বামেদের ইস্তাহারে কৃষি বিলের বিরোধিতা, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য দফতর, বিদ্যুৎ বিলে ছাড়ের ঘোষণা

ক্ষমতায় এলে জমি অধিগ্রহণ নীতি নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করবে বামফ্রন্ট। নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ের খসড়া নির্বাচনী ইস্তাহারে এমনটাই জানাল তারা। বৃহস্পতিবার সপ্তদশ বিধানসভা ভোটের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করে বামেরা। সেখানেই শিল্প, কৃষি, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শ্রমের মতো একাধিক বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
ক্ষমতায় এলে বামফ্রন্ট বা জোটের সরকার কী করতে চায়, তার ব্যাখ্যা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কী করা হবে না, সেই ঘোষণাও রয়েছে খসড়া ইস্তাহারে। তার মধ্যে স্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে এ রাজ্যে কেন্দ্রের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বা এনপিআর কার্যকর করতে দেওয়া হবেনা । বামফ্রন্টের বক্তব্য, ‘বৈষম্যমূলক নাগরিকত্বের ধারণা রাজ্যে কার্যকর করা হবে না’।
শিল্প নীতি নিয়ে বামদের ইস্তাহারে বলা হয়েছে, ‘ক্ষমতায় এলে শিল্প তৈরির ব্যাপারে জোর দেবে সরকার। তবে শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সম্পর্কে সতর্ক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এলাকাভিত্তিতে সহমত তৈরি করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে। অধিগৃহীত জমির জন্য পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে’।
ইস্তাহারে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আলাদা দফতর চালুর কথাও তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিককে নথিভুক্ত করে অন্য রাজ্যে কর্মরতদের পাশে থাকবে সরকার। একই সঙ্গে ইস্তাহারে জানানো হয়েছে, বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের মাসে আড়াই হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলি খোলার জন্য পদক্ষেপ করা হবে।
বিকল্প শিক্ষানীতির কথা উল্লেখ করে তারা জানিয়েছে, ‘সরকার ক্ষমতায় এলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক এবং বাধ্যতামূলক করা হবে। মাধ্যমিক সমতুল ছাত্রছাত্রীদের পারিবারিক আয়ের মাপকাঠিতে এককালীন অর্থ সাহায্য করা হবে’।
তারা বলেছে, ‘জনস্বাস্থ্যের সম্পূর্ণ দায়িত্ব সরকারের। বিনামূল্যে সরকারি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। স্বাস্থ্যসাথীর কোনও ধাঁধা নয়, প্রতিষেধকমূলক ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া হবে। শিশু ও মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার হ্রাস করার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে’।
নরেন্দ্র মোদি সরকারের কৃষি আইনের বিরোধিতা করা হয়েছে । বিকল্প হিসাবে বলা হয়েছে, ‘অনেকে ভূমি সংস্কারে জমি পেয়েও, তাঁদেরকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। আমরা সেই জমি ফিরিয়ে দেব। কৃষকদের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করা হবে’। এ ছাড়া বামেদের ইস্তাহারে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল ছাড় দেওয়া, কেন্দ্র ও রাজ্য সম্পর্ক উন্নয়ন এবং বেআইনি চিট ফান্ড, রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

Previous articleনন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর “হামলা”, প্রাথমিক রিপোর্টে যা জানালো পুলিশ
Next articleনন্দীগ্রাম-কাণ্ডে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে কমিশনে তৃণমূলের ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল