তাঁর রাজনৈতিক দক্ষতা প্রশ্নাতীত। কিন্তু বছরখানেক ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে রাজ্য রাজনীতিতে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। জোড়াফুল শিবির ছেড়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে গেরুয়া বসন পড়ছেন বটে, কিন্তু ওটুকুই। পদ্ম শিবিরেও তিনি নিষ্ক্রিয়। রাজনীতি নিয়ে তিনি ঠিক কী ভাবছেন, সেটা তিনিই জানেন। হয়তো আরও কেউ একজন জানেন। তাই পুরো ব্যাপারটাই সব শিবিরের কাছে ধোঁয়াশা।
কখনও শোনা যাচ্ছে মান-অভিমান ভুলে পুরনো দল তৃণমূলে ফিরেছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, শোভন বিজেপিতে সক্রিয় হবেন। কলকাতা পুরভোটের আগে ফের চর্চায় শোভন। সম্প্রতি, শাসক-বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের বেশ কয়েকটি মন্তব্যে জল্পনা বেড়েছে কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকে নিয়ে। আর তাতেই রাজ্য রাজনীতিতে হঠাৎ প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেয়েছেন শোভন!
এবার পুরভোটের আগে দলে শোভনের সক্রিয়তা চাইলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আজ, রবিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি বেহালায় “চায়ে পে চর্চা” কর্মসূচি নিয়েছিলেন। তা শেষ করার পর তিনি বলেন, “প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ফের রাজনীতিতে হোক আমি তাই চাই।
শোভন চ্যাটার্জি এখনও দল ছাড়েন নি। দলও তাঁকে ছেড়ে যেতে বলেনি। শোভনবাবু বিজেপির হয়ে কাজ করুক, আমরা সেটাই চাইছি।”
তবে রাজ্য বিজেপি সভাপতি এটাও স্পষ্ট করেছেন, শোভন চট্টোপাধ্যায় কিংবা তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় পার্টিতে যোগদান করেছেন ঠিকই, কিন্তু বিজেপি পার্টিতে দলের সবার জন্য একই স্ট্যান্ড পয়েন্ট। আর যত বড়ই নেতা হোন না কেন, পার্টির স্ট্যান্ড পয়েন্ট সবাইকে মেনে চলতে হবে। এটাই বিজেপি পার্টির নিয়ম। তিনি আরও জানান,
শোভন চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন ,ব্যক্তিগত জীবনেও কার্যত নিষ্ক্রিয় তিনি। তাঁর একান্ত সক্রিয়তা কামনা করেছেন দিলীপ ঘোষ।
দলের রাজ্য সভাপতির বক্তব্যের পরেই শোভন চ্যাটার্জির দলে সক্রিয়তা চেয়ে মুখ খুললেন রাজ্য বিজেপির সাধারন সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তিনি বলেন, “প্রাক্তন মেয়র এখনও বিজেপি ছাড়েন নি। উনি বিজেপি ছাড়ছেন এমন কথাও কোথাও বলেন নি। ওনার সঙ্গে দলের যোগাযোগ কিছুটা কম। এমনকি আমার সঙ্গেও শোভন চ্যাটার্জির সেভাবে কথা হয়নি। কিন্তু উনি দল ছাড়ছেন সেটা শোভনবাবুও বলেননি। আমরাও বলিনি।”
প্রসঙ্গত, পুরভোটের আগে প্রাক্তন মেয়রকে নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের দড়ি টানাটানি চলছে। চলতি সপ্তাহে শোভন চট্টোপাধ্যায়-এর “বিশেষ” বান্ধবী বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে গিয়ে মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারপরেই বেহালার পূর্বের দায়িত্ব থেকে সরানো হয় শোভন চট্টোপাধ্যায়-এর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতে ফের জল্পনা, তাহলে অভিমান কাটিয়ে তৃণমূলে ফিরছেন শোভন?
