আজ, বুধবার কলকাতায় আছড়ে পড়ার কথা সুপার সাইক্লোনের। এর জেরে বিশাল ক্ষতির আশঙ্কা করছে কলকাতা পুরসভা এবং পুলিশ৷ সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে কলকাতা নিরাপদে রাখতে মরিয়া প্রশাসন৷

পুর ও পুলিশকর্তাদের ভাবাচ্ছে, গাছ উপড়ে যাওয়ার বিষয়টি৷
শিকড় আলগা থাকায় ফুটপাতের বহু গাছ আজ ঝড়ে উপড়ে যেতে পারে।
ভেঙে পড়া গাছ দ্রুত কী ভাবে সরানো যায় তা নিয়ে পুলিশ ও পুরসভার মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
২০০৯ সালের আয়লায়
ঘণ্টায় ‘মাত্র’ ৭০ কিমি বেগে আসা ঘূর্ণিঝড় তছনছ হয়েছিল কলকাতা। ভেঙে পড়েছিল হাজারখানেক গাছ। ২০২০ সালের সুপার সাইক্লোনের ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ যার ক্ষয়ক্ষতি ঘিরে চিন্তায় পুলিশ ও পুর প্রশাসন। একাধিক বিশেষ ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে৷

◾লালবাজার, পুরভবন এবং কলকাতা পুলিশের প্রতিটি ডিভিশনেই খোলা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার বিশেষ কন্ট্রোল রুম।

◾দুর্ঘটনার আশঙ্কায় নামিয়ে দেওয়া হয়েছে হাইমাস্ট আলোর বাতিস্তম্ভগুলিও।

◾বৃষ্টির জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় সমস্ত ত্রিফলা আলোও নিভিয়ে দেওয়া হয়েছে।

◾ত্রিফলার বিদ্যুৎসংযোগ নেওয়া হয় ফিডার বক্স থেকে। সেখানে জলে তড়িদাহত হওয়ার আশঙ্কায় ফিডার বক্সের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।

◾জল জমার সমস্যা আছে এমন এলাকার বেশ কিছু রাস্তার তালিকা সিইএসসি-কে দেওয়া আছে। ওই সব রাস্তায় ফিডার বক্সে জল ঢোকার আগেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে বলা হয়েছে৷

◾মধ্য ও উত্তর কলকাতার বিপজ্জনক বাড়িগুলির অনেক বাসিন্দাকে সরানো হয়েছে। অনেককে সরে যেতে বলা হচ্ছে। এ নিয়ে মাইকে প্রচারও করেছে প্রশাসন। তবে অনেকে সরে যেতে রাজি হচ্ছেন না৷

◾উঁচুতে থাকা ফ্লেক্স, হোর্ডিং নামানোর কাজ চলছে।

◾স্বয়ংক্রিয় মই, ক্রেন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

◾প্রতিটি বরোয় দু`টি করে র্যাপিড অ্যাকশন টিম ছাড়াও একটি করে বিশেষ দল তৈরি থাকবে। প্রয়োজন মতো তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ কেটে ফেলবে।
◾প্রস্তুত জঞ্জাল অপসারণ দফতরের কর্মীরাও।
◾ঝড়ের মোকাবিলায় আজ, বুধবার সারা রাতই পুর ভবনে থাকবেন পুর কর্তারা।
◾ইতিমধ্যেই কলকাতার ১৬টি বরোয় ২৪ ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
◾বিপর্যয়ের মোকাবিলায় প্রতিটি থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মীদের বুধবার এবং বৃহস্পতিবার অফিসে থাকতে বলেছে লালবাজার৷
◾প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডেই দু’-চারটি দল থাকবে গাছ কেটে যান চলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য।
◾দ্রুত উদ্ধারকাজের জন্য পুলিশ ট্রেনিং স্কুল ছাড়াও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৯ টি বিশেষ দলকে কলকাতা পুলিশের ৯ টি ডিভিশনে রাখা হবে।
◾প্রতিটি ডিভিশনে অতিরিক্ত ৩৫ জনের একটি বাহিনীও প্রস্তুত থাকবে।
◾বলা হয়েছে, ঝড়ের সময়ে রাস্তায় থাকা পুর ও পুলিশকর্মীরা কেউ যেন গাছের তলায় না থাকেন।
◾ঝড়ের পরে দুর্গতদের জন্য স্কুল কিংবা কলেজে আশ্রয় শিবির তৈরির পরিকল্পনাও করা হয়েছে।
◾আয়লার কারনে পুলিশের নিজস্ব যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ বার বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে মোবাইল ঠিক রাখতে বলা হয়েছে।
◾গঙ্গায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কায় পার্শ্ববর্তী বস্তির বাসিন্দাদেরও অন্যত্র সরানোর পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন।
◾ওদিকে শহরবাসীকে বাইরে না-বেরোনোর অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।