খায়রুল আলম, ঢাকা

নিষিদ্ধ থাকলেও এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের প্রথম বর্ষের দুই ছাত্রী র্যাগিংয়ের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন। একই হলের তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন ছাত্রীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন তাঁরা।

ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর একজনের অভিযোগ, আপত্তিকর গানের সঙ্গে তাঁদের নাচতে বাধ্য করা হয়েছে, পাশাপাশি করা হয়েছে মানসিক নির্যাতন।

রোকেয়া হলের অপরাজিতা ভবনে (এক্সটেনশন চার) ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই দুই ছাত্রী। তাঁদের মধ্যে একজন (ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী) বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রাব্বানীর কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন।


প্রক্টর অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষ জিনাত হুদার কাছে পাঠিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে অপরাজিতা ভবনের (এক্সটেনশন তিন) কয়েকজন জ্যেষ্ঠ ছাত্রী তাঁর কক্ষে যান। তখন কিছুক্ষণ গল্প করে চলে গেলেও পরে তাঁরা আবার কক্ষে ফিরে আসেন। এ সময় তাঁদের মধ্যে ভাষা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা হচ্ছিল। একপর্যায়ে তিনি অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে জিজ্ঞাসা করেন, “আমি ভাত খাই”কে তাঁদের ভাষায় (মারমা ভাষা) কী বলা হয়? তখন তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী রেগে গিয়ে তাঁকে বলেন, “তোর তো সাহস কম না! তোকে র্যাগ দিতে হবে।” এ সময় পাশ থেকে জ্যেষ্ঠ ছাত্রীদের আরেকজন বলে ওঠেন, “শুধু ওকে (প্রথম বর্ষের ছাত্রী) নয়, এই ফ্লোরের প্রত্যেককে র্যাগ দিতে হবে।”

কিছুক্ষণ পর প্রথম বর্ষের আরও কয়েকজন ছাত্রীকে ওই কক্ষে আনা হয়। এ সময় হুমকি-ধমকি দিয়ে তাঁকে (প্রথম বর্ষের ছাত্রী) ও তাঁর আরেক সহপাঠীকে একটি অশ্লীল গানের সঙ্গে নাচতে বাধ্য করেন জ্যেষ্ঠ ছাত্রীরা।

অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে (রাত একটা পর্যন্ত) তাঁদের নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, র্যাগিংয়ে তৃতীয় বর্ষের পাঁচ ছাত্রী অংশ নেন। প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী বলেন, ‘গত ২৫ অক্টোবর আমার বাবা মারা যান। সেই শোক আমি কাটিয়ে উঠতে পারিনি।

আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হলাম। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। নির্যাতনের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
