*ভারতীয় সেনাদের হত্যা করতেই গালওয়ানে আসে লাল ফৌজ, চাঞ্চল্যকর তথ্য*

চাঞ্চল্যকর তথ্য, মর্মান্তিকও৷

“গত ১৫ জুনের গালওয়ান-সংঘর্ষে নিহত ২০ জন জওয়ানের মধ্যে ১৫ জনের মাথায় ভোঁতা অস্ত্রের প্রাণঘাতী আঘাতের চিহ্ন ছিলো। এর অর্থ, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার না করলেও চিনা সেনারা খুন করতেই সেদিন হামলা চালিয়েছিলো। ভারতীয় সেনাদের হত্যা করার লক্ষ্যে এই হামলা, কিছুতেই পরিকল্পনা ছাড়া হতে পারে না৷ চিনের এই মানসিকতা সীমান্তে শান্তি ফেরানোর পরিপন্থী৷”
দীর্ঘ আলোচনার পর এমনই মতপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রের CSG বা ‘চায়না স্টাডি গ্রুপ’-এর চেয়ারম্যান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল৷

চিনের বিষয়ে ভারতের নীতি ও কৌশলগত অবস্থান স্থির করতে এই CSG-র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অজিত ডোভালের নেতৃত্বে গঠিত এই হাই-পাওয়ার গ্রুপে রয়েছেন সেনাপ্রধান, স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ক্যাবিনেট সচিব এবং IB বা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান। ১৯৯৭ সালে CSG গঠন করা হয়েছিলো৷

সূত্রের খবর, শনিবার রাতে ‘চায়না স্টাডি গ্রুপ’ জরুরি বৈঠকে বসে৷ আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পেশ করা হয় এই বৈঠকে৷ বলা হয়েছে, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক৷ দৌলত বেগ ওল্ডি বায়ুসেনা ঘাঁটির দক্ষিণে দেপসাং উপত্যকায় LAC পেরিয়ে প্রায় ২ কিমি ঢুকে এসেছে লাল ফৌজ৷ চিনা সেনা ‘ওয়াই-জংশনে’ ঘাঁটি বানিয়েছে৷ উদ্বেগের বিষয় শুধু এই কারনেই ভারতীয় সেনা পেট্রোলিং পয়েণ্ট ১০ এবং ১৩-তে যেতেই পারছে না৷

লাদাখের LAC বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা জুড়ে চিনা ফৌজের তৎপরতা হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনার পর এই প্রথম আলোচনায় বসেন অজিত ডোভাল ও অন্যেরা৷ গত ২২ জুন কোর-কমান্ডার স্তরের বৈঠকে সেনা সংখ্যা কমানো এবং ‘মুখোমুখি’ অবস্থান থেকে পিছিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছিলো৷ কিন্তু তা উপেক্ষা করছে লাল ফৌজ। এই পরিস্থিতিতে দেশের এবং সেনাবাহিনীর
কোন পথ নেওয়া উচিত, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই বৈঠক করেছে কেন্দ্রের ‘চায়না স্টাডি গ্রুপ’৷

প্রাক্তন সেনাপ্রধান তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ গালওয়ান কাণ্ডের এক নতুন ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘গত ৬ জুন কোর কমান্ডার স্তরের প্রথম বৈঠকে স্থির হয়েছিল দু’পক্ষই LAC বরাবর মুখোমুখি অবস্থান থেকে কিছুটা পিছিয়ে আসবে। ছাউনিও সরিয়ে নেবে। কিন্তু কর্নেল সন্তোষ বাবুর নেতৃত্বে বিহার রেজিমেন্টের সেনারা ১৫ জুন রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান, একাধিক চিনা ছাউনি তখনও PP-১৪ বা পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪-র কাছে বহাল তবিয়তে রয়েছে। আছে বেশ কিছু চিনা সেনা। কর্নেল সন্তোষ বাবুর নির্দেশে ভারতীয় জওয়ানেরা ছাউনিগুলি সরানোর চেষ্টা করেন। সে সময় হঠাৎ একটি ছাউনিতে আগুন ধরে যায়। এর পরেই সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়।’’

CSG- বৈঠকে জানানো হয়েছে, ওই সংঘর্ষস্থলের একটু দূরে গালওয়ান নদীর তীরে চিনা ছাউনির সংখ্যা গত এক সপ্তাহে বহুগুণ বেড়েছে৷ এ ব্যাপারে বিভিন্ন উপগ্রহ চিত্র পেশ করা হয় বৈঠকে৷ গোগরার হট স্প্রিং এলাকা এবং প্যাংগং লেকের উত্তরে ফিঙ্গার পয়েন্ট ৮ থেকে ৪ পর্যন্ত নতুন কংক্রিটের বাঙ্কার গড়ে সেখানে ঢুকে বসে আছে চিন সেনা।

Previous articleসকালের পরে দুপুরে ফের পাহাড়ে ধস
Next articleপেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে টাকি রোড অবরোধ বাম-কংগ্রেসের