Saturday, November 8, 2025
কুণাল ঘোষ

শুভ জন্মদিন “সংবাদ প্রতিদিন”।

সেই কবে যাত্রাশুরু।
প্রথম দিনের প্রথম পাতা। লিড, বাঁদিকের কলম, অ্যাঙ্কার অনুবাদ, সিঙ্গল কলম খবর- সবই আমার লেখা। পাতাটাতে তাকালেই রোমাঞ্চের অনুভূতি।

নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। ট্রেনি জার্নালিস্ট দিয়ে শুরু। তারপর এগারোটি ধাপ স্পর্শ করে পারফর্ম করে প্রমোশন পেয়ে কার্যনির্বাহী সম্পাদকে শেষ। বাংলা সাংবাদিকতায় একই হাউসে সিঁড়ির নিচ থেকে উপর ওঠার এতটা নমুনা আর দ্বিতীয়টি আছে কিনা জানি না।

এরমধ্যে “প্রতিদিন” ছেড়েছি। আবার ফিরেছি। তিনবার ( এখনও পর্যন্ত !! 😉)।

যে সময়টা কাগজের প্রচার, প্রভাব ও সার্বিকতায় ঝড় তোলা অভিযান, সেই সময়টা মাথার উপর সৃঞ্জয় বোস আর সঙ্গে সহকর্মী অভিজিৎ ঘোষসহ টিমের কর্মযজ্ঞ; তাতে আমি কাজ করে তৃপ্ত, সমৃদ্ধ। সেসব অপূর্ব স্মৃতি। কাগজেরও সেরা সময়।

তারপর নানা ঘাত-প্রতিঘাত। দূরত্ব। তবে জীবন থেমে থাকে না। জীবন অনিঃশেষ, প্রবহমান এবং সলিল চৌধুরির ” ছন্দে ছন্দে রং বদলানোর” শ্লোগানে প্রতিধ্বনিত।

আনন্দবাজার পড়াটা শৈশবের অভ্যেস। আছে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের বাইলাইন এবং চেক প্রাপ্তিও আনন্দবাজার থেকে। আজকাল আমার প্রবল পছন্দের ছিল। সেখানেও তিনবার কাজ করেছি। উত্তরবঙ্গ সংবাদ গোষ্ঠী সাংবাদিক কুণালের জন্মদাতা ও প্রশিক্ষক।

কিন্তু, জড়িত থাকি বা না থাকি, ” প্রতিদিন” যেন রক্তে মিশে। রাতদিন কাজ, নতুন মুখ তৈরি এবং জায়গা দেওয়া (মানুক বা নাই মানুক, এই কুণাল ঘোষ না থাকলে অনেক বাঘছাল পরা বিড়ালের বা শৃগালের ইতিহাস অন্যরকম হত); নতুন খবর ও বৈচিত্রে অন্য কাগজকে টেক্কা দেওয়া- এসব ছিল নেশার মত।

টোডিসাহেবের উদ্যোগে কাগজের জন্ম। তারপর টুটুদা হাল ধরলেন এবং কাগজ প্রতিষ্ঠিত নাম হল।
তবে যে সময়টা আসল ওজন, তখন নেতৃত্বে সৃঞ্জয়। আমিও বড় দায়িত্বে।

2011। সম্পাদকীয় নীতি আপনার পছন্দ হতে পারে। নাও হতে পারে। কিন্তু আমরা একটি কাগজকে রাজ্য রাজনীতির ঐতিহাসিক পালাবদলের কেন্দ্রবিন্দু করতে পেরেছিলাম। সেটা তো মানবেন।
আর রাজনীতির বাইরে স্পেশাল স্টোরিতেও প্রতিদিন তখন একনম্বর।

সৃঞ্জয় এবং আমার সম্পর্ক মালিক কর্মচারীর তো বটেই; কিন্তু সেটা বন্ধুর মত হয়ে গিয়েছিল। আমাদের বহু দুরন্ত স্মৃতি আছে। কিন্তু এই জুটিটা অনেকের সহ্য হয়নি। কিছু ফাঁদ ও প্ররোচনায় ভুল হয়ে গিয়েছিল।

সে যাক।
এখনও সৃঞ্জয়ের নেতৃত্বেই “প্রতিদিন” চলছে।
এই বাজারেও মোটামুটি সব দল, সব মতামতের খবর থাকে। এটা ভালো। সৃঞ্জয় নিজেও কাগজপাগল। খবর বা বিষয়ে ঢোকে, নজর রাখে। এটা ইতিবাচক। কিছু নতুন মুখও সময়ের সঙ্গে উঠে আসছে দেখতে পাই। তারা বেশ ভালো কাজ করছে।
এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাগজ চালানো বড় কম কথা নয়।
আশা করি, নুন, লঙ্কা, স্বাদ এবং ঝাঁঝে আরও উন্নতি করে বাংলা কাগজের ময়দানজুড়ে চুটিয়ে খেলে যাবে ” প্রতিদিন।”

পাঠকপাঠিকাদের কাছে অনুরোধ, যে কাগজ ইচ্ছে পড়ুন। তবে এই ডামাডোলের মধ্যে মোটামুটি একটা রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার ছবি পেতে অবশ্যই পড়ুন “সংবাদ প্রতিদিন।”

গোটা প্রতিদিন পরিবারকে এক প্রাক্তনীর পক্ষ থেকে জানাই জন্মদিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা।

পুনশ্চ: ইদানিং প্রতিদিনে আমার ছবি এবং খবর দেখে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, ফিরছো?
আমার জবাব: হয়ত কোনোদিন ফিরব। হয়ত ফেরার পরিস্থিতি হবে না। ওসব পরের কথা। আপাতত সৃঞ্জয়ের সঙ্গে ভেঙে যাওয়া আন্তরিক সম্পর্কটা একটু সুসম্পর্কে পরিণত হচ্ছে, সেটা ভালো লাগছে।
আর ফেরা না ফেরা দিয়েই সমসময় উপসংহার হয় কি?
হয়ত বাংলা কাগজের জগতে নতুন কোনো দৈনিকের আবির্ভাব হবে। হয়ত তার আবাহনের মন্ত্রোচ্চারণ চলছে।
জীবন বড় অদ্ভুত।
ঈশ্বর সর্বশক্তিমান। আর সময় বলবে শেষ কথা।
এটা আমার জীবনের উপলব্ধি।

টুম্পাই ভালো থাকুক।
প্রতিদিন থাকুক চিরদিন।

 

Related articles

শনির সকালে হাওড়ার বাঁকড়া এলাকার মার্কেটে আগুন! ঘটনাস্থলে দমকলের একাধিক ইঞ্জিন

সকালের আলো পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠার আগেই শনিবার হাওড়ার (Howrah) বাঁকড়া এলাকায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। বাদামতলার একটি জামাকাপড়ের মার্কেটে...

শনির সকালে পারদ পতন কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে, উত্তরে ঘন কুয়াশার দাপট!

উইকেন্ডের ভোরের আলো ভালো করে ফোটার আগেই এক লাফে কুড়ি ডিগ্রির নিচে নেমে গেল কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (Kolkata...

কাশ্মীরের কুপওয়ারা সেক্টরে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, সেনার গুলিতে খতম ২ জঙ্গি 

শনিবার সকালে ভূস্বর্গে ভারতীয় সেনার (Indian Army) সাফল্য। কাশ্মীরের (Kashmir) কুপওয়াড়ায় খতম দুই জঙ্গি। দুজনেই কেরান সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ...

KIFF: শনিবারের সিনেপার্বণে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, সিনেমার গানের আড্ডায় সুমন – প্রসেনজিৎ

শহর জুড়ে কুড়িটি প্রেক্ষাগৃহে ২১৫টি ছবির আসর নিয়ে শুরু হয়েছে ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (31st Kolkata International...
Exit mobile version