কংগ্রেসকে ‘গুণ্ডা’ বললেন বিকাশ ভট্টাচার্য, সূর্যকান্তকে নালিশ করেই দায় এড়ালেন নেতারা

বেচারা কংগ্রেস !

অনেক আশা করে প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে জোট করেন সিপিএমের সঙ্গে৷ একুশের ভোটে কংগ্রেস বা সিপিএম কোনও দলই খাতা খুলতে পারেনি৷

তবুও কংগ্রেস ‘বন্ধুত্ব’ বজায় রেখেছে সিপিএমের সঙ্গে ৷ আজকের তারিখেও এই দুই দল পরস্পরের ‘কমরেড’৷ জোট- রাজনীতির প্রধান শর্ত শরকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকলে টেবিলে বসে মিটিয়ে নিতে হবে৷ প্রকাশ্যে কিছু বলা যাবেনা৷

সেই শর্তকে গঙ্গায় ভাসিয়ে সিপিএমের রাজ্যসভা সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য এক ফেসবুক পোস্টে সাঁইবাড়ি হত্যার ঘটনা নিয়ে কংগ্রেসকে ‘গুণ্ডা’ বললেন৷

এর পরেও জোট ছাড়ার সাহস দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে কংগ্রেস ৷ জোরালো প্রতিবাদ জানিয়ে আলিমুদ্দিনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা এর পরেও ভাবতে পারেনি প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা৷ দুর্বলের হাতিয়ার ‘নালিশ করা’৷ ওই কাজটুকুই করতে পেরেছে কংগ্রেস ৷
গোটা ঘটনা নিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে স্রেফ নালিশ করেই দায় সেরেছে কংগ্রেস।নিজেদের গায়েই কার্যত মেখে নিয়েছে সিপিএম নেতার বলা ‘গুণ্ডাদের দল’-এর তকমা৷ এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, কংগ্রেস যদি গুণ্ডাদের দলই হয়, তাহলে সেই দলের সমর্থন নিয়ে বিকাশ ভট্টাচার্যের রাজ্যসভায় যেতে লজ্জা করলো না ?

প্রসঙ্গত, শনিবার সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায় ফেসবুকে সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ করে একটি পোস্ট করেন। মীনাক্ষির পর রবিবার বিকাশ ভট্টাচার্য
সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ড নিয়ে নিজের স্মৃতির উল্লেখ করে একটি পোস্ট করেন। তবে সেই পোস্টটি তিনি তাঁর টাইমলাইনে শেয়ার করেছেন। ওই পোস্টে লেখা রয়েছে কংগ্রেসি গুন্ডারা সেদিন কী ভাবে হামলা করেছিলো৷ ওই পোস্টে ক্ষুব্ধ হয়েছে কংগ্রেস। ওই পোস্ট নিয়ে সূর্যকান্ত মিশ্রর কাছে বিকাশ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে নালিশ করেছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, এত বছর বাদে এই বিষয়বস্তু নিয়ে পোস্ট করার জন্য এই সময়টা কেন বেছে নিলেন বিকাশবাবু? বিকাশবাবুরা কি কংগ্রেসের সঙ্গে আর জোটে থাকতে রাজি নন?

বিকাশবাবু অবশ্য এতে আদৌ চিন্তিত নন৷ তিনি এত কিছুর পরেও বলেছেন, “অতীতকে অস্বীকার করে কোনও লাভ নেই। অতীতটা সত্য। এতে মতবিরোধের কোনও কারণ নেই। কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে রাজ্যসভায় গিয়েছি এটা সত্যি। তেমনি সাঁইবাড়ি নিয়ে বামপন্থীদের যে মত তা উল্লেখ করেছি। এত মতবিরোধের কোনও ব্যাপার নেই। আমি জানিনা কারা ক্ষুব্ধ। যারা ক্ষুব্ধ হচ্ছেন তারা হয়তো না জানার কারণে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। সাঁইবাড়ির যে ঘটনা হয়েছিল তা নিয়ে অন্য একজনের লেখা শেয়ার করেছি। এর সঙ্গে বিজেপি বিরোধী যে জোটের কোনও সম্পর্ক নেই।”

এই ইস্যুতে কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, “আমি মনে করি না ৫০ বছর আগেকার ঘটনা এই মুহূর্তে আলোচনা করার কোনও অবকাশ রয়েছে। গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। আর যদি এটাই মাথায় থাকে তাহলে আমরা জোট করতে গেলাম কেন? অতীতের অনেক বিষাক্ত স্মৃতিতো সবারই আছে। সেসব ভুলেই তো নতুন বাংলা গড়ব বলে জোট করেছিলাম।”

মোটের উপর, দুই দলের দুই ভট্টাচার্য এই ইস্যুতে বাক্য-বিনিময় চালালেও দল হিসাবে সিপিএম প্রদীপবাবুর নালিশকে পাত্তা দেয়নি৷ বিকাশবাবুকে সতর্কও করেনি৷ এর অর্থ কংগ্রেস যে ‘গুণ্ডাদের দল’ সে বিষয়ে বিকাশ ভট্টাচার্যের সঙ্গে সম্ভবত সহমত আলিমুদ্দিন ৷
আর কংগ্রেস এখন পর্যন্ত ওই নালিশ করেই দায় সেরেছে৷ গুণ্ডা বলেছে তো কী হয়েছে, সিপিএম এখনও তো আমাদের বন্ধু৷ বন্ধুদের মধ্যে এমন একটু হতেই পারে, সম্ভবত এমনই ভাবছে কংগ্রেস নেতারা৷

আরও পড়ুন- এবার বিনামূল্যে IAS কোচিং স্কলারশিপ দেবেন সোনু, কীভাবে আবেদন করবেন জেনে নিন

Previous articleএবার বিনামূল্যে IAS কোচিং স্কলারশিপ দেবেন সোনু, কীভাবে আবেদন করবেন জেনে নিন
Next articleজয় দিয়ে ইউরো কাপের অভিযান শুরু করল ইংল‍্যান্ড