Sunday, August 24, 2025

ভেজাল খেতে খেতে আমরা খাঁটি জিনিসের স্বাদই ভুলতে বসেছি। আমাদের পঞ্চইন্দ্রিয় এখন বহুজাতিক সংস্থার ভোজ-বাজিতে আচ্ছন্ন । চারদিকে বড় বড় ব্যানার, হোর্ডিং, নিয়নের আলো বিচ্ছুরিত করে বহুজাতিক সংস্থাগুলো আমাদের যা দেখায় আমরা তাই দেখি । আমাদের যা বোঝায় তাই বুঝি। আর আমাদের দিয়ে যা তারা করাতে চায় আমরা তাইই করে ফেলি । ফলে আমরা প্রতিনিয়ত যা খাচ্ছি, খাচ্ছির থেকে বলা ভালো যা গলাধঃকরণ করছি তাতে মাটির স্বাদ-গন্ধ কোনটিই থাকছে না। তাই গ্রামকে শহরের কাছে পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছেন বিশিষ্ট উদ্যোগপতি পার্থ মিত্র ।
গ্রামবাংলার একেবারে খাঁটি জিনিসপত্র শহুরে মানুষদের রান্নাঘরে পৌঁছে দিচ্ছে পার্থবাবুর সংস্থা ফার্ম টু হোম
(farm 2 home) (www.farm2homeshop.com)।

কী কী পাওয়া যাচ্ছে এখানে? সংস্থার ম্যানেজিং পার্টনার পার্থ মিত্র জানালেন চাল, আটা , ডাল তেল, মশলাপাতি এসবই সরবরাহ করছেন তাঁরা । কাঁচা আনাজ বা মাছ নয়। গ্রসারি অর্থাৎ মুদিখানার যাবতীয় সামগ্রী সবই পাওয়া যাচ্ছে এখানে । আর অবশ্যই ন্যায্যমূল্যে। পার্থবাবু জানালেন শহুরে মানুষদের কাছে , বিশেষ করে যারা চাকুরিজীবী তাদের হাতে ঘুরে ঘুরে বাজার করার সময় নেই। কিন্তু সকলেই খাঁটি জিনিসটি পেতে চান। তাই এখন অনলাইন হোম ডেলিভারির বিভিন্ন সংস্থার রমরমা । অথচ তারাও যে দাম নিয়ে বিশুদ্ধ জিনিসটি ক্রেতাদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছে এমন নয়। এখানেই পার্থবাবু নিজের স্বপ্ন এবং পরিকল্পনাকে নিয়ে হাজির হয়েছেন। পার্থবাবুর মনে হয়েছে ক্রেতারা দাম দিয়ে খাঁটি এবং উপযুক্ত দ্রব্যটি
সংগ্রহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। (farm2homeshop ) ফার্ম টু হোম শপ সংস্থাটি বাংলার প্রতিটি গ্রাম ঘুরে ঘুরে বিশুদ্ধ উপাদান গুলি ন্যায্যমূল্যে সংগ্রহ করছে। যেমন গম , সরষে, ডাল, পোস্ত, হলুদ , লঙ্কা ইত্যাদি। তারপর সেগুলিকে ঠিকভাবে প্রয়োজনমতো ঝাড়াই -পেষাই করে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ক্রেতার কাছে । আর সবটাই করা হচ্ছে হাতে , মেশিনে নয়। তাই সব জিনিসের চাকচিক্য ব্যাপারটা একটু কম । আর সব থেকে বড় কথা হল এই সংস্থার কোনও দ্রব্য আপনি প্লাস্টিক কন্টেনারে পাবেন না । তেল , মধু বা ঘি- তরল যা কিছু সবই দেওয়া হয় কাচের শিশিতে । ফলে তা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়।

আদতে চাকুরীজীবী পার্থবাবুর এই পেশায় হঠাৎই চলে আসা। কিন্তু কেন ? কীসের টানে? পার্থ মিত্র জানালেন করোনা অতিমারি এবং লকডাউন তাঁকে এই নতুন পথের সন্ধান দিয়েছে । জীবনকে একটু অন্যভাবে দেখতে বাধ্য করেছে। লকডাউনের সময় প্রায় প্রতিটি মানুষের জীবনযাপনই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল । বিশেষ করে প্রবীণ এবং অসুস্থ মানুষ, যারা কীভাবে কী করবেন, কীভাবে জীবন চালাবেন কিছুই বুঝতে পারছিলেন না । অনেকটা সেই অসহায় মানুষগুলির কথা ভেবেই পার্থবাবু স্থির করলেন যে এমন একটি সংস্থা শুরু করবেন যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চাহিদাকে পূরণ করবে । এক ফোনেই যদি মানুষের খাবার হাজির করে দেওয়া যায় তার থেকে ভালো কাজ আর কিছু হতে পারে না । সেই লক্ষ্যেই
চাকরি ছেড়ে দিয়ে গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের মার্চ -এপ্রিলে শুরু করলেন নিজের ব্যবসা । পথচলা শুরু করল
(farm2homeshop ) ফার্ম টু হোম শপ সংস্থাটি। ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে আস্তে আস্তে । মাত্র আট ন’ ‘মাসে বিরাট লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো কখনোই সম্ভব নয়। কিন্তু আস্তে আস্তে জাল বিস্তার করছে। ক্রেতার মনের মত করে পসরা হাজির করছে তাদের রান্নাঘরে, ভাঁড়ারে । তাই নিজের সংস্থা নিয়ে যথেষ্টই আশাবাদী পার্থ মিত্র ।

www.farm2homeshop.com  –  সংস্থার এই ওয়েবসাইট লিঙ্ক-এ ক্লিক করলেই জানা যাবে যাবতীয় তথ্য।

 

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...
Exit mobile version