Thursday, August 21, 2025

যুদ্ধ শেষে হবে দেখা? চোখের জল থামছে না আন্দুল নিবাসী ইউক্রেনের ইরিনার

Date:

বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকেই শুরু হয়েছে রাশিয়া- ইউক্রেন (Russia- Ukraine War) রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। জানা গিয়েছে, ইউক্রেন সেনা সহ একদিনে মৃত্যু হয়েছে ১৩৭ জনের। ইউক্রেনের মেয়ে ইরিনা প্রীতিলিউক যিনি এখন ইরিনা দে (Irina Dey)। বিবাহসূত্রে তিনি বর্তমানে হাওড়ার (Howrah) আন্দুল নিবাসী। আন্দুলের ‘বিদেশিনী বাঙালি বধূ’। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া যুদ্ধ ঘোষণা করায় তাঁর উচাটন মন ছুটে বেড়াচ্ছে ‘বাপেরবাড়ি’ ছোট্ট শহর টার্নোপিলে। বিবাহসূত্রে শ্বশুরবাড়ি হাওড়ার আন্দুলে হলেও ইউক্রেনের টার্নোপিলেই ইরিনার জন্ম, বেড়ে ওঠা। পরিবার-পরিজন সকলেই ওখানে।

প্রায় দু’দশক আগে ডাক্তারি পড়তে গিয়ে সেদেশেই ইরিনার সঙ্গে আলাপ আন্দুলের ভূমিপুত্র ডাঃ সৌরভ দের (Sourav Dey)। তারপর পরিচয়পর্ব থেকে পরিণয়, এবং ইরিনার (Irina Dey) আন্দুলে আসা। এরপর যত দিন গেছে আরও বেশি করে মনে-প্রাণে-নাগরিকত্ব এদেশেরই একজন হয়ে উঠেছেন ইরিনা। এমনকি এতটাই ভালবেসে ফেলেছেন শ্বশুরবাড়িকে যে ইউক্রেনে যাওয়ার কথা আর সেভাবে মনেই আসে না। কিন্তু যুদ্ধ ঘোষণার পর সেই ইরিনাই এখন ছটফট করছেন কবে যাবেন টার্নোপিলে। দেখতে পাবেন আত্মীয়-বন্ধু-পরিজনদের!

আরও পড়ুন: রাশিয়া কি এবার ‘ফাদার অফ অল বম্বস’ ব্যবহার করতে চলেছে রাশিয়া!

ইরিনা ‘এখন বিশ্ব বাংলা সংবাদ’কে বলেন, “জানেন, আমার ওখানকার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের কাছে বেশ কয়েকদিন ধরেই শুনছি চারদিকটা কেমন যেন বদলে গেছে। থমথমে পরিবেশ। না জানি আবার হয়তো প্রতি ঘর থেকে কাউকে না কাউকে যুদ্ধে যেতে হবে…” বলতে বলতে গলা বুজে আসছিল ইরিনার। “গতকাল থেকে জল বন্ধ, ইলেকট্রিসিটি নেই। আর এখন তো যোগাযোগ ব্যবস্থাও পুরোপরি বিচ্ছিন্ন। ফোনে বা স্কাইপেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ইচ্ছে হচ্ছে, এক ছুট্টে চলে যাই ভাইয়ের কাছে। কিন্তু আমার মন সেখানে উড়ে গেলেও, সশরীরে আমার এখনই যে যাওয়া সম্ভব নয়, বেশ বুঝতে পারছি।”

ইরিনা জানান, ছোট থেকেই ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার চাপা একটা আক্রোশ লক্ষ্য করেছেন। ইউক্রেনের মানুষজন এমনিতে শান্তিপ্রিয়, কিন্তু স্বাধীনচেতাও বটে। দেশের সার্বভৌমত্বে কেউ আঘাত করবে এটা কখনওই তাঁরা মেনে নেননা। ফলে দেশকে রক্ষা করতে ইউক্রেনের প্রতি ঘর থেকেই আম-নাগরিকরাও চলে যান যুদ্ধক্ষেত্রে। এমনকি এখন বয়স্করাও যেতে চাইছেন যুদ্ধের ময়দানে। ২০১৪ থেকে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসন ক্রমশই বাড়তে থাকায় ইরিনার ভাইও গিয়েছিলেন যুদ্ধে। কিছুদিন আগেই ফিরেছেন। আশঙ্কা, এখন যা পরিস্থিতি, তাতে আবার হয়তো ভাইকে যেতে হবে যুদ্ধক্ষেত্রে।

টার্নোপিল শহরের জামাই হাওড়ার আন্দুলের বাসিন্দা ডাঃ সৌরভ দে বলছেন, ইউক্রেন ফুলের মত সুন্দর একটা দেশ। রাশিয়া স্বার্থপর দৈত্যের মত সেই ফুলের বাগানকে ধ্বংস করতে চাইছে। তবে তিনি ও ইরিনা আশাবাদী, দ্রুত এই যুদ্ধ থামবে। ফের দেখা হবে ইউক্রেনের আত্মীয়দের সঙ্গে। কিন্তু তা ঠিক কবে হবে, প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন তাঁরা। ঠিক যেমনটি কবিতায় দিন গুনেছেন ফিলিস্তিনের জাতীয় কবি মাহমুদ দারউইশ, যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল নেট দুনিয়ায়: “কবে আমাদের দেখা হবে? যুদ্ধ যেদিন শেষ হবে… কবে যুদ্ধ শেষ হবে? যবে ফের আমাদের দেখা হবে…”

 

Related articles

এক মলাটে কলকাতার দুর্গোৎসবের চার শতকের ইতিহাস

বাংলায় দুর্গাপুজোর সূচনা ১৬০৬ সালে রাজা কংস নারায়ণের হাত ধরে। পরে ১৮৩২ সালে কাশিমবাজারের রাজা হরিনাথ কলকাতায় সর্বজনীন...

নোবেল খুঁজতে ব্যর্থ CBI, রাজ্য পুলিশ উদ্ধার করল বুলার পদ্মশ্রী: পুলিশও পদক পাক চান সাঁতারু

হুগলির হিন্দমোটরে সাঁতারু বুলা চৌধুরীর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া পদক অবশেষে উদ্ধার করল রাজ্য পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে...

মেট্রো রেল প্রকল্পের উদ্বোধনের আগে তৃণমূলকে নিশানা মোদির, পাল্টা ধুয়ে দিলেন কুণাল

রাজ্যে কয়েকটি মেট্রো রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এ-নিয়ে বৃহস্পতিবারই তিনি এক্স হ্যান্ডলে...

এশিয়া কাপে খেললেও, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কোনওরকম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নয়

পাকিস্তানের সঙ্গে কোনওরকম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নয়। এবার সাফ জানিয়ে দিল ভারত সরকার। এশিয়া (Asia Cup) কাপে ভারত-পাকিস্তান (India-Pakistan)...
Exit mobile version