Tuesday, May 6, 2025

সংসদে আইন পাস, আকাশপথে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ বাড়লো ছয়গুণ

Date:

Share post:

খায়রুল আলম, ঢাকা: আকাশপথে পরিবহণের সময় দুর্ঘটনায় যাত্রী আহত বা নিহত হলে এবং ব্যাগেজ নষ্ট বা হারিয়ে গেলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়াতে নয়া আইন পাস হল বাংলাদেশ সংসদে। বর্তমান আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ বাড়ানো হয়েছে প্রায় ছয়গুণ।

এতদিন বাংলাদেশ বিমান পরিবহনের সময় যাত্রীর মৃত্যু বা আহত হলে ক্ষতিপূরণ ছিল ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা। নতুন আইনে সেটা বেড়ে এক কোটি ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৩৪ টাকা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সংসদে এ সংক্রান্ত ‘আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) বিল-২০২০’বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী পাসের প্রস্তাব করলে তা ধ্বনিভোটে পাস হয়। এর আগে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই- বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন।

গত ২৩ জুন বিলটি সংসদে তোলা হয়। পরে বিলটি এক মাসের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এর আগে গত জানুয়ারি মাসে বিলটিতে অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। বিমান পরিবহনের ক্ষেত্রে কোনও দুর্ঘটনায় যাত্রীর মৃত্যু বা আঘাতপ্রাপ্ত হলে এবং ব্যাগেজ নষ্ট বা হারানোর ক্ষেত্রে ‘ওয়ারশ কনভেনশন-১৯২৯’ এর আলোকে দেশে বর্তমানে প্রচলিত ‘দ্য ক্যারেজ বাই এয়ার অ্যাক্ট-১৯৩৪’, ‘দ্য ক্যারেজ বাই এয়ার (ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন) অ্যাক্ট-১৯৬৬’ এবং ‘দ্য ক্যারেজ বাই এয়ার (সাপ্লিমেন্টারি কনভেনশন) অ্যাক্ট-১৯৬৮’ বিদ্যমান আছে।

আরও পড়ুন:দেশে তৈরি হচ্ছে আরও এক গভীর সমুদ্র-বন্দর

এই তিনটি আইনে প্রাণহানি, আঘাত ও ব্যাগেজ নষ্ট বা হারানোর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কম ছিল। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে ১৯৯৯ সালে ‘মন্ট্রিল কনভেনশন’গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ওই কনভেনশনে ১৯৯৯ সালেই স্বাক্ষর করে। ১৯৯৯ সালে মন্ট্রিল কনভেনশন গ্রহণের পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও বাংলাদেশে তা অনুসমর্থন হয়নি। মন্ট্রিল কনভেনশনটি অনুসমর্থন করে নতুন আইন প্রণয়ন করলে মুত্যু, আঘাত ও মালামাল হারানো বা নষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাওয়া সহজ হবে।

মন্ট্রিল কনভেনশন রেটিফিকশন করে প্রণীত খসড়া আইনটি অনুমোদিত হলে যাত্রীর মৃত্যু বা আঘাত, ব্যাগেজ ও কার্গোর ক্ষতি বা হারানোর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের হার পূর্বের তুলনায় অনেক বাড়বে।
নতুন আইন কার্যকর হলে ফ্লাইট বিলম্বের কারণে পরিবহনকারীর দায় ২০ ডলারের পরিবর্তে পাঁচ হাজার ৭৩৪ ডলার, ব্যাগেজ বিনষ্ট বা হারানোর জন্য প্রতি কেজিতে ২০ ডলারের পরিবর্তে এক হাজার ৩৮১ ডলার এবং কার্গো বিমানের মালাপত্র নষ্ট বা হারানোর জন্য প্রতি কেজিতে ২০ ডলারের পরিবর্তে ২৪ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

যাত্রীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে তার সম্পত্তির বৈধ অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এ আইনের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের অর্থ ভাগ করা যাবে। সংশ্লিষ্ট বিমান কর্তৃপক্ষ বা বিমাকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে অথবা আদালতের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘কনভেনশনের আলোকে নতুন আইন না হওয়ায় কোনও দুর্ঘটনার জন্য বর্তমানে প্রচলিত আইনে প্রাপ্ত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ খুবই কম এবং তা আদায়ের পদ্ধতি অষ্পষ্ট, সময়সাপেক্ষ ও জটিল। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য জন্য বিমানে চলাচলকারী যাত্রীর অধিকার সুরক্ষা ও মালপত্র পরিবহন সুনিশ্চিতকরণ, যাত্রীর মৃত্যুর কারণে পরিবারকে প্রদেয় ক্ষতিপূরণ প্রায় ৬ গুণ বৃদ্ধি এবং আদায় পদ্ধতি সহজ করতে আইনটি প্রয়োজন।’

spot_img

Related articles

পহেলগামে নিহত দুই পরিবারকে সাহায্য় রাজ্যের, বাড়িতে গেলেন দুই মন্ত্রী

দেশের কোনও প্রান্তে কোনও দুর্ঘটনাতেও কেউ মারা গেলে সজাগ হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। বিশেষত বিরোধী...

আইএসএল থেকে বিদেশি নেবে না ইস্টবেঙ্গল, ছাড়া হচ্ছে না বিষ্ণুকেও

আগামী মরসুমে শক্তিশালী দল গঠনের লক্ষ্যে এখন থেকেই মাঠে নেমে পড়েছে ইস্টবেঙ্গল(Eastbengal)। দলে এবার ভালো বিদেশি(Foreigner) নেওয়াই প্রধান...

২০২৬-এ ফেব্রুয়ারির শুরুতেই মাধ্যমিক! রইল রুটিন

আগামী বছর কবে মাধ্যমিক(Madhyamik), মঙ্গলবার তা জানিয়ে দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ(WBBSE)। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়াতেই শুরু হবে দশম...

সমস্যায় কর্ণপাত করছে না কেন্দ্র, নদী ভাঙন নিয়ে বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী

নদী ভাঙনের কারণে মালদহ জেলা বিপদের মুখে। এ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের(Central Govt) কাছে সাহায্য চেয়েও নিরাশ হতে হয়েছে রাজ্যকে।...