অভিজিৎ ঘোষ: আই ওয়ান্ট রেজাল্ট। হামকো সিট চাহিয়ে। জাদা বাতালাবাজি আচ্ছা নেহি লাগদা।
হায়দরাবাদে সদ্য শেষ হওয়া বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে সুকান্ত-শুভেন্দুকে আলাদা করে ডেকে সাত মিনিটের বৈঠকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন অমিত শাহ। তাঁর স্পষ্ট কথা, বাঙ্গাল মে জিতনে কে লিয়ে হাম ‘সব কুছ’ দেঙ্গে। লেকিন ইয়ে মাত সোচনা কি জনম ভর আপ লোগো কো দেতে রহেঙ্গে। আপ সে নেহি হো পায়েঙ্গে তো দুসরা কো লায়েঙ্গে।
জাতীয় কর্মসমিতির প্রথম দিনের রাতের দিকে ইনফর্মাল বৈঠক। বৈঠকে সাংগঠনিক সম্পাদক অমিতাভও ছিলেন না। ডেকে নিয়েছিলেন বাংলায় দলের দুই নন্টে-ফন্টেকে। প্রথমেই জানতে চান বাংলার জন্য আর কী কী দরকার। দলের তরফে যতরকম সাহায্য সবই দেওয়া হচ্ছে।এমনকি আইন-আদালতও সামাল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু রেজাল্ট কোথায়? একটা আসনেও তো জয় নেই। উত্তরবঙ্গ ঘাঁটি ছিল, সেখানেও তৃণমূল জমি উদ্ধার করেছে জেলা পরিষদের ভোটে। কেন এরকম? সুকান্ত সরকারি দলের সন্ত্রাসের কথা বলার চেষ্টা করেন। পাল্টা শাহ বলেন, আপ কেয়া সোঁচতে হ্যায়, হামারা কোই সোর্স নেহি হ্যায়? আপনারা বুথের সংগঠন তৈরি করতে পারেননি। বুথে লোক বসাতে পারছেন না। আশা করেন কী করে ভোট আপনাদের বাক্সে পড়বে? তৃণমূল দুয়ারে সরকার, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিয়ে মানুষের মন জয় করেছে। পালটা আপনারা কেন্দ্রের প্রকল্পের কথা প্রচারে আনতে পারছেন কোথায়? টাকা আটকে দিয়ে কতদিন চলতে পারে। রাজ্য সরকার যা যা করছে তার প্রচার যেভাবে নিয়ে যাচ্ছে, তাতে আমাদের কথা কেউ শুনছে কোথায়?
শুভেন্দু বলার চেষ্টা করেন, সংগঠন ধরেছি আমরা। দেখবেন এবার চিত্র বদলাবে। অমিত বলেন, দেখুন কীভাবে করবেন। আপনাদের কথায় সভাপতি বদলেছি। মাথায় রাখবেন দিলীপ ঘোষ রেজাল্ট দিয়েছেন। যাই বলুন না কেন, তাঁর আমলেই ১৮ সাংসদ পেয়েছি। আর আপনাদের আমলে সেই সব সাংসদ দল ছাড়ছে। নিজেদের লোক বসাতে গিয়ে চরম গ্রুপবাজি হচ্ছে। জেলায় জেলায় আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ। পুরনো লোক বসে যাচ্ছে। দুধকুমার কেন বসে গেল? কেন তার সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলছেন না? কেন প্রত্যেক জেলা কমিটি নিয়ে এত অশান্তি? জেলায় ঘুরে ঘুরে সুকান্ত সমস্যা মেটান। বিধায়কদের এলাকায় পাঠান। দায়িত্ব দিন। জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বিধায়কদের ‘ট্যাগ’ করুন। হেরে যাওয়া বিধায়কদেরও দায়িত্ব দিন।
অমিত কলকাতা কেন্দ্রিক রাজনীতির জন্য দুই ‘মহারথী’কে একহাত নেন। বলেন, দলের নেতাদের অভ্যাস হয়ে গেছে কলকাতায় বসে শুধু বাইট দেওয়া। শুধু গালাগালি দিলেই জিতবেন? রোড ম্যাপ তৈরি করুন। সবশেষে অমিত আসল কথাটি খোলাখুলি জানিয়ে দেন। বলেন–
এক, পঞ্চায়েত ভোট আপনাদের কাছে অগ্নিপরীক্ষা। এই ভোটে রেজাল্ট দিন। মুখ রক্ষার রেজাল্ট চাই।
দুই, আপনারা পঞ্চায়েতে না পারলে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে বাধ্য হব দিলীপ ঘোষকে আবার ফিরিয়ে আনতে।
অমিত শাহের কথায় ঘুম ছুটেছে ট্রেনি সভাপতি আর পেগাসাস অধিকারীর। তাঁরাও জানেন, বিধানসভা উপনির্বাচন বা পুরভোটে যারা দাঁত ফোটাতে পারেন না, তাঁদের পঞ্চায়েত ভোটে ‘সলিল সমাধি’ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
আরও পড়ুন:তন্ময়কে ছাঁটতে তৎপর আলিমুদ্দিন, সিপিএমকে কুক্ষিগত করতে চান সেলিমরা