এই প্রথম নয়, এর আগেও রাজনৈতিক দলের জন্য পোশাক ডিজাইন করেছেন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পল। তবে সেটা বিজেপির একেবারে বিপরীত শিবিরে থাকা সিপিআইএমের জন্য। ২০০৯ সিপিএমের একটি অনুষ্ঠান ছিল মোহরকুঞ্জে। সিদ্ধান্ত হয় পার্টি কমরেডরা সবাই একই রকমের পোশাক পরে আসবেন। এই পরিকল্পনায় আর এক ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায় সেই সময় অগ্নিমিত্রার নাম প্রস্তাব করেন। সেই মতো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেই সময়কার সিপিআইএম ঘনিষ্ঠ অরিন্দম শীল জানান, অগ্নিমিত্রা প্রথমে তিনটি শাড়ি এবং ধুতি পাঞ্জাবি ডিজাইন করে দেন।

বামেদের পোশাক সুতরাং রং নির্বাচন নিয়ে কোনও দ্বন্দ্ব ছিল না। কী মেটিরিয়াল দিয়ে তৈরি হবে তাই নিয়ে একটা কথা চলছিল। প্রথমে ঠিক হয় খাদির তৈরি পোশাক হবে। কিন্তু সেটা যেহেতু কংগ্রেসের ‘ব্র্যান্ড’। সেই কারণে সিদ্ধান্ত হয় সুতির কাপড়েই তৈরি হবে পোশাক। লাল-সাদা কম্বিনেশনে তৈরি হল মেয়েদের জন্য শাড়ি আর ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি। অগ্নিমিত্রা পলের ডিজাইনার পাঞ্জাবি পরে প্রথম পরেন শ্যামল চক্রবর্তী ও ফৈয়জ আহমেদ খান। সেটা দেখে এরকম একটা পাঞ্জাবি পরতে চান সুভাষ চক্রবর্তীও- জানিয়েছিলেন অরিন্দম শীল। তিনি বলেন, ‘কুর্তা হিট’।
অরিন্দম শীল জানিয়েছিলেন, প্রথম লটের পোশাকের জন্য অগ্নিমিত্রা কোন টাকা নেননি। অগ্নিমিত্রা পল সেই সময় সংবাদমাধ্যমকে জানান, এভাবে কোন রাজনৈতিক দলের পোশাক করতে পেরে তিনি খুশি। পরবর্তীতে আরও বড় ধরনের অর্ডার পেলে তাঁর কারিগরদের সুবিধা হবে বলেও মন্তব্য করেন টলিউডের পছন্দের ফ্যাশন ডিজাইনার।
প্রধানত অরিন্দম শীলই এই বিষয়নিয়ে অগ্নিমিত্রার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। ১১ বছর পর ফের অগ্নিমিত্রা পল যখন তাঁর দলের জন্য পোশাক তৈরি করার নির্দেশ পেয়েছেন, তখন তিনি রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার চেয়ারপার্সন। এবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি অবশ্য সিপিআইএম-এর জন্য পোশাক ডিজাইন করার কথাটি একেবারেই অস্বীকার করেন। অথচ ২০০৯-এর ২৮ এপ্রিলের ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ কাগজ বলছে বামেদের জন্য পোশাক ডিজাইন করেছিলেন অগ্নিমিত্রা পল। শুধু তাই নয়, সদ্যপ্রয়াত সিপিআইএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর সেই পাঞ্জাবি পরা ছবিও তারা সেইসময়ের ‘মেট্রো’-র পাতায় ছেপেছিল। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্যেও পোশাক তৈরি করেছিলেন অগ্নিমিত্রা পল। যদিও সেখানে অগ্নিমিত্রা পল জানিয়ে দেন পোশাক তৈরি আর রাজনৈতিক ভাবাদর্শ এক নয়।
