১৬ ডিসেম্বর দিনটি বাংলাদেশ বিজয় দিবস(Vijay Diwas) হিসেবে পালন করে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ (Bangladesh)বিজয় দিবসের আনন্দে মাতোয়ারা। দেশের প্রতিটি প্রান্তে চলছে উৎসব। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ প্রধান সাহায্যকারী হিসাবে পাশে পেয়েছিল ভারতকে(India)। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে ঢাকায় বিজয় দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তী পালন অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ(Ram nath Kovind)। রাজধানী ঢাকায় মূল অনুষ্ঠান মঞ্চে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার(Sheikh Hasina) পাশেই দেখা গেল কোবিন্দকে।

বাংলাদেশ এবার বিজয় দিবসের ৫০ বছর বা সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে। সেই উপলক্ষে ঢাকার শের-ই-বাংলা জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিন প্যারেড গ্রাউন্ডে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন কোবিন্দ। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ-সহ আটটি দেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্যরা এদিনের কুচকাওয়াজে অংশ নেন। এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কোবিন্দ।

আরও পড়ুন:“শিনা বোরা জীবিত”, সিবিআইকে চিঠি লিখে চাঞ্চল্যকর দাবি ইন্দ্রানীর

বৃহস্পতিবার ভোর চারটে নাগাদ ঢাকার তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দর এলাকায় ৩১ বার তোপধ্বনি করে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এদিন বাংলাদেশের সমস্ত সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকা-সহ প্রতিটি জায়গায় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ভবনগুলি সেজে ওঠে রংবেরঙের আলোয়। ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়কগুলি জাতীয় পতাকা দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়। করা হয়েছে আলোকসজ্জাও।

বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বাংলাদেশের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সে দেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সাভার স্মৃতিসৌধে পৌঁছন। সবার আগে সে দেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সাভারের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। সকাল ৭টা থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে একে একে সাভারের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। এদিন বহু মানুষ নিজের পরিবার ও সন্তান-সন্ততিদের নিয়ে সাভার স্মৃতিসৌধে হাজির ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিসেনা ও ভারতের মিত্র বাহিনী যৌথভাবে যুদ্ধ করে। সেই যুদ্ধে জয় লাভ করে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। ৯ মাসের সেই যুদ্ধে বাংলাদেশের কমপক্ষে ৩০ লক্ষ মানুষ ও ১৭ হাজার ভারতীয় সেনা শহিদ হন। পাক সেনাবাহিনীর হাতে চরম লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছিল ১০ লক্ষেরও বেশি মহিলাকে। তবে রাজনৈতিক মহলের স্পষ্ট বক্তব্য, সেদিন যদি বাংলাদেশের পাশে ভারত না থাকতো তবে কোনওদিনই তারা স্বাধীন হতে পারত না। ভারতের সেই অবদানের স্বীকৃতি দিতে বিজয় দিবসের ৫০ বছর বা সুবর্ণজয়ন্তী পালনে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকেই প্রধান অথিতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উল্লেখ্য, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনদিনের বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বুধবার তিনি ঢাকায় পৌঁছন। কোবিন্দ সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ভবনের নিজস্ব রন্ধনশালায় তৈরি হরেক রকমের মিষ্টি, বিস্কুট ও কেক। ওই সমস্ত জিনিস তিনি সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের হাতে তুলে দেন। কোবিন্দের এই উপহার পেয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত হাসিনা।
