Tuesday, August 26, 2025

খায়রুল আলম , ঢাকা

রুপালি শস্য ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে শুক্রবার বিকেলে। আর তাই রাত থেকে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল জেলেরা। মাছ ধরতে নেমেই মেঘনা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাচ্ছেন উপকূলের জেলেরা। এতদিন পর কাজে ফিরে আশানুরূপ মাছ পেয়ে খুশি তারা।

শনিবার (২৪ জুলাই) সকালে নোয়াখালির হাতিয়া ও কোম্পানিগঞ্জ উপকূলের হাটগুলোতে ইলিশ মাছে ছয়লাপ  হয়ে যায়। দামও ছিল হাতের নাগালে।

এর আগে ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। ওই নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে জেলেরা নদীতে আবারও মাছ ধরা শুরু করেছেন।

নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর নদীতে মাছ শিকারে নামতে পারায় উপজেলার জেলেপল্লিতে আনন্দের জোয়ার বইছে, হাসি ফুটেছে জেলে পরিবারগুলোতেও।

একাধিক জেলে বলেন, নদী উত্তাল ও আবহাওয়া অধিদফতরের সিগন্যাল থাকায় নদীতে আমরা বেশি দূর যেতে পারিনি। তবুও আজ সকাল পর্যন্ত আমাদের জালে প্রচুর রুপালি ইলিশ ধরা পড়েছে। এবার মাছের আকার তুলনামূলক ছোট। এরপরও ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় আমরা খুশি।

হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়ন জেলে সমিতির সভাপতি জবিউল হক বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করতে পারায় তাদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। জেলে পরিবারেও উৎসবের আমেজ বিরাজ। ঘাটে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।’

কোম্পানিগঞ্জের জেলে মনতোষ দাস জানান, মুছাপুর ক্লোজার ঘাট ও চরএলাহীর চরলেংটা ঘাটে প্রচুর ইলিশ এসেছে। চাপরাশিরহাট, পেশকারহাট, বামনী বাজার, বাংলাবাজার, বসুরহাটসহ সব বাজারে মাইকিং করে ইলিশ মাছ বিক্রি করা হয়েছে।

এদিকে বসুরহাটের মাছের আড়তে ৩০০, ৫০০ ও ৭০০ টাকা কেজি দরে বিভিন্ন আকারের ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে। বিধিনিষেধের কারণে ক্রেতা কম থাকায় বাজারের আশপাশে বেশ কয়েকটি স্থানে মাইকিং করতে শোনা গেছে।

হাতিয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা অনিল চন্দ্র দাস বলেন, ‘নোয়াখালির উপকূলে কোনো সতর্ক সংকেত নেই। খারাপ  আবহাওয়ায় গভীর সমুদ্রে না গিয়ে কাছাকাছি স্থানে মাছ ধরতে বলা হয়েছে।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. মোতালেব হোসেন বলেন, ‘ইলিশ মাছ বড় হতে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই নিষেধাজ্ঞা ছিল। এছাড়া গভীর সমুদ্রে যেসব মাছ পাওয়া যায়  তার প্রজননের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা কাজে এসেছে বলে মনে হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞার প্রধান উদ্দেশ্য ইলিশসহ গভীর সমুদ্রের মাছ নিরাপদে মা মাছে রূপান্তর করা। যাতে তারা নিরাপদে নদীতে ডিম ছাড়তে পারে।  ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।’

নোয়াখালি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, ‘ইলিশ মাছের বংশবৃদ্ধির জন্য এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। নোয়াখালি জেলায় মোট ৪০ হাজার জেলে রয়েছে। এর মধ্যে সমুদ্রে মাছ ধরেন ৯ হাজার ৮৬৪ জন জেলে। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে তাদের প্রত্যেককে ৮০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।’

 

Related articles

দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি-উদ্বেগ! টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে আশঙ্কা 

দুর্গোৎসবের মুখে একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রাজ্যবাসীর কপালে ভাঁজ বাড়াচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে...

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী! কিনলেন শাড়ি 

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় এসে হঠাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হাজির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মহিলাদের হাতের কাজই ঘুরে দেখলেন না, কেনাকাটাও...

ধনধান্যে ভরে, মা এসেছে ঘরে: মুখ্যমন্ত্রীর লেখা-সুরে গান এবার দুর্গাপুজোয়

বাংলা ও বাঙালির বড় উৎসব আর পুজোর গান— এক অপূর্ব মেলবন্ধন। এখন দুর্গাপুজোয় মণ্ডপে মণ্ডপে বাজে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা...

প্রধানমন্ত্রী বাংলা ছাড়তেই জীবনকৃষ্ণের গ্রেফতারি তৃণমূলকে অপদস্থ করার চক্রান্ত, তোপ কুণালের      

ইডির (ED) হাতে জীবনকৃষ্ণ সাহার (Jiban Krishna Saha) গ্রেফতারি আসলে তৃণমূল কংগ্রেসকে (TMC) অপদস্থ করার চক্রান্ত। প্রধানমন্ত্রী বাংলায়...
Exit mobile version