বাংলাদেশ থেকে দেড় হাজার টন ইলিশ আসছে কলকাতায়

খায়রুল আলম, ঢাকা

কলকাতা তথা বাঙ্গালী ভোজন রসিকদের জন্য সুখবর ।আর তা হলো ভারতে প্রায় দেড় হাজার টন ইলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শেখ হাসিনা সরকার। এবার ইলিশ ব্যবসায়ীদের ডাকে সাড়া দিয়ে রপ্তানির ‘বিশেষ অনুমতি’ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আর সরকারের অনুমতি পাওয়া ১৪৫০ টন ইলিশ আগামী সপ্তাহের মধ্যেই কলকাতায় পৌঁছবে। ২০১২ সাল থেকে ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ ছিল। পরে ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর ইলিশ ছাড়া অন্য সব মাছ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শেখ হাসিনা সরকারের শুভেচ্ছা হিসেবে এই পরিমান ইলিশ ভারতে রফতানির অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২০০ মাছ রপ্তানিকারক ভারতে মাছ রপ্তানির জন্য সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন। তার মধ্যে কেবল ৯ জনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এবার বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনাসহ বঙ্গোপসাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে। আর বেশি মাছ ধরা পড়ায় ইলিশের দামও খুবই কম।

এক কেজি ওজনের ইলিশ ঢাকার বাজারে বিক্রি হচ্ছে বিক্রি ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর তার কম ওজনের ইলিশ ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর ইলিশের দাম কমে যাওয়ায় ক্রেতারা খুশি হলেও বিক্রেতারা খুশি নন। তারা তারা সরকারের কাছে ইলিশ রফতানির আবেদন জানিয়েছিলেন।তাদের সেই আবদেনে সাড়া দিয়ে সরকার ১৪৫০ টন ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত দেয়।

আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এসব ইলিশ কলকাতায় পৌঁছবে। এটি বেনাপোল-হরিদাসপুর সীমান্ত দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে যাবে। বাংলাদেশ থেকে যে ইলিশ ভারতে যাবে তা ৮০০-১২০০ গ্রাম ওজনের হবে। ওজনের উপর নির্ভর করে ইলিশের পাইকারি দাম প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১৪০০ টাকা হবে।

২০১১ সালের পর থেকে এই বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশের ইলিশ আর পশ্চিমবঙ্গে আসেনি। কারণ ২০১২ সালের জুলাই মাস থেকে ভারতে ইলিশ রফতানি করার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার। যে কয়েকটি বাংলাদেশি সংস্থা ভারতে ইলিশ মাছ রফতানি করার অনুমতি পেয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল সেভেন স্টার ফিশিং প্রসেসিং লিমিটেড। এই সংস্থার পরিচালক কাজি আবদুল মান্নান জানান, ‘বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী মোট ৯টি কোম্পানিকে পশ্চিমবঙ্গে ১৪৫০ টন ইলিশ রফতানি করার অনুমতি দিয়েছেন। ১০ অক্টোবরের মধ্যে পুরো রফতানির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ফেলতে হবে। কারণ ১২ অক্টোবর থেকে আবার পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশ রফতানির ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাচ্ছে।’

আরও পড়ুন- ফের সায়ন্তনের নজিরবিহীন “ভাষা সন্ত্রাস”! পাল্টা দিলেন তৃণমূল নেতা

গত বছর (২০১৯) দুর্গাপুজোর সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গে ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির ব্যবস্থা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যোগ দিতে গত বছর বাংলাদেশে আসার আগে ৫০০ টন ইলিশ পাঠানো হয়েছিল। এই বিষয়টিকে ‘ইলিশ-কূটনীতি’ আখ্যা দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রতি বছর হাজার হাজার টন ইলিশ চোরাই পথে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারতে পাচার হত। সে কারণে ইলিশের বাজার চাঙ্গা থাকত।