাঝের অংশ সাদা এবং নীচের অংশ সবুজ হবে। মাঝের সাদা অংশে গাঢ় নীল রঙের অশোকচক্র, যাতে ২৪টি স্পোক থাকবে। পতাকাটির আয়তন ৩:২ অনুপাতে হতে হবে।
দ্বিতীয় অংশে বলা আছে কী কী করলে জাতীয় পতাকার অবমাননা হবে? কী ভাবে জাতীয় পতাকা ওড়াতে হবে? এই আইনে ভাল এবং পরিষ্কার জায়গায় তা ওড়ানোর কথা বলা হয়েছে। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পতাকা উত্তোলিত থাকবে। গেরুয়া রং উপরের দিকে রাখতে হবে। কোনও ভাবেই অন্য কোনও দেশের বা অন্য কোনও পতাকার থেকে নীচে রাখা যাবে না।
আরও বলা আছে, ছিঁড়ে যাওয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত পতাকা তোলা যাবে না। পতাকা মাটিতে রাখা যাবে না। আগুনে পোড়ানোও নিষিদ্ধ। ঘর সাজানোর কাজেও ব্যবহার করা যাবে না জাতীয় পতাকা। পোশাক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। আইন অনুযায়ী, জাতীয় পতাকার প্রতি কোনওরকম অসম্মান প্রদর্শনই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী তিন বছরের জেল এবং জরিমানা হতেও পারে।