পশ্চিমবঙ্গে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা দখলে মরিয়া গেরুয়া বহিনী। এখানে প্রচার চালাতে কার্যত বাংলায় ডেলি প্যাসেঞ্জারি করছেন মোদি-শাহ। সম্প্রতি বাংলার ভোট নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, বাংলাদেশে পর্যাপ্ত খাবারের অভাব রয়েছে। সেদেশে বহু মানুষ নিজেদের রাষ্ট্রেই অভুক্ত থাকেন। ফলে তাঁরা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েন। এই কারণেই বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ বাড়ছে। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশিদের এই অনুপ্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে।
অমিত শাহর এই বক্তব্য ঘিরেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ সম্পর্কিত এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী। বাংলাদেশ সম্বন্ধে শাহের জ্ঞান নিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এই ধরণের মন্তব্য ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে দাবি করেছেন। বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদপত্র প্রথম আলো’র প্রতিবেদনে মোমেন বলেছেন, বিশ্বে এমন অনেক জ্ঞানী লোক আছেন, যাঁরা দেখার পরেও দেখেন না, জানার পরেও বুঝতে পারেন না। কিন্তু অমিত শাহ যে মন্তব্য করেছেন তার জবাবে আমাকে বলতেই হচ্ছে যে, বাংলাদেশ সম্পর্কে ওঁর জ্ঞান খুবই সীমিত। বর্তমানে এদেশে অভুক্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা নেই। এমনকী দেশের উত্তর পূর্ব প্রান্তেও ক্ষুধার জন্য হাহাকার নেই। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর দাবি, সামাজিক উন্নয়নের সূচকে একাধিক ক্ষেত্রে ভারতের থেকেও এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। তিনি জানান, বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ ভালো শৌচাগার ব্যবহার করেন, ভারতে এই সংখ্যা ৫০ শতাংশের আশেপাশে। শিক্ষিতদের উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ঘাটতি থাকলেও তুলনায় কম শিক্ষিতদের এমন কোনও বিপদের মুখোমুখি হতে হয় না। অন্যদিকে, প্রায় লক্ষাধিক ভারতীয় বাংলাদেশে কাজ করছেন। এখন আর কাজের জন্য বাংলাদেশিদের ভারতে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না বলে জানিয়েছেন হাসিনা সরকারের বিদেশমন্ত্রী। এ কে আব্দুল মোমেন মনে করিয়ে দেন, বাংলাদেশিদের ভারতে অনুপ্রবেশ নিয়ে কথা বলার আগে বক্তার বাংলাদেশ সম্পর্কে জ্ঞানের আলো বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে।
আরও পড়ুন:মানা হচ্ছে না দূরত্ব-বিধি, মুখে নেই মাস্ক, দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে চলছে পুজো