Monday, May 12, 2025

সুপর্ণা দে : করোনা সারা বিশ্বে অতিমারির চেহারা নিলেও এই ভাইরাসের সব কিছুই যে ‘খারাপ’, এমন নয়৷ প্রোডাক্টিভ একটা দিকও দেখা যাচ্ছে৷

করোনা-কারনে বাংলা ভাষায় গটগট করে ঢুকে পড়েছে নতুন কিছু শব্দ৷ এবং এটা নিশ্চিত আগামী বাংলা সাহিত্যেও পা রাখবে এই শব্দগুলি৷

কিছুদিন আগেও অনেকেই অভ্যস্ত ছিলাম না কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন, স্যানিটাইজার, মাস্ক, কো-মরবিডিটি, কন্টেনমেন্ট ইত্যাদি একাধিক শব্দে৷ এখন আমরা বেশ সড়গড়৷ এসব শব্দের ব্যবহার করাও শুরু হয়েছে নানা ক্ষেত্রেই৷ হয়তো বাংলা ভাষার অঙ্গও হয়ে যাবে কিছুদিনের মধ্যে à§· আবার এই সব খটোমটো ইংরেজি শব্দের বাংলাও করে নিয়েছন অনেকে নিজেদের মতো করে৷ যেমন কোয়ারেন্টাইনকে কেউ কেউ ‘নিভৃতাবাস’ বলছেন৷

দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষই নিরাপদ থাকতে নিজেদের ঘরবন্দি রেখেছেন। কেউ রয়েছেন ‘কোয়ারেন্টাইনে’, আবার কেউ ‘আইসোলেশনে’। কিন্তু কী এই কোয়ারেন্টাইন? কীই বা আইসোলেশন? কেনই বা ১৪ দিন থাকতে হয় কোয়ারেন্টাইনে? আর এই কোয়ারেন্টাইন শব্দটি বা এল কোথা থেকে? প্রশ্ন যখন রয়েছে,তখন এর উত্তরও রয়েছে অবশ্যই।

◾কোয়ারেন্টাইন শব্দটি কীভাবে এলো?

ইউরোপে ১৪ শতকে ব্ল্যাক ডেথ প্রায় মহামারির আকার ধারণ করে। সেই সময় ভেনিস সরকার একটি নিয়ম জারি করে। তা হল, বন্দরে কোনও জাহাজ আসার পর যাত্রী নামানোর আগে সেটাকে সমুদ্রে ৪০ দিন নোঙর করে রাখতে হবে। এই ৪০ সংখ্যাটিকে ইতালির ভাষায় ‘কোয়ারানতা’ বলা হয়। এই অপেক্ষার সময়টিকে তারা বলতো কোয়ারান-তিনো। আর তা থেকেই এসেছে কোয়ারেন্টাইন।

◾কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন কী?

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আপাততভাবে সু্স্থ হওয়া মানুষের কোয়ারেন্টাইন। যেমন, যেসব ব্যক্তিকে দেখে সুস্থ মনে হয়, কিন্তু সে সুস্থ হতে আবার নাও পারে। তার মধ্যে হয়তো জীবাণু আছে কিন্তু রোগের কোনও উপসর্গ নেই। এমন ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।

আইসোলেশন হচ্ছে, কোনও মানুষের মধ্যে যখন জীবাণুর উপস্থিতি ধরা পড়বে বা ধরা না পড়লেও তার মধ্যে উপসর্গ থাকবে তখন তাকে আলাদা করে যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে তাকে বলা হয় আইসোলেশন।

অর্থাৎ, আইসোলেশন অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য আর কোয়ারেন্টাইন সুস্থ বা আপাত সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য।

তবে গোটা পৃথিবীতে কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনের এই সংজ্ঞা এক নাও হতে পারে।

◾কেন ১৪ দিন থাকতে হয় কোয়ারেন্টাইনে?

যে রোগের জন্য কোয়ারন্টাইন বা আইসোলেশনে রাখা হয় সেই রোগের জীবাণুর সুপ্তকাল কত দিন তার উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ওই রোগের জন্য মানুষকে কতদিন কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে রাখা হবে।

কোভিডের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসটির সুপ্তকাল ১৪ দিন। অর্থাৎ ১৪ দিন পর্যন্ত কেউ কোয়ারেন্টাইনে থাকলে যদি তার শরীরে জীবাণু থাকে তাহলে এই সময়কালের মধ্যে তার উপসর্গ দেখা দেবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোয়ারেন্টাইনে রাখা অবস্থায় যদি কারো উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে তাকে আইসোলেশনে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আইসোলেশনে কতদিন রাখা হবে তার কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। যতদিন না রোগী পুরোপুরি সেরে উঠছেন ততদিন পর্যন্ত তাকে আইসোলেশনেই থাকতে হবে।

এতো গেলো কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশন কী বা কেন ? এটাও মাথায় রাখা দরকার এই শব্দগুলির অর্থ এখন সবাই জানেন৷ প্রয়োগও করছেন৷ এক্ষেত্রে সাক্ষর-নিরক্ষরে ভেদ নেই৷ করোনার ‘ভালো’ দিক তো এটাই !

Related articles

অসমের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৫টি আসনে জয় তৃণমূলের, অভিনন্দন অভিষেকের

অসমের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাফল্য তৃণমূল কংগ্রেসের। বিজেপি শাসিত অসমে শক্তি বাড়াচ্ছে ঘাসফুল শিবির। অসমে ৫টি পঞ্চায়েত আসনে জয়ী...

সন্ত্রাস ও বাণিজ্য একইসঙ্গে চলতে পারে না: পাকিস্তানকে স্পষ্ট বার্তা প্রধানমন্ত্রীর

সন্ত্রাস-বাণিজ্য যেমন কখনও একসঙ্গে চলতে পারে না তেমনই রক্ত আর জল কখনও একসঙ্গে বইতে পারে না। পাকিস্তানকে স্পষ্ট...

তিরঙ্গা হাতে ভোটের খোঁজে: অপারেশন প্রচার শুরু বিজেপির 

ভোটের ময়দানে নতুন কৌশল নিয়ে নামছে বিজেপি। আগামী ১৩ মে থেকে শুরু হচ্ছে অভিনব প্রচার অভিযান — ‘তিরঙ্গা...

জঙ্গি ও মদতদাতাদের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিন্দুর’ জারি থাকবে: কড়া বার্তা মোদির

৮ও ৯ মে ভারতে হামলা চালানোর অপচেষ্টা হয়েছিল। তার মোক্ষম জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেই কারণেই দশ তারিখ...
Exit mobile version