Tuesday, May 13, 2025

মৃতদেহ সরানোর লোক নেই, মেডিক্যালের ওয়ার্ড থেকে মর্গে লাশ বইলেন মৃতের ভাই!

Date:

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। গোটা হাসপাতাল জুড়ে নাকি মৃতদেহ সরানোর লোক নেই, অগত্যা ওয়ার্ড থেকে মর্গ পর্যন্ত দাদার লাশ বইলেন ভাই! হাসপাতালের তরফে মৃতের ভাইয়ের হাতে পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (PPE) তুলে দিয়ে বলা হয়, পরিবারের লোককেই লাশ মর্গে নিয়ে যেতে হবে। বাধ্য হয়ে সেটাই করতে হলো মৃতের ভাইকে। ঘটনা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি ব্লকে।

দমদম চিড়িয়ামোড়ের বাসিন্দা পেশায় মালবাহক বছর ছত্রিশের হজরত জাহানকে গত ৫ মে দুপুরে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকে ভর্তি করা হয়। ওই বিল্ডিংটি সন্দেহভাজন কোভিড রোগীদের আইসোলেশন ওয়ার্ড-এর জন্য বরাদ্দ। কোভিড-১৯ আইসোলেশন ওয়ার্ড হওয়ায়, ভর্তির পর দাদার সঙ্গে আর দেখাও করতে পারেননি ভাই মহম্মদ রাজা।

সংবাদমাধ্যমকে মহম্মদ রাজা জানান, তাঁর দাদা সুগারের রোগী। হঠাৎ সুগার বেড়ে যায়। সঙ্গে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকা তাঁকে তড়িঘড়ি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হয়। এবং তাঁকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় হজরত জাহানের।

হাসপাতাল থেকে দাদার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই মহম্মদ রাজা ছুটে চলে আসেন সেখানে। এরপরের অভিজ্ঞতা আরও তিক্ত। রাজার ভয়ঙ্কর অভিযোগ করে বলেন, “হাসপাতাল থেকে একজন একটি PPE দেয়। তারপর আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় দোতলার ওয়ার্ডে, যেখানে দাদা ভর্তি ছিল। সেখানে মেঝের উপর পড়ে থাকতে দেখি দাদার নিথর দেহ। গোটা ওয়ার্ড তখন ফাঁকা। হাসপাতালের কোনও কর্মীরা নেই। একমাত্র আমাকে যিনি দোতলায় নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি আমাকেই দাদার দেহ নিয়ে মর্গে যেতে বলেন। এরপর আমি নিজেই ট্রলিতে চাপিয়ে দেহ নিয়ে যাই মর্গে।”

এখানেও শেষ নয়। মৃতের ভাইয়ের আরও অভিযোগ, ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করার পরেও দাদার মৃতদেহ হাতে পাইনি সে। রবিবার (১০ মে) সন্ধে পর্যন্ত সুপারের অফিসে একের পর এক দরবার করেও লাভ হয়নি। হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে।

ঘটনার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ওয়ার্ড থেকে মর্গে লাশ নিয়ে আসার ব্যাপারে মৃতের ভাইয়ের যে অভিযোগ, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরপর ওই আধিকারিক জানান, করোনা সংক্রমণের জন্য বর্তমানে হাসপাতালের যা পরিস্থিতি, তাতে আতঙ্কে চতুর্থ শ্রেণির
চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের অনেকেই কাজেই যোগ দিচ্ছেন না। ফলে লাশ সরানোর ক্ষেত্রে একটা সমস্যা তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

এই ঘটনায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারের বক্তব্য , “লাশ সরানোর বিষয়টি নিয়ে আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। অভিযোগ এলেই তো আর হলো না, দেখতে হবে ঠিক কী ঘটেছে। তবে যেহেতু ওই ব্যক্তি করোনা সন্দেহভাজন ছিলেন এবং রিপোর্ট আসার আগেই তিনি মারা যান, তাই এক্ষেত্রে কোভিড টেস্টের রিপোর্ট হাতে আসার পরই, তা দেখে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”

এদিকে হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃত ব্যক্তির কোভিড-১৯ রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এবং তাঁর পরিবারের হাতে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয়েছে।

দেখুন ভিডিও…

Related articles

সন্ত্রাসবাদ রোখার সময় শান্তি চেয়ে পথে! বাম মিছিলে ইন্দিরা-স্তূতি

গোটা দেশ একজোট হয়ে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থনের পথে গিয়েছে সিপিআইএম (CPIM) কেন্দ্রীয়...

আন্টি ও মনে হয় আর নেই: আকুল হয়ে রিঙ্কুকে ফোন করেন প্রীতমের বান্ধবী

যে ফোনটি পেয়ে উদভ্রান্তের মতো ছুটে গিয়েছিলেন সৃঞ্জয় দাশগুপ্তর মা রিঙ্কু মজুমদার, সেটি করেছিলেন তাঁর বান্ধবী। ফোনে তিনি...

রাজ্যের পরিবহনে নতুন দিশা! à§§ কোটিরও বেশি যাত্রা সম্পূর্ণ ‘যাত্রী সাথী’র  

রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তৈরি হওয়া অ্যাপ-নির্ভর ক্যাব পরিষেবা ‘যাত্রী সাথী’ ইতিমধ্যেই ১ কোটিরও বেশি সফল যাত্রা সম্পূর্ণ করেছে।...

রেকর্ড রূপান্তরকামীদের! সিবিএসই দশম-দ্বাদশের ফল প্রকাশ, এগিয়ে মেয়েরাই 

একইসঙ্গে প্রকাশিত হল সিবিএসই দশম ও দ্বাদশের ফল। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৩৯ দিনের মাথায় প্রকাশিত হল সেন্ট্রাল বোর্ড...
Exit mobile version