থাকবে না কোনও প্রাণী ও উদ্ভিদ, আগামী পৃথিবীর দখল নিতে চলেছে অন্য কেউ

একটা সময় ছিল যখন এ পৃথিবী বাসযোগ্য ছিল না কোনও প্রাণীর। অবশ্য কালের নিয়মে জলে প্রাণে ভরে উঠেছে আজকের পৃথিবী(Earth)। বিবর্তনের পথ ধরে পৃথিবীর মাটিতে জন্ম নিয়েছে মানুষ। গড়ে উঠেছে আধুনিক সমাজ। তবে কালের নিয়ম বলে, কোনও কিছুই চিরস্থায়ী নয়। যার শুরু আছে তার শেষও আছে। আর সেই হিসেব কষলে এই পৃথিবীও একদিন শেষ হয়ে যায়। যদিও বিজ্ঞান বলছে সেই সময় আসার ও বহু আগে পৃথিবী থেকে ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাবে সমস্ত প্রাণী ও উদ্ভিদরা। অবশ্যই সেই তালিকা থেকে বাদ পড়বে না মানুষও। সম্প্রতি জাপান ও মার্কিন বিজ্ঞানীদের(scientist) তরফে এমনই এক তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

জাপান ও মার্কিন বিজ্ঞানীদের তরফে দাবি করা হয়েছে, আগামী দিনে এই পৃথিবীর অক্সিজেনের মাত্রা ব্যাপক ভাবে কমে আসবে। এর ফলস্বরূপ পৃথিবী থেকে চিরতরে শেষ হয়ে যাবে প্রাণী ও উদ্ভিদ। সেই সময় আসতে চলেছে এখন থেকে ১০০ কোটি বছর পর। যার ফলে পৃথিবীর সমস্ত জটিল এরোবেটিক প্রাণ ও ফটোসিন্থেসাইজিং(Photosynthesising Organisms) প্রাণের বেঁচে থাকা ব্যাপক সমস্যা দায়ক হয়ে উঠবে। তথ্য বলছে, বর্তমানে পৃথিবীতে অক্সিজেনের পরিমাণ ২১%। মানুষ সহ অন্যান্য জটিল শারীরিক প্রক্রিয়ার প্রাণীদের বেঁচে থাকতে গেলে প্রচুর পরিমাণ অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। পৃথিবীর সৃষ্টির সময় পৃথিবীতে অক্সিজেনের মাত্রা অত্যন্ত কম ছিল। সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হবে ১০০ কোটি বছর পরে।

জাপানের টোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কাজুমি অজাকি এবং আটলান্টার জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ক্রিস রিনহার্ড পৃথিবীর জলবায়ুর বায়োলজিক্যাল ও জিওলজিক্যাল সিস্টেম এর মডেল তৈরি করেছেন। এবং তার ওপর ভিত্তি করেই পৃথিবীর ভবিষ্যতের বায়ুমণ্ডল নিয়ে শুরু হয়েছে গবেষণা। এই বৈজ্ঞানিকদের দাবি এখন থেকে ১০০ কোটি বছর পর্যন্ত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বর্তমানে যে অবস্থায় আছে সেখানেই থাকবে। এর ঠিক পর থেকে শুরু হতে থাকবে পরিবর্তন। সেটা হবে আকস্মিক এবং দ্রুত গতিতে। এ পিছনে মূল কারণ হবে সূর্যর বয়স বৃদ্ধি। সূর্যের বয়স যত বাড়তে থাকবে ততোধিক গরম হতে থাকবে এই নক্ষত্র। তার প্রতিফলন পড়বে পৃথিবীর কার্বন ডাই অক্সাইডের (CO2) উপর। কার্বন ডাই অক্সাইডের কম হওয়ার কারণে অধিক উষ্ণতায় শোষণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে পৃথিবী। এরপরই ভাঙতে শুরু করবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল। কার্বন ডাই অক্সাইডের অভাবে প্রাণ হারাবে পৃথিবীর সমস্ত ফটোসিন্থেসাইজিং প্রাণ অর্থাৎ গাছপালা-উদ্ভিদ। যার ফল, গাছপালা উদ্ভিদের অভাবে সমানতালে কমবে পৃথিবীর অক্সিজেন।

আরও পড়ুন:টাইম ম্যাগাজিনের কভার পেজে ভারতের কৃষি আন্দোলনকারী মহিলাদের ছবি

ক্রিস রিনহার্ডের পৃথিবীর সেই সময়টা হবে অত্যন্ত ভয়াবহ একটি সময়কাল। অক্সিজেনের স্তর বর্তমান সময় থেকে কয়েক লক্ষ গুণ নিচে নেমে আসবে। এটাই শেষ নয়, পৃথিবীর বুকে লালিত সমস্ত প্রাণীকে ধ্বংস করে ফেলতে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যাবে ১০ হাজার গুণ। পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে ওজোন স্তর। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই পরিস্থিতি যখন শুরু হবে তখন তা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে হবে। ১০০ কোটি বছর পর এই পরিস্থিতি শুরু হতেই মাত্র ১০ হাজার বছরে পৃথিবীর সমস্ত অক্সিজেন শেষ হয়ে যাবে। ওই বিজ্ঞানীদের দাবি, পৃথিবীর বায়ুমন্ডল হঠাৎ এই ব্যাপক পরিবর্তন সহ্য করতে পারবে না। ফলে সেই সময়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে শুধুমাত্র অতি সূক্ষ্ম জীব (মাইক্রোভায়াল অর্গানিজম)। ধ্বংস হয়ে যাবে জল ও স্থলের সমস্ত প্রাণ। সেই সময় গোটা পৃথিবীর রাজত্ব হয়ে উঠবে লুকিয়ে থাকা প্রাচীন সব ব্যাকটেরিয়ার।

Advt

Previous articleদলের প্রচারে যাবেন না, টিকিট না পেয়ে জানালেন ক্ষুব্ধ ‘মাস্টারমশাই’
Next articleরবিবারের ব্রিগেডে বড় চমক, মোদির সভায় থাকছেন মিঠুন!