Sunday, November 16, 2025

উড়ান চালু হলেই যাব কলকাতায়, সেখানে একা রয়েছেন আমার মা

Date:

বাপ্পাদিত্য ভট্টাচার্য্য, হায়দরাবাদের বাসিন্দা

এক অচেনা হায়দারাবাদ। কর্মসূত্রে গত কয়েক বছর রয়েছি ইউসুফগুড়ায়। হায়দরাবাদে থাকলেও আমার মন পড়ে আছে কলকাতায়। সেখানে আমার বয়স্ক মা একা রয়েছেন। উড়ান চালু হলেই একবার তাঁকে দেখে আসার ইচ্ছে রয়েছে। আর রয়েছেন আর একজন, যাঁর সঙ্গে 17 এপ্রিল গাঁটছড়া বাঁধার কথা ছিল। কিন্তু এই কঠিন সময় যে তারিখটা পিছোতে হয়েছে।
লকডাউনের শুরু থেকে এখানকার মানুষজন মোটামুটি নিয়ম মেনেই চলছেন। প্রথম সপ্তাহে উপেক্ষার সামান্য প্রবণতা থাকলেও, পুলিশের কড়া ভূমিকায় দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে যে যার ঘরে ঢুকে গিয়েছেন। পুরো হায়দরাবাদে সকাল থেকে দোকান-বাজার খোলা থাকলেও বেলা বাড়লে আস্তে আস্তে ঝাঁপ বন্ধ করেন সবাই। দুপুর থেকেই বন্ধ সবকিছু। শুধু রাস্তায় কয়েকটি গাড়ি আর বাইকের আনাগোনা। সঙ্গে রয়েছে পুলিশ পেট্রলিং।
তবে এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে অসুবিধায় পড়েছেন অন্ধ্র থেকে তেলেঙ্গানায় আসা পড়ুয়া অথবা চাকরিজীবীরা। কোভিড 19-এর ভয় বাড়িওয়ালারা তাঁদের ভাড়াটে এবং পেয়িং গেস্টদের বাড়ি ছেড়ে যেতে বলেন। তার জন্য তাঁদের সময় দেওয়া হয় মাত্র 24 ঘণ্টা। এই পরিস্থিতিতে কোনও রকমে পুলিশের পাশ জোগাড় করে তাঁরা পৌঁছে গিয়েছিলেন অন্ধ্র- তেলেঙ্গানা সীমানায়। কিন্তু অন্ধ্রের প্রশাসন তাঁদের নিজের রাজ্যে ঢুকতে দিতে চায়নি। পাস থাকা সত্বেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাঁদের। 5-6 ঘণ্টা পর দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কথোপকথনে পরিস্থিতি বদলায়। নিজেদের রাজ্যে ফিরে যেতে পারেন তাঁরা। তবে আমরা যাঁরা দূরের রাজ্য থেকে এখানে এসেছি তাঁদের অবশ্য কিছু বলেননি বাড়ির মালিকেরা। তবে এই ঘটনা কানে যেতেই রাজ্যের তরফ থেকে বাড়ির মালিকদের উপর কড়া নির্দেশও এসেছিল।
সমস্যায় পড়েছেন আর শ্রেণির মানুষ- পরিযায়ী শ্রমিকরা। এখানকার আইটি সেক্টরে যাঁরা বহু সংখ্যায় কাজ করেন। এখন তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্রের বেশিরভাগ কাজই হচ্ছে বাড়ি থেকে। সুতরাং দিনমজুরদের কোনও কাজ নেই। এই অবস্থায় ভিন রাজ্যে পড়ে থাকাটা তাঁদের পক্ষে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। সরকারি তরফে তাঁদের মাথাপিছু 12 কেজি করে চাল আর 500 টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতে কদিন? কবে ফিরবে পরিস্থিতি? সেই আশায় চেয়ে রয়েছেন সবাই। তবে এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে থাকাটাই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। আশা রাখছি 21 দিন পরে আমরা আবার স্বাভাবিক ছন্দে জীবনে ফিরতে পারব। তবু চাইব যতদিন না করোনাভাইরাসের করাল থাবা দেশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে, ততদিন বজায় থাকুক সামাজিক দূরত্ব, নিরাপদে থাকি আমরা।

 

Related articles

বাংলাদেশের জেলে কাকদ্বীপের মৎস্যজীবীর রহস্যমৃত্যু, পরিকল্পনা করে খুন! অভিযোগ পরিবারের

'ভুলবশত' বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক জলসীমা (Bangladesh water border) অতিক্রম করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে ঢুকে পড়েছিল কাকদ্বীপের মৎস্যজীবী। ৩২ বছরের বাবলু...

ফের মেট্রো বিভ্রাট, ময়দান থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত আংশিক ব্যাহত পরিষেবা!

রবিবাসরীয় সকালেও মেট্রো ভোগান্তি (Metro Service Interrupted)। সিগন্যালিং রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জেরে এদিন প্রথম মেট্রো থেকেই ব্যাহত হয় পরিষেবা।...

বঙ্গোপসাগরে ফের ঘূর্ণাবর্ত, আগামী সপ্তাহের গোড়াতেই ঊর্ধ্বমুখী পারদ

সকালে শীতের (Winter) অনুভূতি বেলা বাড়লে হালকা গরম, কার্তিক মাসের শেষ লগ্নে এভাবেই হিমেল আবহাওয়া উপভোগ করছে বঙ্গবাসী।...

টাটা সুমো-ডাম্পারের সংঘর্ষ, জম্মু-কাশ্মীরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত ৪ আহত একাধিক

শ্রীনগরের নওগ্রামে বিস্ফোরক থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে যখন শোরগোল পড়ে গেছে ঠিক সেই আবহে ভূস্বর্গে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার...
Exit mobile version