Saturday, May 17, 2025

চিকিৎসক সংগঠনগুলির বিদ্রোহ! প্রয়াত স্বাস্থ্যকর্তাকে করোনার প্রথম শহিদ ডাক্তার ঘোষণার দাবি

Date:

এবার চিকিৎসক সংগঠনগুলির সাঁড়াশি চাপের মধ্যে পড়ে বেকায়দায় রাজ্য সরকার। চিকিৎসক সংগঠনগুলোর দাবি রাজ্যের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা, যিনি সেন্ট্রাল ড্রাগ সেন্টারের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে নোবেল করোনা ভাইরাসের নাম লিখতে হবে। ‘জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টরস’ নামে এই সংগঠনের ছাতার তলায় ৬টি চিকিৎসক সংগঠন রয়েছে। তাঁদের এই দাবি নিয়ে রীতিমত অস্বস্তি স্বাস্থ্যভবনে। মৃত্যুর কারণ নিয়ে এভাবে দাবি জানানো এবং চিকিৎসকদের একরোখা মনোভাবে অশনি সঙ্কেত দেখছে নবান্ন। শুধু তাই নয়, ডাঃ বিপ্লব দাশগুপ্তকে নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাজ্যে প্রথম চিকিৎসক শহিদ হিসেবে ঘোষণার দাবিও তোলা হয়েছে। এই কারণে সোমবার সকাল ১১টা থেকে ২ মিনিট রাজ্যজুড়ে নীরবতা পালন করেন চিকিৎসকরা। রাজ্যজুড়ে করোনার এই আবহাওয়ায় এ এক নতুন সঙ্কট।

গত ১৭এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে ডাক্তার দাশগুপ্তকে প্রথমে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ভর্তি করা হয় সল্টলেকের আমরি হাসপাতালে। সেখানেই শনিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মাস আটেক আগেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এছাড়া তাঁর ছিল সুগার এবং হাইপারটেশন। অসুস্থ হওয়ার কয়েকদিন আগে থেকেই জ্বর, সর্দি সহ নানা উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। বেলেঘাটায় ভর্তি হওয়ার পর তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলে পজেটিভ আসে শনিবার গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়। ইতিমধ্যে রাজ্যে বেশকিছু ডাক্তার-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও তাঁরা স্থিতিশীল।

প্রয়াত চিকিৎসককে নিয়ে মর্মস্পর্শী বয়ান লিখেছেন তাঁর সহযোদ্ধা ডাঃ সমুদ্র সেনগুপ্ত। যা এই মুহূর্তে শুধু ভাইরাল নয়, অনেকেই শেয়ার করে অবস্থান পরিস্কার করেছেন। ডাঃ সেনগুপ্ত লিখেছেন,

“আজ খবর পেলাম চলে গেছেন বিপ্লবদা। আমাদের স্বাস্থ্য প্রশাসক ক্যাডারের প্রথম মৃত্যু। ফ্রন্টলাইনে যে ডাক্তার বন্ধুরা কাজ করছেন তারা যাতে ঠিকমতো সুরক্ষা কবচ পায় তার জন্য বিপ্লবদা শেষ দিন অবধি কাজ করে গেলেন একজন নেহাৎ মাঝারি স্তরের আমলা হিসেবে, যার কোনো বড় মাপের নীতি ঠিক করার ক্ষমতা ছিলনা কেবল নিজের আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করার অভ্যেস ছিল, অভ্যেস ছিল ন্যস্ত দায়িত্ব হাসিমুখে নিঁখুত ভাবে পালন করার। সেই বিপ্লবদা আজ চলেই গেলেন বরাবরের মতো। দূরের জেলা থেকে জুনিয়ার হিসেবে যখন স্বাস্থ্যভবনে যেতাম তখন যে গুটিকয় ঘরে সিনিয়রদের থেকে উষ্ণ আন্তরিকতা ভরা অভ্যর্থনা পেতাম তার মধ্যে একটা ঘর ছিল প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর ঘর আর সেই ঘরে ডেস্কের পেছনে বসা বিপ্লবদা। দু জনে ভিন্ন চিকিৎসক-সংগঠন করলেও দাদা-ভাই এর সম্পর্কে তার ছায়া পড়েনি কোনো দিন। মারা যাওয়ার আগে বড় কষ্ট পেয়ে মারা গেলেন বিপ্লবদা। আজ যেখানেই থাকো ভালো থেকো বিপ্লবদা।

যুদ্ধের মধ্যে সিনিয়র কম্যান্ডার মারা গেলেও শোক পালন করার বিলাসিতা দেখানোর সময় নেই। তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করাই আমার মতো জুনিয়ার কম্যান্ডার এর কাছে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর শ্রেষ্ঠ উপায়। স্যালুট বিপ্লবদা।
ডাঃ বিপ্লব কান্তি দাশগুপ্ত অমর রহে।

Related articles

সেনার বীরত্বকে সম্মান: ত্রিপুরা, অসমেও তৃণমূলের শহিদ তর্পণ

পাকিস্তানের জঙ্গিদের থেকে দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে শহিদ ভারতীয় সেনার (Indian Army) জওয়ান থেকে বিএসএফ (BSF)। পাকিস্তানের...

বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলনের নামে ‘নাটক’! তীব্র কটাক্ষ ফিরহাদ-কুণালের

বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলনের নামে বিশঙ্খলা তৈরি করছেন চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকারা। বিকাশ ভবনের কর্মীদের অফিস থেকে বেরনোর পথ...

বিক্ষোভে খুদে পড়ুয়াদের সামিল করলেন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা! নিন্দা সবমহলে

গল্প বলার আসর-এর নামে খুদে পড়ুয়াদের আন্দোলনে সামিল করলেন বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থানরত চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা (Teacher)। শনিবার, বিকাশ...

মাও-দমনে নিহত রোলো! জওয়ানদের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে ২০০ মৌমাছির কামড়

ছত্তিশগড়ের মাওবাদী দমনে সম্প্রতি ব্যাপক সাফল্যের মুখ দেখেছে সিআরপিএফ (CRPF)। মাওবাদীদের পেতে রাখা আইইডি থেকে নিজেদের নিরাপদ রেখে...
Exit mobile version