Sunday, August 24, 2025

হাঁসখালি ধর্ষণকাণ্ডে নির্যাতিতার প্রেমিক সোহেল গয়ালি সহ গ্রেফতার ৩

Date:

Share post:

নদিয়ার হাঁসখালিতে ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনার অবশেষে গ্রেফতার নির্যাতিতার প্রেমিক সোহেল গয়ালি সহ ৩জন। অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই কিশোরীর ধর্ষণ ও মৃত্যু ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরপাকড়ে তৎপরতা শুরু করে পুলিশ। নাবালিকার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে নির্যাতিতার প্রেমিক সোহেলকে আটক করে পুলিশ। রবিবার রাতভর জেরার পর অবশেষে সোমবার সকালে গ্রেফতার করা হয়েছে সোহেলকে। একইসঙ্গে তার দুই বন্ধুকেও আটক করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন:হাঁসখালি : জনস্বার্থ মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে

ঠিক কী ঘটেছিল?

নির্মম এই ঘটনা গত সোমবারের। এলাকার এক বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিল ওই নাবালিকা। জন্মদিনের পার্টিতে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের পর বাড়িতে ফেলেই চম্পট। মধ্যরাতে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার। প্রমাণ লোপাট করতে মৃত্যুর পর তড়িঘড়ি ওই নাবালিকার মৃতদেহ দাহ করতে বাধ্য করা হয় পরিবারকে। পাড়াপড়শি ডেকে জোর জবরদস্তি দেহ দাহ করা হয় বলে অভিযোগ।

পুলিশের কাছে দেওয়া নির্যাতিতার পরিবারের বয়ান অনুযায়ী, ঘটনার দিন বিকাল চারটে নাগাদ বন্ধুর বাড়িতে যাবে বলে বাড়ি থেকে বের হয় সে। তারপর সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ এক মহিলার সঙ্গে বাড়িতে আসে ওই নাবালিকা। তারপরই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে ওই মহিলা নাবালিকাকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে বলে যান, যাতে দ্রুত চিকিৎসা করানো হয়। ততক্ষণে তলপেটের ব্যথায় কার্যত অচৈতন্য হয়ে পড়তে থাকে ওই নাবালিকা। পরে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক জানিয়ে দেন, নাবালিকার অবস্থা সঙ্কটজনক। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণই তার একমাত্র কারণ। গোটা বিষয়টি পরিবারের কাছে স্পষ্ট হতে থাকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই নাবালিকাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। রাতেই মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার।

মৃত্যুর পর হঠাৎ নির্যাতিতার বাড়িতে হাজির হয়ে যায় এলাকারই বেশকিছু যুবক। নাবালিকার সৎকার করাতে তৎপরতা শুরু করে তারা। নাবালিকার বাড়ি থেকে সামান্য কিছু দূরেই এক শ্মশানের কোনও ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই দাহ করা হয় দেহ। এমনকি আগুন নিভিতে দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয় ছাইও। ঘটনার রাতেই শ্মশানের ওই এলাকা পুরো সাফ বলে অভিযোগ।

ঘটনার কথা কাউকে জানালে পরিণতি খারাপ হবে বলেও নাবালিকার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু গতকাল, রবিবার সাহস করে চাইল্ড লাইন ও হাঁসখালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার মা। ঘটনার পরই আটক করা হয় মূল অভিযুক্ত কিশোরীর প্রেমিককে। এরপর রাতভর জেরার পর গ্রেফতার করা হয় তাকে।

কারা কারা ঘটনার দিন নাবালিকার প্রেমিক সোহেলের জন্মদিনের পার্টিতে ছিল, পার্টি শেষে যে মহিলা নির্যাতিতাকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিল, মৃত্যুর পর আচমকা কারা বাড়িতে তড়িঘড়ি মৃতদেহ সৎকারে উদ্যত হল, সেই সমস্ত তথ্যের খোঁজে পুলিশ। নির্যাতিতার প্রেমিক-সহ তিনজনকে জেরা করে এই সংক্রান্ত সমস্ত প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।

spot_img

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...