Saturday, November 22, 2025

মুকুল চ্যাপ্টার ক্লোজড করেও স্বস্তি নেই, দিল্লিতে উত্তপ্ত বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠক

Date:

Share post:

অনেক জল্পনা-কল্পনার মধ্যে দিয়ে বিজেপিতে মুকুল রায় চ্যাপ্টার আপাতত ক্লোজড। তাঁর “বিজেপিতে ছিলাম-আছি-থাকবো”, এখন হিমঘরে। ২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেওয়ার কয়েক ঘন্টা আগেও মুকুলবাবু মিডিয়ার সামনে এই একই কথা আউড়ে ছিলেন। তখনও বলেছিলেন, “তৃণমূলে ছিলাম-আছি-থাকবো”! সুতরাং, রাজনৈতিক মহলে তাঁর এই দ্বিচারিতাকে কেউই বিশেষ পাত্তা দিচ্ছেন না। যেমন তাঁর পুত্র শুভ্রাংশু রায় বিজেপি যোগ দেওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত বলেছিলেন, “জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনে রাজনীতি ছেড়ে দেবো, কিন্তু অন্য কোনও দলে যোগ দেব না।” বাবা-ছেলের সেই দ্বিচারিতার স্মৃতি এখনও রাজ্য রাজনৈতিক মহলে টাটকা। খুব স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য রাজনীতিতে পিতা-পুত্রের গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট হয়েছে। এ নিয়ে কেউই আর বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন না।

তবে এরই মাঝে দিল্লিতে রাজ্যের নির্বাচনী কৌশলী বৈঠক নিয়ে ফের বিজেপির অন্তর্কলহ প্রকাশ্যে এলো। সংশ্লিষ্ট মহল থেকে পাওয়া একাধিক সূত্র বলছে, রাজধানী শহরে বঙ্গ বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ ওই বৈঠকে একাধিক নেতা দলের মধ্যেকার কলহের অভিযোগ তুলে নাকি ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন দিল্লির জাতীয় নেতাদের সামনে। শুধু তাই নয়, বাংলায় বিভিন্ন উপনির্বাচন-সহ স্থানীয় ভোটে বিজেপির খারাপ ফলের পেছনে দলের অন্তদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেন। এ নিয়ে বিজেপি নেতাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় বলেও খবর মিলছে বিভিন্ন সূত্র মারফৎ।

এদিকে আজ, মঙ্গলবার দিল্লির বৈঠক শেষে শহরে ফেরেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দমদম বিমান বন্দরে দিল্লির বৈঠক নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি বলেন, দলের অভ্যন্তরীণ একাধিক বিষয় নিয়ে বৈঠক ছিল। সাংগঠনিক বিষয়ের ওপরে ১৪০টি বিধানসভা ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অগাস্ট-এ পরের রাউন্ডে বাকিটা আলোচনা ও বিশ্লেষণ হবে। এরপর রিভিউ মিটিং হবে।

শহরে ফিরে রাজ্য বিজেপির আরেক শীর্ষ নেতা জানান, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে তাঁরা ১৪০টি আসন নিয়ে আলোচনা করেছেন দিল্লির নেতাদের সঙ্গে। বাকি আসনের আলোচনা আগামী মাসের ১১ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত হবে। আসনের বিচারে যা অর্ধেকেরও কম। তা নিয়েই যদি সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হিমশিম খেতে হয় বঙ্গ বিজেপিকে, তাহলে আগামীর পর্যালোচনায় যে তাঁরা ডাহা ফেল করবেন, তা অনুমান করার জন্য কোনও রাজনৈতিক বোদ্ধা হওয়ার প্রয়োজন হয় না।

তবে বঙ্গ বিজেপির ম্যানেজাররা কলকাতায় ফিরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে যাই বলুন না কেন, তাঁদের শরীরী ভাষায় স্পষ্ট হয়েছে আত্মবিশ্বাসের অভাব। একইসঙ্গে দিল্লির বৈঠকে দলীয় কোন্দলের কথা চাপা দেওয়ার একটা প্রবল প্রচেষ্টা লক্ষণীয় ছিল তাঁদের মধ্যে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

spot_img

Related articles

স্বরাষ্ট্র দফতর বিজেপির হাতে! ‘স্বরাষ্ট্রহীন নীতীশ’ কি বিহারের ‘নিধিরাম’ মুখ্যমন্ত্রী?

বিহারের মন্ত্রিসভা গঠনের পর দফতর বণ্টন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা। দশম বারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের...

এসআইআরের সেরা কর্মীদের বিশেষ সম্মাননা, তৎপরতা বাড়াতে উদ্যোগ কমিশনের

এসআইআর-এর এনুমারেশন প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক দক্ষতা দেখানো বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও) পুরস্কৃত করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের...

এসআইআর কাজে বিএলওদের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে! জেলাশাসকদের নির্দেশ মুখ্যসচিবের

রাজ্যের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী বা এসআইআর-এর কাজ যাতে নির্বিঘ্নে এগোয়, সেই নির্দেশ ফের স্পষ্ট করল নবান্ন।...

রুক্মিনীর উপস্থিতিতে গোয়ার চলচ্চিত্র উৎসবে ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’-র প্রথম স্ক্রিনিং

ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়া অর্থাৎ গোয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রথম স্ক্রিনিং হল চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী ও রুক্মিণী মৈত্র (Rukhmini...