সেপ্টেম্বরেই কোভিডে মৃত্যু ৪৪ হাজার ২৬৫ জনের! ফের দীর্ঘমেয়াদি লকডাউনের পথে রাশিয়া

এ বছরের সেপ্টেম্বর মাস রাশিয়ার কাছে দু:স্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই তারা বলছে, ‘মারণ সেপ্টেম্বর’। কারণ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এত মৃত্যু দেখেনি রাশিয়া।
সেদেশের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ৪৪ হাজার ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রথম এক মাসে এত মৃত্যুর সাক্ষী থাকল ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। পরিস্থিতি সামলাতে আজ ৩১ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ‘সবেতন ছুটি’ ঘোষণা করেছে সরকার।

এমনকি, সাম্প্রতিক সময়ে সংক্রমণ এতটাই বেড়েছে যে ফের দীর্ঘমেয়াদি লকডাউনের চিন্তাভাবনা শুরু করেছে সরকার।
শুক্রবার ‘ফেডেরাল স্যাটিসটিক্স সার্ভিস’-এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ। মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে সেপ্টেম্বরকেই কাঠগড়ায় তুলছে প্রশাসন। শুধুমাত্র শনিবারই আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ২৫১ জন।

আরও পড়ুন- বিজয়া সম্মেলন ঘিরেও বিজেপির ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ ফের বেআব্রু
আসলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছিল বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই। কিন্তু রুশ সরকার লকডাউনের পথে হাঁটতে চাইছিল না। কারণ, গত বছরে অর্থনীতি অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে এ দেশে। তাই
নতুন করে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি চায়নি সরকার। কিন্তু বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে লকডাউন ছাড়া কোনও পথ নেই সরকারের কাছে।
বিশেষজ্ঞদের মত, ‘‘কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রশাসন যদি এখনও মানসিকতা না বদলায়, নতুন করে সংক্রমণ ঢেউ আছড়ে পড়বে দেশে। লকডাউন জারি করা উচিত অবিলম্বে। করোনা-বিধি নিয়ে আরও কড়াকড়ি প্রয়োজন। অল্প সময়ের জন্য নয়, বেশ কিছু সপ্তাহের জন্য লকডাউন জরুরি।’’
তথ্য বলছে, কোভিডের কারণে রাশিয়ায় মানুষের গড় আয়ু বেশ অনেকটা কমে গিয়েছে। এখন তা দাঁড়িয়েছে গড়ে ৬৯ বছর। গত বার সংক্রমণ ঢেউ আছড়ে পড়ার পরে হাসপাতালে শয্যার হাহাকার দেখা গিয়েছিল, স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছিল।
দেশবাসীকে বাঁচাতে অবিলম্বে টিকাকরণ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। আগের মতো ফের কঠোর করোনা-বিধি জারি করার কথাও বলেছেন তারা।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, দেশজ কোভিড-টিকা থাকা সত্ত্বেও রাশিয়ায় মাত্র ৪৭ শতাংশ বাসিন্দার এখনও পর্যন্ত টিকাকরণ হয়েছে।টিকাকরণে যে খামতি রয়েছে, তা মেনে নিয়েছে সরকারও। দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী তাতিয়ানা গোলিকোভা বলেছেন, ‘‘কোভিড আক্রান্ত হয়ে যে ভাবে দেশে মৃত্যু বাড়ছে, তা খুবই চিন্তার। টিকাকরণ হার সম্প্রতি কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু সেটা একেবারেই
যথেষ্ট নয়।’’