রেফার চক্রে পড়ে মৃত্যু হয় ইছাপুরের ১৮ বছরের তরুণ শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের। গত শনিবার প্রবল শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে চার চারটি হাসপাতালে ঘোরেন তার বাবা-মা। করোনা সন্দেহে পরপর ৪ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল ফিরিয়ে দেয় ওই তরুণকে। বহু হয়রানির পর মেডিক্যাল কলেজ ভর্তি নিলেও শেষ পর্য়ন্ত বাঁচানো যায়নি ।

এই তরুণের মৃত্যুর প্রতিবাদে এবার একগুচ্ছ ক্ষোভ উগড়ে দিল মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র সংগঠন MCDSA (মেডিক্যাল কলেজ ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন)।

স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে রাজ্যের অবহেলার অভিযোগ তুলে আনে মেডিক্যাল কলেজের এই ছাত্র সংগঠন। তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তারা স্বাস্থ্যক্ষেত্রের উন্নয়নের কয়েকটি দাবি জানিয়েছে।

দাবিগুলি হল,

১. অতি দ্রুত সরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তি ও রেফারেলের প্রক্রিয়ার জটিলতা হ্রাস করতে হবে। অবিলম্বে সরকারি নির্দেশিকা জারি করে, প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ কমিটির মনিটরিং এ রোগীদের উপসর্গ, শারীরিক অবস্থা বিচার করে যে হাসপাতালে যে রোগীর চিকিৎসা হওয়া উচিত তা যাতে হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

২. অতি দ্রুত জেলাস্তর থেকে শুরু করে ত্রিস্তরীয় বিন্যাসে স্তর ভাগ করে প্রতিটি হাসপাতালে যথাযথ প্রটোকল মেনে ডেডিকেটেড কোভিড ব্লক এর ব্যবস্থা করতে হবে যাতে কোভিড রুগীদের চিকিৎসার জন্য এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল ছুটতে না হয়। নির্দিষ্ট সেগ্রিগেশনের নিয়ম মেনে কোভিড ও নন-কোভিড রুগীর চিকিৎসা শুরু করতে হবে প্রত্যেক স্তরে।

৩. রোগী ভর্তিকে কেন্দ্র করে নেতা-মন্ত্রীদের অনধিকার চর্চা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। অকারণে কোনও রোগীকে স্রেফ খুঁটির জোরে ভর্তি করা চলবে না।

৪. সরকারি ওয়েবসাইট এবং প্রচার মাধ্যমে তথ্য সম্প্রচারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে হবে। সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পরিকাঠামোর কথা ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বলে জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা যাবে না।

৫. অবিলম্বে মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সি চালু করতে হবে। এভাবে জরুরি বিভাগ বন্ধ করে রোগীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া যাবে না। এবং অবশ্যই, ইমার্জেন্সি পরিকাঠামোর উন্নতি করতে হবে।

৬. সংবাদমাধ্যমের মতে প্রয়াত রোগীর কোভিড টেস্টের পরিস্থিতি বেশ সন্দেহজনক। অবিলম্বে স্বাস্থ্য দফতরকে সকল কোভিড পরীক্ষার নির্ভরযোগ্যতা সুনিশ্চিত করতে হবে। শুধু তাই নয়, পরীক্ষার ও পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ও জনসাধারণের স্বাস্থ্যের অধিকারের জন্য MCDSA চিরকাল লড়ে এসেছে। সেই লড়াই এখনো জারি থাকবে।

এই দাবিগুলি না মানা হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাওয়ার কথা বলে তারা।