প্রায় এক মাস ধরে CAA- NRC-র প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলছে দিল্লির শাহিন বাগে৷ প্রশাসনের তরফে বেশ কয়েকবারই চেষ্টা করা হয়েছে আন্দোলনকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে। কিন্তু চেষ্টা সফল হয়নি৷ আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কোনও শক্তিই তাদের শাহিন বাগ থেকে নড়াতে পারবে না।
এদিকে, দেশদ্রোহের মামলায় মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়েছে শাহিন বাগ প্রতিবাদের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা তথা JNU-এর গবেষক শরজিল ইমাম’কে। মঙ্গলবার বিহারের জহানাবাদ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খুব শীঘ্রই দিল্লিতে এনে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
শরজিলের গ্রেফতারিতে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে শাহিন বাগ এবং সংলগ্ন এলাকায় ৷
এই উত্তেজক আবহেই বুধবার, 29 জানুয়ারি CAA- NRC-র প্রতিবাদে ভারত বনধ৷ অনেক আগেই এই বনধের ডাক দিয়েছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড৷ এই বনধ সমর্থন করেছে শাহিন বাগ৷ শরজিলের গ্রেফতারির কারনে শাহিন বাগ নেমেছে বনধ চূড়ান্ত সফল করতে৷ এই পরিস্থিতিতেই মঙ্গলবার দিল্লির উপ-রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছে শাহিন বাগের এক নারী প্রতিনিধি দল। উপ-রাজ্যপাল তাঁদের কথা শুনেছেন বলে জানানো হয়েছে। ওই প্রতিনিধি দল জানিয়েছে, বিক্ষোভ চললেও এবার থেকে স্কুল বাস যাতায়াতের পথ করে দেওয়া হবে৷ বুধবারের বনধকে তাঁরা সমর্থন করছেন বলেও ওই প্রতিনিধি দল উপ-রাজ্যপালকে জানিয়ে এসেছে৷
এদিকে শাহিন বাগ আন্দোলন দু’ঘন্টার মধ্যে তুলে দেওয়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত দিল্লি পুলিশ৷ এমনই এক জল্পনা মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে ভাসছে রাজধানীজুড়ে৷ দিল্লি পুলিশ নাকি এখন আদেশের অপেক্ষায় আছে৷ নির্দিষ্ট আদেশ পেলেই 2 ঘণ্টায় খালি করে দেওয়া হবে শাহিন বাগ। অসমর্থিত সূত্রের খবর, কোন অফিসার এই বিশেষ অপারেশন লিড করবে, মোট কতজন জওয়ান থাকবে, দিল্লি পুলিশকে সাহায্য করতে কত সংখ্যক কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনীর থাকবে, সেসবও না’কি নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে।এই অপারেশনে মহিলা পুলিশ কর্মীর সংখ্যা কত হবে, তাও ঠিক হয়েছে। জল কামান, কাঁদানে গ্যাস আর দমকল, সব প্রস্তুতিই না’কি নিয়েছে দিল্লি পুলিশ। এখন শুধুমাত্র নির্দেশের অপেক্ষায়।
খবর, শাহিন বাগ খালি করতে অপারেশনাল রণনীতি বদলাতে পারে পুলিশ। নির্ভর করছে, আন্দোলনকারীদের সংখ্যার উপর৷ তিন থেকে চারটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা
এজেন্সির থেকে তথ্য নিয়ে শেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে৷ আশেপাশের এলাকায় নাগরিকরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে অপারেশনের প্রতিবাদে পথে নামার সম্ভাবনা কতখানি, তাও না’কি
দেখা হচ্ছে৷
তবে দিল্লি নির্বাচনের মুখে এই ধরনের অপারেশনের বিরোধিতা করেছেন কেন্দ্রের শাসক দলের একাংশ৷ এতে নির্বাচনে ব্যুমেরাং হতে পারে বলেই এই অংশের আশঙ্কা৷