কংগ্রেসের সঙ্গে আর সম্পর্ক নেই: ডেরেক, বিজেপির একনম্বর দালাল তৃণমূল: অধীর

‘সর্বোচ্চ নেতৃত্বের’ নির্দেশেই তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন,
“কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে লড়তে তাঁদের যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে”।

এখানেই থামেননি ডেরেক৷ সুর চড়িয়ে এদিন তিনি বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করবে, বিজেপি-র সুবিধা করে দেবে আর আশা করবে সংসদে আমরা কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব? এটা হতে পারে না।’’ শুধু এ দিনের কর্মসূচিতে নয়, আগামী দিনেও জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে চলার ইচ্ছা যে তৃণমূলের নেই, সে ইঙ্গিতও ডেরেক দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সংসদ চলাকালীন কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল নিরাপদ দূরত্ব বহাল রেখে চলবে।’’ অর্থাৎ, কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও কক্ষ সমণ্বয় থাকবে না। ডেরেক জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত তৃণমূলের সংসদীয় দলের নয়, সর্বোচ্চ নেতৃত্বের।

ডেরেকের এই অভিযোগের উত্তর দিতে বিন্দুমাত্র সময় নেননি লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি৷ তৃণমূলকে তোপ দেগে তিনি বলেছেন, ‘‘ভারতে বিজেপির সবথেকে বড় দালাল তৃণমূল!’’

আরও পড়ুন- প্রস্তাবিত কৃষি বিল নিয়ে সংঘাত বিজেপি জোটে,পদত্যাগ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরতের

কংগ্রেসের তরফে কড়া প্রতিক্রিয়ায় অধীর চৌধুরি এ দিন বলেছেন, ‘‘বিজেপি-র দালালি তৃণমূল করছে। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন হল। কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন বিরোধী দল ওই নির্বাচনে বিজেপি-র মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে যখন লড়াই করছে, তখন তৃণমূল জানিয়ে দিলো, “আমরা নির্বাচনে নেই।’’ অধীরবাবু বলেন, সংসদে নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার সময়েও বিজেপির পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি। যে পণ্ডিত ব্যক্তি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপি-র সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগ তুলছেন, তাঁকে বলব আত্মসমীক্ষা করতে। যে বিজেপি-কে তৃণমূল আজ বাংলায় এতো ভয় পাচ্ছে, সেই বিজেপি-কে বাংলার মাটিতে এনেছিলো কে? কংগ্রেস? না তৃণমূল?’’

তৃণমূল এবং কংগ্রেসের এই সংঘাত প্রত্যাশিতই ছিলো৷ বাংলার কংগ্রেসে সব থেকে কট্টর তৃণমূল-বিরোধী মুখ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্থায়ী সমালোচক অধীর চৌধুরি দ্বিতীয় দফায় প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির আসনে বসার পরমুহুর্ত থেকেই একের পর এক তোপ দাগা শুরু করেন তৃণমূলের উদ্দেশ্যে৷ মাসখানেক আগে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর ডাকা বৈঠকে যথেষ্টই গুরুত্ব পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল আশা করেনি এত কিছুর পর অধীর চৌধুরিকে বঙ্গ কংগ্রেসের সভাপতি করবেন সোনিয়া গান্ধী৷ ঘটনা তেমনই হয়েছে৷

অধীরবাবু কলকাতায় থাকুন বা দিল্লিতে, তৃণমূলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করার কাজ করেই চলেছেন অধীর৷

সোনিয়ার এই সিদ্ধান্ত হজম করতে পারছেনা তৃণমূল ৷ এবং সম্ভবত সেকারনেই কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েই চলেছে ঘাসফুল শিবির৷ ডেরেক-অধীরের এই বাগযুদ্ধ তা স্পষ্ট করেছে৷

আরও পড়ুন- মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে মায়ের আগমনী গান!” মমতা গাইলেন “জাগো দুর্গা”

ওদিকে বৃহস্পতিবার GST ইস্যুতে সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল-সহ ৮টি বিরোধী দল। এই কর্মসূচিতে কংগ্রেসকে ডাকাই হয়নি। উল্টে তৃণমূলের ডেরেক বলেছেন, ” কংগ্রেসকে নিয়ে বিভিন্ন দলের কিছু সমস্যা রয়েছে। তাই কংগ্রেসকে এদিন ডাকা হয়নি। পাল্টা বলেন, গত ২৬ আগস্ট সোনিয়া গান্ধীর ডাকা বৈঠকে বিভিন্ন প্রান্তের অ-বিজেপি দলকে ডাকা হয়নি। কংগ্রেস ‘বড়দা’র মতো আচরণ করবে। আর অন্যান্য দল সেগুলো দিনের পর দিন মেনে নেবে, সেটা সম্ভব নয়!

পাল্টা অধীর চৌধুরি সরাসরি মমতাকে আক্রমণ বলেছেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আপনি GST-কে কেন্দ্র করে কয়েকটা রাজ্যের কয়েকটা আঞ্চলিক দলকে নিয়ে একটা প্রতিবাদ করলেন। এর ফলে আপনি ভাববেন না যে ওই দলগুলি আপনাকে সর্বভারতীয় নেত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছে। এ দেশের সব ক’টি আঞ্চলিক দল জানে, কংগ্রেসকে ছাড়া বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়ার চেষ্টা করা অর্থহীন এবং লোক দেখানো৷

আরও পড়ুন- Big Breaking: ফ্যাশন ডিজাইনার শর্বরী দত্তর অস্বাভাবিক মৃত্যু