Sunday, November 9, 2025

সতীর একান্ন পীঠের এক পীঠ এটি। কিন্তু প্রচারের আলোয় না আসায় তীর্থস্থান হতে পারেনি শালবাড়ির ভ্রামরি মন্দির। নাহলে হয়তো কামাখ্যা বা কালীঘাটের মতোই হতে প্রসিদ্ধ তীর্থস্থান হতে পারত জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের শালবাড়ির ভ্রামরি মন্দির। কিছুটা প্রচারের অভাবে লোকচক্ষুর অন্তরালে রয়েছে এই মন্দির । যদিও প্রায় সারা বছর ধরে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গার মানুষ এই মন্দিরে পুজা ও মানত করতে আসেন। স্থানীয়দের আক্ষেপ, সরকার বা প্রশাসন যদি নজর দিত তাহলে হয়তো তীর্থস্থান হতে পারত শালবাড়ি। যদিও এলাকার বিধায়ক থাকাকালীন মিতালি রায় এই মন্দিরের উন্নয়নের চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি বিধায়ক মিতালি ও ধূপগুড়ি থানার বিদায়ী আইসি সুবীর কর্মকারের উদ্যোগে মন্দিরের প্রাচীর, জলের ব্যবস্থা ও অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়। তবে তা তুলনায় সামান্য বলা চলে।

 

 

সেই ভ্রামরি মন্দিরে এবারের কালিপূজার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। সম্পূর্ণ সরকারি বিধি নিষেধ মেনেই আয়োজন করা হচ্ছে পূজার। মূলত স্থানীয়দের উদ্যোগেই এখানে পুজোর আয়োজন করা হয়। তবে পূজার চাঁদার জন্য আলাদা করে কারো বাড়িতে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না সকলেই মন্দিরে এসে চাঁদা দিয়ে যান। পুজো উপলক্ষে চণ্ডীপাঠ এবং খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা থাকে। এখানে এখনও প্রচলিত আছে বলি প্রথা ‌। এই দেবী জাগ্ৰত বলে অনেকেই মনস্কামনা করতে প্রতিবছর আসেন। পুজো কমিটির উদ্যোক্তা হিরু রায় জানান, ” সরকারি বিধিনিষেধ মেনেই পূজার আয়োজন চলছে। সেরকম বড়ো করে পূজার আয়োজন করা না হলেও এখানে গভীর রাত পর্যন্ত পূজা অর্চনার আয়োজন করা হয়। এখানে বলি প্রথা রয়েছে। কবে এই পূজা শুরু হয়েছে আমরা জানি না। এই পূজার জন্য সারাবছর অপেক্ষায় থাকেন স্থানীয়রা।”

স্থানীয় বাসিন্দা তথা পূজা উদ্যোক্তা প্রকাশ সূত্রধর বলেন,” সতী দেবীর বা পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল এখানে পড়েছে বলে জন্মের পর থেকে শুনে আসছি। তাই এটাকে ৫১ পীঠের এক পীঠ বলা হয়। প্রতি বছর এখানে নিয়ম নিষ্ঠার সহিত কালি পূজা করা। সারা বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এখানে পূজা দিতে আসে। তবে মন্দিরের সেভাবে উন্নয়ন হয়নি। বিধায়ক থাকাকালীন মিতালি রায় এই মন্দিরের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করেছিলেন। কিছুটা কাজও করেছিলেন। তবে সরকার বা প্রশাসন যদি নজর দিত তাহলে হয়তো এই মন্দিরো অন্যান্য মন্দিরের মতো তীর্থস্থান হতে পারত।”

বিমল রায় বলেন,” পঞ্জিকাতে এই মন্দিরের উল্লেখ আছে তাছাড়া গুগল ম্যাপেও দেখা যায়। ওইসব দেখেই অনেকেই মন্দিরে পূজা দিতে আসেন। এই দেবী ভীষণ জাগ্ৰত।”

আরো জানা যায়, একটা সময় ফালাকাটা রেল স্টেশন মাস্টার এখানে পূজা দিতে আসতেন। সেসময় তিনি ফালাকাটা রেল স্টেশনে ফালাকাটা থেকে শালবাড়ি ভ্রামরি মন্দির যাওয়ার ম্যাপ তৈরি করে দেন। তবে এবছর স্টেশনটি নতুন করে তৈরি করা হয়েছে তাই তার চিহ্ন এখন নেই।

উল্লেখ্য ৫১ পীঠের এক পীঠ এই ভ্রামরি মন্দির। বাংলা পঞ্জিকা এবং আরো কয়েকটি ধর্ম গ্রন্থে উল্লেখ আছে ত্রিস্রোতা নদীর পাশে অবস্থিত ভ্রামরি দেবীর মন্দিরে আছে দেবীর বাম পদ। যদিও এই নিয়ে তর্ক বিতর্ক রয়েছে। তবে অনেকেই দূর দূরান্ত থেকে এখানে এসে প্রতিনিয়ত পূজা দিয়ে যান। অনেকের মতে এই মন্দিরে পূজা দিয়ে অনেকেরই মনস্কামনা পূর্ণ হয়েছে। তাই তাদের মতে এখানকার দেবী জাগ্ৰত। এমনকি বিশেষ দিনগুলোতে এখানে রাতের বেলায় নূপুরের আওয়াজ শোনা যায় বলে স্থানীয়রা জানান।

Related articles

৮ বলে ৮ ছক্কা! রঞ্জি ট্রফিতে বিশ্বরেকর্ড মেঘালয়ের ব্যাটারের

রঞ্জি ট্রফির( Ranji Trophy) ইতিহাসে বিশ্ব রেকর্ডে(World Record) তৈরি করলেন মেঘালয়ের ব্যাটসম্যান আশিষ কুমার চৌধুরী। আর বলে আটটি...

পশ্চিমবঙ্গই সেরা পারফর্মার: এসআইআর-এ রাজ্যের সাফল্যে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন

রাজনৈতিক সংঘাত ও প্রশাসনিক টানাপোড়েনের মধ্যেও এসআইআর সংক্রান্ত সামগ্রিক কাজ এবং এনুমারেশন ফর্ম বিলির ক্ষেত্রে সবার আগে পশ্চিমবঙ্গ।...

রবিতেও ঠাকুরনগরে এলো অ্যাম্বুল্যান্স: ২১ অনশনকারীর মধ্যে অসুস্থ ৯

এসআইআর-এর প্রতিবাদে আমরণ অনশনে মতুয়া পরিবারের সদস্যরা। মতুয়া দলপতিদের অনশনের সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা...

কংগ্রেসকেও সমর্থন করতে পারত RSS: অরাজনৈতিক সাজার চেষ্টা মোহন ভাগবতের!

একশো বছর উদযাপন ঘিরে রাতারাতি প্রচারের আলোয় অনেক বেশি করে আসছে আরএসএস। সেই সঙ্গে এবার প্রকাশ্যে হিন্দুত্ববাদী চিন্তাধারাকে...
Exit mobile version